স্বাস্থ্যে দুর্নীতি: আজাদ-সাহেদের মামলায় সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু

মামলার বাদী দুদকের উপ-পরিচালক ফরিদ আহমেদ পাটোয়ারী সাক্ষ্য দেওয়া শুরু করেছেন।

আদালত প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 14 August 2022, 12:32 PM
Updated : 14 August 2022, 12:32 PM

দুর্নীতির মামলায় স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পদত্যাগী মহাপরিচালক ডা. মোহাম্মদ আবুল কালাম আজাদ, বিতর্কিত ঠিকাদার মোহাম্মদ সাহেদসহ ছয়জনের বিরুদ্ধে মামলায় সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু হয়েছে।

অভিযোগ গঠনের দুই মাস পর রোববার ঢাকার ৬ নম্বর বিশেষ জজ আদালতের বিচারক আল আসাদ মো. আসিফুজ্জামানের আদালতে সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু হয়।

মামলার বাদী দুদকের উপ-পরিচালক ফরিদ আহমেদ পাটোয়ারী প্রথম সাক্ষী হিসেবে সাক্ষ্য দেওয়া শুরু করেছেন।

তবে এদিন তার সাক্ষ্য শেষ না হওয়ায় আদালত আগামী ৭ সেপ্টেম্বর সাক্ষ্যগ্রহণের পরবর্তী তারিখ ঠিক করে দেন।

গত ১২ জুন আসামিদের অব্যাহতির আবেদন নাকচ করে অভিযোগ গঠন করে আদালত।

মামলার অন্য ৫ আসামি হলেন- স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সাবেক পরিচালক (হাসপাতাল ও ক্লিনিকসমূহ) ডা. আমিনুল হাসান, উপ-পরিচালক ডা. মো. ইউনুস আলী, সহকারী পরিচালক ডা. মো. শফিউর রহমান এবং গবেষণা কর্মকর্তা ডা. মো. দিদারুল ইসলাম।

আসামিদের মধ্যে কারাগারে আছেন শুধু রিজেন্ট গ্রুপের চেয়ারম্যান সাহেদ ওরফে সাহেদ করিম। বাকি সবাই জামিনে রয়েছেন।

Also Read: রিজেন্ট চুক্তি: সাহেদ ও স্বাস্থ্যের চারজনের বিরুদ্ধে দুদকের মামলা

Also Read: দুদকের মামলায় সাহেদসহ স্বাস্থ্যের আজাদের বিচার শুরু

Also Read: দুদকের ভাষ্য: রিজেন্ট ‘যেভাবে’ কোভিড হাসপাতাল হয়েছিল

গত বছর ছয়জনকে আসামি করে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা দুদকের উপ-পরিচালক ফরিদ আহমেদ পাটোয়ারী।
২০২০ সালের ২৩ সেপ্টেম্বর এ্কই কর্মকর্তা মামলা করলেও তাতে ডা. আজাদকে আসামি করা হয়নি। তদন্তের পর তার নাম যুক্ত করা হয়।

মামলায় আসামিদের বিরুদ্ধে পরস্পর যোগসাজশে ক্ষমতার অপব্যবহার করে লাইসেন্সের মেয়াদবিহীন রিজেন্ট হাসপাতালকে ডেডিকেটেড কোভিড হাসপাতালে রূপান্তর, সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর ও সরকারি প্রতিষ্ঠান নিপসমের ল্যাবে ৩ হাজার ৯৩৯ জন কোভিড রোগীর নমুনা বিনামূল্যে পরীক্ষা করার অভিযোগ আনা হয়।

আসামিদের বিরুদ্ধে মোট ৩ কোটি ৩৪ লাখ ৬ হাজার ৫০০ টাকা আত্মসাতের অভিযোগ আনা হয়েছে মামলায়।

দেশে করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের পর কোভিড-১৯ রোগীদের চিকিৎসায় ২০২০ সালের ২১ মার্চ রিজেন্ট হাসপাতালের সঙ্গে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের চুক্তি হয়। ওই অনুষ্ঠানে স্বাস্থ্যমন্ত্রীসহ কয়েকজন সচিব উপস্থিত ছিলেন।

তিন মাস না যেতেই করোনাভাইরাসের পরীক্ষা না করে ভুয়া রিপোর্ট দেওয়া, সরকারের কাছে বিল দেওয়ার পর রোগীর কাছ থেকেও অর্থ নেওয়াসহ নানা অনিয়মের অভিযোগ ওঠে রিজেন্টের বিরুদ্ধে। এরপর অভিযান চালিয়ে রিজেন্ট হাসপাতালের মিরপুর ও উত্তরা শাখা বন্ধ করে দেয় র‌্যাব।

তখন জানা যায়, চুক্তি হওয়ার বহু আগে ২০১৭ সালেই হাসপাতালটির লাইসেন্সের মেয়াদ শেষ হয়ে গিয়েছিল। এ নিয়ে প্রশ্ন উঠলে ওই হাসপাতালের অনুমোদন বাতিল করে স্বাস্থ্য বিভাগ।

২০১৬ সালের ১ সেপ্টেম্বর থেকে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালকের পদে ছিলেন ডা. আজাদ। সরকারি চাকরির বয়স শেষ হওয়ার পরও তাকে চুক্তিতে নিয়োগ দিয়ে ওই পদে রেখেছিল সরকার।

কিন্তু দেশে করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের পর স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের একের পর এক কেলেঙ্কারির খবর প্রকাশ হতে থাকলে বিপাকে পড়তে হয় ডা. আজাদকে। মাস্ক কেলেঙ্কারির পর করোনাভাইরাসের পরীক্ষা ও চিকিৎসা নিয়ে জেকেজি হেলথ কেয়ার ও রিজেন্ট হাসপাতালের প্রতারণ ও জালিয়াতির খবর ফাঁস হলে তিনি তোপের মুখে পড়েন। এরপর ২০২০ সালের ২১ জুলাই তিনি পদত্যাগপত্র দেন।

তার আগে ওই বছরের ১৫ জুলাই ভোরে সাতক্ষীরার দেবহাটা সীমান্ত থেকে সাহেদকে গ্রেপ্তার করে র‌্যাব। তার বিরুদ্ধে প্রতারণা, অনিয়মের নানা অভিযোগ তখন সামনে আসতে থাকে।