দুই ধারায় তাকে চার বছর করে কারাদণ্ড দিয়েছে আদালত।
Published : 30 Apr 2023, 12:55 PM
অবৈধ সম্পদ অর্জন এবং অর্থপাচারের মামলায় ‘অনলাইন জুয়ার কারবারি’ সেলিম প্রধানকে দুই ধারায় চার বছর করে কারাদণ্ড দিয়েছে আদালত।
ঢাকা অষ্টম বিশেষ জজ আদালতের বিচারক বদরুল আলম রোববার এ মামলার রায় ঘোষণা করেন। অবৈধভাবে সেলিম প্রধানের অর্জন করা সম্পদ রাষ্ট্রের অনুকূলে বাজেয়াপ্ত করার নির্দেশ দিয়েছেন তিনি।
জ্ঞাত আয় বহিভূর্ত সম্পদ অর্জনের দায়ে দুর্নীতি দমন কমিশন আইনের ৮৭ (এক) ১ ধারায় সেলিম প্রধানকে চার বছরের কারাদণ্ড এবং এক লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে। জরিমানার টাকা না দিলে তাকে আরও এক মাস কারাগারে থাকতে হবে।
আর অর্থ পাচারের দায়ে ২০১২ সালের মানিলন্ডারিং আইনের ৪ এর ২ ধারায় এ আসামিকে চার বছরের কারাদণ্ড দিয়েছে আদালত। সেই সঙ্গে তাকে ১০ লাখ জরিমানা, অনাদায়ে আরও ছয় মাসের সাজা দেওয়া হয়েছে।
সেলিম প্রধানের আইনজীবী শাহীনুর ইসলাম অনি রায়ের পর বলেন, দুই ধারার সাজা একসঙ্গে চলবে। ফলে সাজা কার্যত চার বছরের।
“রায়ের পর্যবেক্ষণে বিচারক জানিয়ে দিয়েছেন, যে কয়দিন হাজতবাস আছে, তা কারাবাস হিসেবে গণ্য হবে। ফলে সেটি সাজা থেকে বাদ যাবে।”
এই হিসাবে সাড়ে তিন বছর কারাগারে থাকা সেলিম প্রধান জরিমানা পরিশোধ করলে আর চার বছর কারাগারে থাকতে হবে না।
তার আইনজীবী বলেন, “যদি ১২ মাসে বছর হিসাব করেন ধরেন, তাহলে ৩ বছর ৬ মাস পার হয়ে গেছে। আর যদি ৯ মাস কাউন্ট করেন, তাহলে ওভার হয়ে গেছে।”
তাহলে আর এই রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করবেন কি না– সেই প্রশ্নে সেলিম প্রধানের আইনজীবী বলেন, “আমরা আপিল করব। আমরা সংক্ষুব্ধ, মহা সংক্ষুব্ধ।”
রাষ্ট্রপক্ষে সেলিমের বিরুদ্ধে মামলা পরিচালনা করেন দুর্নীতি দমন কমিশনের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী মোশাররফ হোসেন কাজল। তবে অসুস্থতার কারণে রায় ঘোষণার দিন তিনি আদালতে উপস্থিত ছিলেন না।
তার জুনিয়র মিজানুর রহমান এ বিষয়ে বিস্তারিত কিছু জানাননি। সাংবাদিকদের তিনি বলেন, “রায়ের কপি পেলে আমরা বিস্তারিত বলতে পারব।”
সেলিম প্রধানের অবৈধ সম্পদের মামলায় আরও ২ জনের সাক্ষ্য
আরও এক মামলায় জামিন পেলেন সেলিম প্রধান
ঢাকায় ক্যাসিনোবিরোধী অভিযানের মধ্যে ২০১৯ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে সেলিম প্রধানকে আটক করে র্যাব।
এরপর তার গুলশান, বনানীর বাসা ও অফিসে অভিযান চালিয়ে ২৯ লাখ টাকা, বিপুল বিদেশি মদ ও বিভিন্ন দেশের মুদ্রা জব্দ করা হয়।
সেখান থেকে সাতটি ল্যাপটপ ও দুটি হরিণের চামড়া জব্দ করার পাশাপাশি সেলিমের কর্মচারী আক্তারুজ্জামান ও রোকনকে গ্রেপ্তার করা হয়।
হরিণের চামড়া উদ্ধারের ঘটনায় ওই দিনই সেলিম প্রধানকে বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ আইনে ছয় মাসের কারাদণ্ড দেয় ভ্রাম্যমাণ আদালত। পরদিন গুলশান থানায় তার বিরুদ্ধে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ ও মুদ্রা পাচার প্রতিরোধ আইনে দুটি মামলা করে র্যাব।
সেলিম প্রধানের বিরুদ্ধে কী অভিযোগ
৫৭ কোটি ৭৯ লাখ টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জন ও ২২ কোটি টাকা বিদেশে পাচারের অভিযোগ ছিল সেলিম প্রধানের বিরুদ্ধে। ২০২০ সালের শেষ দিকে তার বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র অনুমোদন করে দুর্নীতি দমন কমিশন। পরের বছরের ১৭ জানুয়ারি দুদকের উপ-পরিচালক মো. গুলশান আনোয়ার সেটি আদালতে জমা দেন। একই বছরের ৩১ অক্টোবর এই মামলায় বিচার শুরুর আদেশ দেন বিচারক।
সেলিম প্রধান ‘প্রধান গ্রুপ’ নামে একটি ব্যবসায়ী গ্রুপের চেয়ারম্যান। এই গ্রুপের অধীনে ‘পি টোয়েন্টিফোর গেইমিং’ নামের একটি কোম্পানি আছে, যারা ওয়েবসাইটে ঘোষণা দিয়ে ক্যাসিনো ও অনলাইন ক্যাসিনোর কারবার চালিয়ে আসছিল।
সেলিম প্রধানের বাসা ও অফিসে বিপুল বিদেশি মুদ্রা
গিয়াস আল মামুনের বন্ধু সেলিম প্রধানের ‘জুয়ার টাকা গেছে লন্ডনেও’