র‌্যাবের উপর নিষেধাজ্ঞা উঠবে অচিরেই, আশায় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী

নতুন কোনো নিষেধাজ্ঞার আশঙ্কাও করছেন না আসাদুজ্জামান খান কামাল।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 16 Jan 2023, 12:03 PM
Updated : 16 Jan 2023, 12:03 PM

র‌্যাবকে নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের সফররত সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডনাল্ড লুর কথায় হতাশা কেটেছে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের। তার মন্ত্রণালয়ের অধীনস্ত এই বাহিনীর উপর যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞা অচিরেই উঠে যাবে বলে আশা করছেন তিনি।

সোমবার ঢাকায় সচিবালয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নে এই আশাবাদ প্রকাশ করেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। একদিন আগেই তার সঙ্গে ডনাল্ড লুর বৈঠক হয়। মার্কিন সহকারী মন্ত্রী পররাষ্ট্রমন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রীর সঙ্গেও আলোচনায় বসেছিলেন।

রোববার দ্বিপক্ষীয় বৈঠকের পর লু নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের বিষয়ে কিছু না বললেও র‌্যাবের প্রশংসা করে বলেছিলেন, বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড কমাতে র‌্যাবের কাজের ‘অসামান্য অগ্রগতি’ তাদের নজরে এসেছে।

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, “তারা (মার্কিন প্রতিনিধি দল) বলেছেন, তোমরা যেভাবে যাচ্ছ, একটা সঠিক পথে যাচ্ছ। তোমরা যেভাবে চলছ, এটা যেন চলমান থাকে, তোমাদের ল’ইয়ার ভালো ভূমিকা রাখছে।

“আমরা মনে করি, হয়ত খুব শিগগির নিষেধাজ্ঞা উঠে যেতে পারে। আমরা আশা করছি, এটা খুব অচিরেই শেষ হবে।”

গুরুতর মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ তুলে ২০২১ সালের ডিসেম্বরে র‌্যাবসহ এই বাহিনীর সাবেক ও বর্তমান মিলিয়ে সাত কর্মকর্তার উপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে যুক্তরাষ্ট্র।

এরপর বিভিন্ন সময় বাংলাদেশ সরকারের পক্ষ থেকে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের কথা বলা হলেও যুক্তরাষ্ট্রের সাড়া মেলেনি।

Also Read: র‌্যাব ও সাবেক-বর্তমান ৭ কর্মকর্তার ওপর মার্কিন নিষেধাজ্ঞা

Also Read: বিচারবহির্ভূত হত্যা কমাতে র‌্যাবের কাজে উন্নতি দেখছেন ডনাল্ড লু

Also Read: র‌্যাবের নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার জটিল, জানাল যুক্তরাষ্ট্র

ওয়াশিংটনের প্রতিনিধিদের সঙ্গে কথা বলে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের প্রক্রিয়াটি জটিল বলে জেনেছেন আসাদুজ্জামান কামাল।

তিনি বলেন, “র‌্যাবের নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার হলেও একটা প্রক্রিয়ার মাধ্যমে প্রত্যাহার হয়। তবে সে প্রক্রিয়াটা একটু জটিল। তারা বলেছেন, নিষেধাজ্ঞা যাদের দেওয়া হয়, সেটা প্রত্যাহারের সময় কতগুলো ধাপ পার হতে হয়। সে প্রক্রিয়াটা একটু জটিল। তবে তারা বলেছে, বাংলাদেশ যেভাবে এগিয়ে চলছে সেটা উত্তরণ হবে এবং নিষেধাজ্ঞাও প্রত্যাহার হবে। এটাই তাদের বক্তব্য ছিল।”

“আমি বলেছি, আমরা সঠিক কাজ করছি। র‌্যাব ভালো কাজ করছে, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী হিসেবে সেটা সব সময় বলব। কাজেই তাদের চোখে যেটা পড়েছে, সেটার জন্য তারা নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে।”

উপরন্তু আরও নিষেধাজ্ঞা আসতে পারে বলেও গুঞ্জন চলছে। তবে তেমন কিছু ঘটছে না বলে যুক্তরাষ্ট্রের সহকারী মন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলে মনে হয়েছে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর।

তিনি বলেন, “এখন তারা বলছে, আমরা যেভাবে আবেদন করেছি, সেটা সঠিক আছে। উনি আমাদের কোনো প্রেসার দিতে বা কিছু আরোপ করতে আসেননি। বরং বলেছে র‌্যাব ভালো করছে, আমরা সঠিক পথে আছি, এভাবে চললে তারা আমাদের সঙ্গে থাকবে।

“ভবিষ্যতে নিষেধাজ্ঞা দিতে হলে দেখেশুনেই দেবে বলে আভাস দিয়ে গেছেন আমাদের।”

যুক্তরাষ্ট্রের সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনার অন্য প্রসঙ্গ নিয়ে আসাদুজ্জামান কামাল বলেন, “বাংলাদেশ যেভাবে এগিয়ে যাচ্ছে, বন্ধ হোক, সেটা আমেরিকার সরকার চায় না। তারা বাংলাদেশকে আরও সমৃদ্ধ দেশ হিসেবে দেখতে চায়। তারা চায় এদেশের মানবাধিকার যেন আরও ওপরে থাকে।

“তাদেরকে বলেছি, অতীতে আমরা কীভাবে সন্ত্রাসবাদ, জঙ্গিবাদ, অগ্নিসন্ত্রাস এগুলো মোকাবিলা করেছি। তারা এটার প্রশংসা করেছেন এবং বলেছেন সুন্দরভাবে এসব বিষয় মোকাবেলা করেছেন।”

নির্বাচনের প্রসঙ্গ এসেছে জানিয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, আমাদের সংবিধান অনুযায়ী নির্বাচন হবে। নির্বাচনের ৯০ দিন আগেই আমাদের সব ক্ষমতা নির্বাচন কমিশনের কাছে চলে যায়। আমাদের নিরাপত্তা বাহিনী এবং সরকারের সবকিছু তারা নিয়ন্ত্রণ করেন। আমরা মন্ত্রীরা শুধু অফিস ওয়ার্ক করি, তেমন করণীয় কিছু থাকে না।

“তারা চায়, এদেশে সুষ্ঠু নির্বাচন হোক। কেউ যেন সহিংসতায় লিপ্ত না হয়। এ নিয়ে আলোচনা হয়েছে।”

বিরোধী দলের আন্দোলন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “তারা আমাদের প্রশংসা করেছেন যে, আমরা বিএনপিকে বিভিন্ন জনসভা করতে দিচ্ছি এজন্য। তবে সমাবেশের নামে অগ্নিসংযোগ, ভাঙচুর, রাস্তায় ব্যারিকেড- এসব বিষয় আমেরিকার সরকার সমর্থন করে না।”