জাতিসংঘের মতের আলোকে ডিজিটাল আইন সংশোধন: আইনমন্ত্রী

আনিসুল হক এটাও বলেছেন, এই আইন বাতিল হচ্ছে না।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 21 May 2023, 02:42 PM
Updated : 21 May 2023, 02:42 PM

জাতিসংঘ মানবাধিকার বিষয়ক হাইকমিশনার অফিস থেকে পাওয়া মতামতের আলোকে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন সংশোধনের ইঙ্গিত দিয়েছেন আইনমন্ত্রী আনিসুল হক।

সেই মতামতগুলো পর্যালোচনার কাজ চলছে বলে জানিয়েছেন তিনি। আইনটির অপব্যবহার রোধে তিনি বেশ কিছু পদক্ষেপ নেওয়ার কথাও জানিয়েছেন।

তবে আনিসুল হক এটাও বলেছেন, এই আইন বাতিল হচ্ছে না।

‘ডিজিটাল আইন ও মত প্রকাশের স্বাধীনতা’ বিষয়ে রোববার ঢাকার মহাখালীতে ব্র্যাক ইউনিভার্সিটিতে এক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন আইনমন্ত্রী।

বাংলাদেশে জাতিসংঘের আবাসিক সমন্বয়কারীর অফিস এবং ব্র্যাক ইউনিভার্সিটি যৌথভাবে এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।

গত কয়েক বছর ধরে ব্যাপক বিতর্কের পরিপ্রেক্ষিতে জাতিসংঘ বাংলাদেশের ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন সংশোধনের আহ্বান জানিয়ে আসছিল। সর্বশেষ জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাইকমিশনার ভলকার টুর্ক আইনটি স্থগিত রাখার আহ্বানও জানান।

আইনটি সংশোধনে জাতিসংঘের সঙ্গে আলোচনা চলছে জানিয়ে আইনমন্ত্রী বলেন, “সরকার ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের বিষয়ে জাতিসংঘ মানবাধিকার বিষয়ক হাইকমিশনার অফিসের সঙ্গে দীর্ঘ আলোচনা করেছে। তাদের কিছু ইনপুট পেয়েছে এবং এটি পর্যালোচনা করছে।”

বাংলাদেশে জাতিসংঘের আবাসিক সমন্বয়কারী গোয়েন লুইস আলোচনায় বলেন, “জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাইকমিশনারের কার্যালয় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন সংশোধনে বাংলাদেশ সরকারকে সহায়তা করতে কারিগরি মন্তব্য প্রদান করেছে।”

Also Read: বিতর্কিত ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন আবার বিতর্কে

Also Read: ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন অবিলম্বে স্থগিত করুন: জাতিসংঘের মানবাধিকার প্রধান

Also Read: বাতিল নয়, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন সংশোধন হবে: আনিসুল হক

দেশের সাংবাদিক, আইনজীবী, বুদ্ধিজীবীদের পাশাপাশি আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংগঠনগুলোর আপত্তি ও উদ্বেগের মধ্যে ২০১৮ সালের ১৯ সেপ্টেম্বর জাতীয় সংসদে পাস হয় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন।

শুরু থেকেই আইনটির সমালোচনা করে আসছে সংবাদ মাধ্যম ও মানবাধিকার সংগঠনের কর্মীরা। আইনটি বাতিলের দাবিও জানাচ্ছে তারা।

ব্যাপক সমালোচনার মুখে সরকার আইন সংশোধনের আশ্বাস দিলেও বাতিল হওয়ার কোনো সম্ভাবনা নেই বলে স্পষ্ট করেন আনিসুল হক।

ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন কেন দরকার, সেই ব্যাখ্যা দিয়ে তিনি বলেন, “সময়ের প্রয়োজনে বর্তমানে সমস্ত দেশ ডিজিটাল স্পেসে পরিচালিত হচ্ছে। আমাদের জাতীয় স্বার্থ এবং যারা ডিজিটাল আক্রমণের লক্ষ্যবস্তু ও আক্রমণের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ, তাদের রক্ষা করা দরকার। এজন্য ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন দরকার।

“এ আইন বাতিলের প্রশ্নই আসে না। তবে আইনটি সংশোধনের বিষয়ে পর্যালোচনা করা হচ্ছে। এটি অবশ্যই বিবেচনা করা হবে।”

অনলাইনে নারীদের প্রায়ই হয়রানি করা হচ্ছে উল্লেখ করে আইনমন্ত্রী বলেন, “তারও সুরাহা হওয়া দরকার। ডিজিটাল স্পেসের যথেচ্ছ অপব্যবহারের মাধ্যমে দেশ, সরকার বা কোনো ব্যক্তির মানহানি করতে দেওয়া হবে না।”

মত প্রকাশের স্বাধীনতা বা গণমাধ্যমকে নিয়ন্ত্রণ করার জন্য ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন করা হয়নি দাবি করে আইনমন্ত্রী বলেন, “এজন্য এর ব্যবহার করাও হচ্ছে না।”

বাংলাদেশে জাতিসংঘের আবাসিক সমন্বয়কারী গোয়েন লুইসের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে সংসদ সদস্য আহসান আদেলুর রহমান, সাংবাদিক মনজুরুল আহসান বুলবুল, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষক কাবেরী গায়েন, ব্র্যাক ইউনিভার্সিটির উপ-উপাচার্য সৈয়দ মাহফুজুল আজিজও বক্তব্য রাখেন।

বক্তৃতা শেষে অংশগ্রহণকারীরা মুক্ত আলোচনায় অংশ নিয়ে আলোচকদেরকে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন নিয়ে নানা প্রশ্ন করেন।