“বহু অভিন্ন চ্যালেঞ্জের পাশাপাশি অনেক সম্ভাবনাও আমাদের রয়েছে। সেটা নিয়েই আজ আলোচনা করেছি আমরা।”
Published : 15 Feb 2023, 02:19 PM
রোহিঙ্গা শরণার্থীদের সহযোগিতার পাশাপাশি এ সঙ্কটের শেকড় সন্ধানে বাংলাদেশের সঙ্গে একযোগে কাজ করার কথা বলেছেন যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিংকেনের উপদেষ্টা ডেরেক শোলে।
বুধবার ঢাকায় পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকের পর এক ব্রিফিংয়ে তিনি বলেন, “আমাদের যে আতিথেয়তা দেখানো হয়েছে, সেজন্য বাংলাদেশ সরকার ও জনগণকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি। কিন্তু তার চেয়েও গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হল এ অঞ্চলে বাংলাদেশ যা করে যাচ্ছে সেটা, বিশেষ করে রোহিঙ্গাদের ক্ষেত্রে। আমরা জানি, মিয়ামনারের ১০ লাখের বেশি শরণার্থীকে বাংলাদেশ আশ্রয় দিয়েছে।
“এই শরণার্থীদের আশ্রয়দাতা হিসাবে বাংলাদেশকে সহায়তার পাশাপাশি আমরা প্রতিনিয়ত চেষ্টা করছি এ সঙ্কটের গোড়ার কারণ নিয়ে কাজ করতে, যা মিয়ানমারের ভেতরেই নিহিত।”
দুদিনের সফরে মঙ্গলবার ঢাকায় এসেছেন ব্লিংকেনের জ্যেষ্ঠ পলিসি অ্যাডাভাইজার ডেরেক শোলে। সকালে পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেনের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বৈঠক করেন তিনি।
এরপর তিনি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে সাক্ষাত করেন। পরে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেনের সঙ্গে বৈঠক হয় মার্কিন প্রতিনিধি দলের।
মোমেনের সঙ্গে যৌথ ব্রিফিংয়ে এসে রোহিঙ্গা সঙ্কট এবং দুদেশের সম্পর্কের বিভিন্ন দিক নিয়ে কথা বলেন ডেরেক শোলে।
যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তরের কাউন্সেলরের দায়িত্বে থাকা ডেরেক শোলে দেশটির আন্ডার সেক্রেটারি পদমর্যাদায় পররাষ্ট্রমন্ত্রীর জ্যেষ্ঠ পলিসি অ্যাডভাইজার।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী ব্লিংকেনের পরামর্শ অনুযায়ী বিশেষ কূটনৈতিক দায়িত্বও সামলে থাকেন এই কর্মকর্তা।
প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে ‘খুব ভালো’ বৈঠক হয়েছে জানিয়ে ডেরেক শোলে বলেন, “বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্কের ওপর যুক্তরাষ্ট্র যে গুরুত্ব দেয়, সে কারণেই আমরা আজ এখানে।…. রাজনৈতিকভাবে, নিরাপত্তার পাশাপাশি অর্থনৈতিকভাবে আমাদের দুই দেশের ক্রমবর্ধমান সম্পর্কের ওপর আমরা কতটা গুরুত্ব দিই, এই সফর তারই প্রতীক।”
দুই দেশের এই সম্পর্ককে আরও এগিয়ে নেওয়ার আশা প্রকাশ করে শোলে বলেন, “আমাদের ভবিষ্যৎ নিয়ে আমরা আশাবাদী। এটা ৫১ বছরের শক্তিশালী অংশীদারিত্ব এবং আগামী ৫১ বছর এবং তার পরবর্তী সময়ের দিকে আমরা তাকিয়ে আছি।
“বহু অভিন্ন চ্যালেঞ্জের পাশাপাশি আমাদের একই রকমের অনেক সম্ভাবনাও রয়েছে। সেটা নিয়েই আজ আলোচনা করেছি আমরা।”
ডেরেক শোলের আগে পররাষ্ট্রমন্ত্রী মোমেনে বলেন, “উনি এসেছেন আমাদের দু’দেশের সম্পর্ককে আরও ভালো করার জন্য, শক্তিশালী করার জন্যে।
“গত ৫০ বছরে আমাদের সম্পর্ক ভালো। কিন্তু এই সম্পর্কে আমরা আরও সামনে নিয়ে যেতে চাই, সলিডিফাই করতে চাই। আমেরিকা আমাদের সবচেয়ে বড় ইনভেস্টর। তারা সিঙ্গেল কান্ট্রি আমাদের গার্মেন্টেসের…., তারা প্রায় ৯ বিলিয়ন ডলারের নেয়। আমরা এটা থেকে আরও উপরে যেতে চাই।”
বাংলাদেশে নতুন গড়ে তোলা একশ বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলে বিনিয়োগের জন্যও যুক্তরাষ্ট্রকে আহ্বান জানানোর কথা বলেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী।
রোহিঙ্গাদের বিষয়ে আলোচনা হওয়ার কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, “প্রথম দিন থেকেই তারা রোহিঙ্গা বিষয়ে আমাদের সাহায্য করছে এবং করে যাচ্ছে। সিঙ্গেল কান্ট্রি, তারা গ্রেটেস্ট কন্ট্রিবিউটর রোহিঙ্গাদের হিউম্যানিট্যারিয়ানে।
“তারাও আমাদের সাথে একমত, রোহিঙ্গাদের জীবনমান আরও উন্নত করতে হবে, তাদের হৃদয়ে একটা হোপ দিতে হবে। তারা আমাদের সঙ্গে আছে।”