তদন্ত কর্মকর্তা প্রতিবেদন জমা না দেওয়ায় বিচারক নতুন দিন রেখেছেন।
Published : 19 Jul 2023, 01:35 PM
ঢিল মেরে মেট্রোরেলের জানালার কাচ ক্ষতিগ্রস্ত করার ঘটনায় করা মামলার প্রতিবেদন জমার তারিখ পিছিয়েছে।
বুধবার এ মামলার প্রতিবেদন জমার তারিখ ছিল। কিন্তু তদন্ত কর্মকর্তা কাফরুল থানার পরিদর্শক (অপারেশন) মো. আব্দুল বাতেন তা দিতে না পারায় আদালতের কাছে সময় চান।
সেই আবেদন মঞ্জুর করে ঢাকার মহানগর হাকিম তরিকুল ইসলাম আগামী ২৪ অগাস্ট প্রতিবেদন জমার নতুন তারিখ রাখেন বলে আদালত পুলিশের সাধারণ নিবন্ধন কর্মকর্তা রয়েল জিয়া জানান।
গত ৩০ এপ্রিল সকাল সাড়ে ১১টার দিকে আগারগাঁও থেকে উত্তরা উত্তর স্টেশনে যাওয়ার পথে মেট্রোরেলের জানালায় ঢিল ছোড়ার ঘটনা ঘটে। এতে কেউ হতাহত না হলেও জানালার কাচ ক্ষতিগ্রস্ত হয়।
এরপর মেট্রোরেলের লাইন অপারেশন শাখার সহকারী ব্যবস্থাপক সামিউল কাদির মেট্রোরেল আইনে প্রথম মামলা করেন কাফরুল থানায়। গত ১ মে দায়ের করা ওই মামলার বিবরণে ঢিলের কারণে ১০ লাখ টাকা ক্ষতির কথা বলা হয়।
ওই ঘটনার দুই মাসের বেশি সময় ধরে তদন্ত চলছে। তদন্তের অগ্রগতি জানতে চাইলে গত ১১ জুলাই কাফরূল থানার ওসি হাফিজুর রহমান বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেছিলেন তারা তদন্ত চালিয়ে যাচ্ছেন।
কাজীপাড়া ও শেওড়াপাড়ার মাঝামাঝিতে ওই ঢিলটি আঘাত হেনেছিল। তাই প্রথমে সেই এলাকা ধরে কয়েকটি বহুতল ভবন এবং সেই সব ভবনের বাসিন্দাদের একটি তালিকা তৈরি করেছেন তারা।
সেই তালিকায় সর্বশেষ তিনটি বাড়ির কথা উল্লেখ করা হয়েছে জানিয়ে ওসি হাফিজুর বলেন, “শেষে আমরা একটি ‘শর্ট লিস্ট’ করি। এই লিস্টে সর্বশেষ তিনটি বাড়ির তালিকা তৈরি করা হয়। এই তিনটি বাড়ির যে কোনো একটির ছাড় থেকে ঢিল ছোড়া হয়েছিল বলে আমরা প্রায় নিশ্চিত হয়েছি।”
সেই তিনটি ভবনের বাসিন্দাদেরও তালিকাও তৈরি করেছে পুলিশ। তাদের মধ্য থেকে পাঁচজনের একটি সংক্ষিপ্ত তালিকাও করা হয়েছে।
ওসি হাফিজুর বলেন, “এই পাঁচজনকে আমরা একাধিকবার জিজ্ঞাসাবাদ করেছি। কিন্তু তারা কেউ ঢিল ছোড়ার কথা স্বীকার করেনি।”
নিরাপরাধ কেউ যেন হয়রানিতে না পড়েন, সেই কারণে পুলিশ ‘রয়েসয়ে’ এগোচ্ছে বলে জানান তিনি।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা কাফরুল থানার পরিদর্শক (অপারেশন) মো. আব্দুল বাতেন বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেছিলেন, তারা সন্দেহভাজন কয়েকজনকে জিজ্ঞাসাবাদ করলেও আসল ব্যক্তিটিকে এখনও খুঁজে পাননি।
“আমরা বিভিন্ন তথ্য উপাত্ত সংগ্রহ করেছি। একজন প্রত্যক্ষদর্শী যাত্রীকেও পাওয়া গেছে। কিন্তু তিনটির মধ্যে নির্দিষ্ট বাড়ি এবং ব্যক্তির বিষয়ে নিশ্চিত হতে পারিনি।”
তদন্তে ‘চূড়ান্ত জায়গায় পৌঁছতে একটু সময় লাগবে’ বলে মন্তব্য করেছিলেন তদন্ত কর্মকর্তা বাতেন।
যে ধারায় এই মামলা
মামলাটি হয়েছে মেট্রোরেল আইন-২০১৫ এর ৩৫ ও ৪৩ ধারা এবং দণ্ডবিধির ৪২৭ ধারায়। অভিযোগ প্রমাণিত হলে আসামির সর্বোচ্চ পাঁচ বছরের কারাদণ্ড হতে পারে।
মেট্রোরেল আইনের ৩৫ ধারায় বলা হয়েছে, “কোনো ব্যক্তি যদি মেট্রোরেল ও উহার যাত্রীদের নিরাপত্তা বিঘ্নিত হয় বা বিঘ্নিত হইবার সম্ভাবনা থাকে এইরূপ কোনো কর্মকাণ্ড সম্পাদন করেন, তাহা হইলে উক্ত ব্যক্তির উক্ত কার্য হইবে একটি অপরাধ, এবং তজ্জন্য তিনি অনধিক ৫ (পাঁচ) বৎসর কারাদণ্ড বা অনধিক ৫০ (পঞ্চাশ) লক্ষ টাকা অর্থদণ্ড বা উভয় দণ্ডে দণ্ডনীয় হইবেন।”
আর ৪৩ ধারায় বলা হয়েছে, “কোন ব্যক্তি যদি এই আইনের অধীন কোনো অপরাধ সংঘটনে সহায়তা করেন বা উক্ত অপরাধ সংঘটনে প্ররোচনা দেন বা ষড়যন্ত্র করেন এবং উক্ত ষড়যন্ত্র বা প্ররোচনার ফলে সংশ্লিষ্ট অপরাধটি সংঘটিত হয়, তাহা হইলে উক্ত সহায়তাকারী, ষড়যন্ত্রকারী বা প্ররোচনাদানকারী উক্ত অপরাধের জন্য নির্ধারিত দণ্ডে দণ্ডনীয় হইবেন।”