বিস্ফোরণে ক্ষতিগ্রস্ত শিরিন ম্যানশন ভেঙে ফেলার নির্দেশ

মালিকপক্ষ ভবনটি না ভাঙলে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন ব্যবস্থা নেবে।

লিটন হায়দারবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 9 March 2023, 02:10 PM
Updated : 9 March 2023, 02:10 PM

চার দিন আগে ঢাকার সায়েন্স ল্যাবরেটরির পাশে মিরপুর রোডে যে ভবনে বিস্ফোরণ ঘটে তিনজনের প্রাণ গেছে, সেই শিরিন ম্যানশন ভেঙে ফেলার নির্দেশ দিয়েছে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন।

সংস্থাটির প্রধান প্রকৌশলী সালেহ আহম্মেদ বৃহস্পতিবার বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, ভবনটি নির্মাণে কোনো নিয়ম-কানুনই মানা হয়নি।

“পুরো ভবনটি ইটের স্ট্রাকচার, এভাবে ভবন হয় না। তারপরেও এটা করা হয়েছে। বর্তমানে এটা চরম ঝুঁকিপূর্ণ। এটা এখন পুরোপুরি ভেঙে ফেলা ছাড়া কোনো গতি নেই।”

তিন তলা ভবনটি দ্রুত ভেঙে ফেলতে মালিক পক্ষকে চিঠি দিয়েছে দক্ষিণ সিটি করপোরেশন। মালিকপক্ষ ভবনটি না ভাঙলে ‘আইন অনুযায়ী’ ব্যবস্থা নেওয়ার কথা বলেছেন সালেহ আহমেদ।

এদিকে ভবনটির মালিকের দেখা এখনও না পাওয়ার কথা বলেছেন রাজউক কর্মকর্তারা।

রাজউকের জোন-৫ এর অথরাইজড অফিসার প্রকৌশলী রংগন মন্ডল বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “ভবনটির মালিক দেশের বাইরে থাকেন। এখানে একজন কেয়ারটেকার দেখাশোনা করে থাকেন। ঘটনার পর মালিকের সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করা হয়, কিন্তু পাওয়া যায়নি।”

এর মধ্যে সিদ্দিক বাজারে আরেকটি ভবনে বিস্ফোরণের পর রাজউকের কর্মকর্তারা সেই দিকে ব্যস্ত।

“এনিয়ে কাজ করার মধ্যে সিদ্দিক বাজারে একটি ভবনে বড় ধরনের বিস্ফোরণ ঘটায় সবার মনোনিবেশ এখন সেদিকে,” বলেন রংগন মন্ডল।

সিদ্দিক বাজারে বিস্ফোরণের ফলে নাজুক ভবনটি কী করা হবে, সেই সুপারিশ দিতে রাজউক একটি কারিগরি কমিটি করেছে, তাতে সদস্য সচিবের দায়িত্বে রয়েছেন রংগন মন্ডল। সেই ভবনটি নিয়ম মেনে হয়েছে কি না, তা খতিয়ে দেখতে আরেকটি তদন্ত কমিটিও হয়েছে।

Also Read: প্রত্যক্ষদর্শীদের বর্ণনায় মিরপুর রোডের বিস্ফোরণ

Also Read: মিরপুর রোডে ভবনে বিস্ফোরণ, ৩ জনের মৃত্যু

Also Read: শিরিন ভবনে ‘ঝুঁকিপূর্ণ’ সাইনবোর্ড, সামনে রক্তের ছোপ

Also Read: মিরপুর রোডের বিস্ফোরণ ‘দুর্ঘটনা’ মনে হচ্ছে: ডিএমপি কমিশনার

Also Read: সিদ্দিক বাজারের ভবনটির এখন কী হবে?

সিদ্দিক বাজারে ভবনে বিস্ফোরণের দুই দিন আগে গত রোববার বেলা পৌনে ১১টার দিকে শিরিন ম্যানশনের তৃতীয় তলায় বিস্ফোরণে ভবনের দেয়ালের আংশিক ধসে পরে, ক্ষতিগ্রস্ত হয় পাশের আরেকটি ভবন। ওই ঘটনায় তিনজনের মৃত্যুর পাশাপাশি আহত হয় ৩০ থেকে ৪০ জন।

ঘটনার পর ঢাকা মহানগর পুলিশ কমিশনার খন্দকার গোলাম ফারুক ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে শিরিন ম্যানশনের বিস্ফোরণকে দুর্ঘটনা বলে ধারণা দিয়েছিলেন।

ঘটনার পরপরই ফায়ার সার্ভিস, সেনাবাহিনী, ঢাকা মহানগর পুলিশ, র‌্যাবসহ বিভিন্ন সংস্থা মাঠে নামে। তাদের তদন্তেও এখন পর্যন্ত নাশকতার কোনো আলামত মেলেনি। ঘটনার পর ভবনটিতে ‘ঝুঁকিপূর্ণ’ লেখা সাইনবোর্ড টানিয়ে দেয় ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন।

নিউ মার্কেট থানার ওসি শফিকুল ইসলাম বৃহস্পতিবার বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “ভবনটি এখন পুলিশ হেফাজতে আছে। ভবনটি ঝুঁকিপূর্ণ ঘোষণা করায় এখন আর কেউ থাকছেন না। কাউকে ঢুকতেও দেওয়া হচ্ছে না।”

এ ঘটনায় পুলিশ বাদী হয়ে অবহেলাজনিত কারণে মৃত্যু ঘটানোর অভিযোগে এনে অবহেলাজনিত মৃত্যুর অভিযোগ এনে দণ্ডবিধির ৩০৪ (ক) ধারায় একটি মামলা করেছে। তবে কাউকে আসামি করা হয়নি।

ওসি শফিকুল বলেন, “সিটি কপোরেশন, ওয়াসা, তিতাস, ফায়ার সার্ভিসসহ সংশ্লিষ্ট সকল সংস্থার সাথে যোগাযোগ হয়েছে। কারও কারও কাছে প্রতিবেদন চেয়ে চিঠি দেওয়া হয়েছে, কোনোটা প্রক্রিয়ায় আছে।এসব সংস্থার চিঠি পাওয়ার পর পুলিশের তদন্তের ফলাফল নির্ধারণ হবে।”