দলে ৩৩% নারী প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিতে আরও সাত বছর সময় বাড়ানোসহ একগুচ্ছ প্রস্তাব দিয়েছে কাজী হাবিবুল আউয়াল কমিশন।
Published : 28 Mar 2023, 12:37 AM
আইন মন্ত্রণালয়ের যাচাই-বাছাই শেষে নির্বাচনী আইন গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ (আরপিও) সংশোধনের প্রস্তাব মন্ত্রিসভা বৈঠকে উঠছে।
মঙ্গলবার মন্ত্রিসভা কমিটির বৈঠকে নির্বাচন কমিশনের একগুচ্ছ প্রস্তাবসহ এটির সংশোধনী ওঠার সূচি রয়েছে বলে জানিয়েছেন নির্বাচন কমিশনার রাশেদা সুলতানা।
তিনি বলেন, “২৮ মার্চ মন্ত্রিসভার বৈঠক রয়েছে। এ সভায় আমাদের প্রস্তাবগুলো উঠবে। আমরা যা প্রস্তাব করেছি সব আছে। মন্ত্রিসভায় অনুমোদন পেলে সংসদ পাঠানো হবে।”
কয়েক বছর অপেক্ষার পর আরপিও সংশোধনী মন্ত্রিসভা বৈঠকে উঠছে। এতে ১৫-১৭টি ধারা-উপধারায় সংশোধনী আসতে পারে বলে আগে জানিয়েছিলেন ইসির কর্মকর্তারা।
মন্ত্রিসভায় অনুমোদন পেলে সংসদের আসন্ন অধিবেশনে এটি বিল আকারে উঠতে পারে। আগামী ৬ এপ্রিল সংসদের ২২তম অধিবেশন বসবে।
সংশোধনীতে রাজনৈতিক দলের সর্বস্তরের কমিটিতে ৩৩% নারী নেতৃত্ব নিশ্চিত করায় সময়সীমা বাড়িয়ে ২০৩০ সাল করাসহ বেশ কয়েকটি সংশোধনী প্রস্তাব রয়েছে বলে কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।
তবে ইভিএমে ভোটগ্রহণ কর্মকর্তার আঙ্গুলের ছাপে সর্বোচ্চ ১ শতাংশ ভোটারকে ভোট দেওয়ার জন্য ব্যালট ইস্যুর বিধান আরপিওতে যুক্তের যে প্রস্তাব ইসি করেছিল তা আইন মন্ত্রণালয়ের আপত্তিতে সংশোধনী প্রস্তাবে থাকছে না। প্রজ্ঞাপন দিয়ে এসব বিষয়ে নির্দেশনা দেওয়ার বিদ্যমান যে প্রথা রয়েছে তা বহাল থাকার কথা এর আগে ইঙ্গিত দিয়েছিলেন নির্বাচন কমিশনার রাশেদা।
সংশোধনীতে আরও প্রস্তাব
কাজী হাবিবুল আউয়ালের নেতৃত্বাধীন বর্তমান কমিশন ২০২২ সালে দায়িত্ব নেওয়ার পর আরপিও সংশোধনে একগুচ্ছ প্রস্তাব পাঠায় সরকারের কাছে। এ নিয়ে আইন মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে কয়েক দফা চিঠি চালাচালিও করেছে কমিশন। প্রস্তাবগুলো মন্ত্রণালয়ে ভেটিং শেষে এবার সরকারের সায় পেতে যাচ্ছে।
আরওপি সংশোধনের বিষয়টি আলোচনায় আসার পর ইসির প্রস্তাবগুলোর বিষয়ে এর আগে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানিয়েছিলেন
ইসির অতিরিক্ত সচিব অশোক কুমার।
নির্বাচন কমিশনার রাশেদা সুলতানা গত ২৭ ফেব্রুয়ারি আইন মন্ত্রণালয়ে ভেটিংয়ের অপেক্ষায় থাকার সময় কমিশনের প্রস্তাবগুলো নিয়ে কথা বলেছিলেন সাংবাদিকদের সঙ্গে।
সংশোধনীতে থাকা প্রস্তাবগুলোর মধ্যে রয়েছে-অনুচ্ছেদ ২৫ এ ভোটকেন্দ্রে পেশিশক্তির প্রভাব বিস্তার করলে ভোটগ্রহণ কর্মকর্তাকে নির্বাচন বন্ধ করে দেওয়ার ক্ষমতা দেওয়ার প্রস্তাব।
একই সঙ্গে নির্বাচন কর্মকর্তা কোন প্রক্রিয়ায় নির্বাচন বন্ধ করবেন সেটির বিস্তারিত উল্লেখ করা হয়েছে নতুন সংশোধনীতে।
অনুচ্ছেদ ৩১ ও ৩৬ এ ব্যালট পেপারের পেছনে অফিসিয়াল সিল ও প্রিসাইডিং কর্মকর্তার স্বাক্ষর না থাকলে তা গণনায় আনা যাবে না- এমন বিধান স্পষ্ট করা হয়েছে প্রস্তাবে।
অনুচ্ছেদ ৩৬(১১) এ ভোটগণনার বিবরণী ও ব্যালট পেপারের হিসাব প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী বা তার এজেন্টকে দেওয়ার বিষয়টি বাধ্যতামূলক করা হয়েছে খসড়ায়।
৭৮ (২) অনুচ্ছেদে ভোটগ্রহণ শুরুর আগের ৪৮ ঘণ্টা ও পরের ৪৮ ঘণ্টায় কেউ বিশৃঙ্খলামূলক আচরণ, অস্ত্র ও পেশিশক্তি প্রদর্শন এবং ভোটগ্রহণ কাজে নিয়োজিতদের ভয় দেখালে সর্বোচ্চ সাত বছর ও সর্বনিম্ন দুই বছর জেল-জরিমানার বিধান রাখা হয়েছে খসড়া প্রস্তাবে।
সংশোধনীর ৮৪এ ও ৮৪বি অনুচ্ছেদে ভোটার, পর্যবেক্ষক ও সাংবাদিকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা এবং পেশিশক্তির বিস্তার বন্ধে সাজার কথা বলা হয়েছে নতুন প্রস্তাবে।
এছাড়া মনোনয়নপত্র দাখিলের আগের দিন কৃষি ও ক্ষুদ্রঋণ এবং বিল খেলাপিরা তাদের খেলাপি টাকা পরিশোধ করলেই নির্বাচনে প্রার্থী হতে সুযোগ রাখার প্রস্তাব করা হয়েছে। বিদ্যমান আইনে সাত দিন আগে এসব পরিশোধের বিধান রয়েছে।
আরপিও সংস্কার প্রস্তাব ভেটিংয়ের অপেক্ষায়: ইসি রাশেদা