২০২৬ সালের জানুয়ারিতে যাদের বয়স ১৮ হবে, তাদের তথ্যও হালনাগাদে নেওয়া হয়েছে। তবে ডিসেম্বরে নির্বাচন হলে তারা ভোট দিতে পারবেন না।
Published : 17 Apr 2025, 08:25 AM
বর্তমানে তালিকায় থাকা ১২ কোটি ৩৭ লাখের বেশি ভোটারের সংখ্যা থেকে ২১ লাখ ৬০ হাজার মৃত ভোটার বাদ যাবে; আর বাড়ি বাড়ি গিয়ে চলমান হালনাগাদে যুক্ত হবে আরো ৪৩ লাখ নাম।
তাতে জুনে প্রকাশিতব্য চূড়ান্ত ভোটার তালিকায় মোট ভোটার দাঁড়াবে অন্তত ১২ কোটি ৬০ লাখ।
২০২৬ সালের জানুয়ারিতে যাদের বয়স ১৮ হবে, তাদের তথ্যও হালনাগাদে নেওয়া হয়েছে। বিদ্যমান আইনে আগামী বছর ২ জানুয়ারি থেকে ২ মার্চের মধ্যে ভোটার তালিকায় অন্তর্ভুক্ত হতে পারবেন তারা; তাদের সংখ্যাও ২০ লাখের মত।
নির্বাচন কমিশনার মো. আনোয়ারুল ইসলাম সরকার বলছেন, তফসিল ঘোষণার আগে যারা ভোটারযোগ্য হবেন, তাদের নামই ভোটার তালিকায় যোগ করার প্রচেষ্টা নেবে নির্বাচন কমিশন।
হালনাগাদের সার্বিক তথ্য তুলে ধরে এ নির্বাচন কমিশনার বলেছেন, তফসিল ঘোষণার আগে কারো কারো বয়স ১৮ হবে, তারাও ভোট দিতে পারবেন। এবার যারা নতুন ভোটার হবেন এবং আগে যারা ভোট দিতে পারেননি–এমন তরুণদেরও ভোট দেওয়ার আকাঙ্ক্ষা প্রবল।
“নির্বাচন কমিশন সর্বোচ্চ চেষ্টা করবে। শিডিউল ডিক্লারের আগ পর্যন্ত যাদের বয়স ১৮ হবে, তাদেরকে যাতে আমরা ভোটার তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করতে পারি, তারা যেন ভোট দিতে পারে।”
এ বছরের ডিসেম্বরে ভোট করার লক্ষ্য ধরে এগোচ্ছে এএমএম নাসির উদ্দিন কমিশন। অক্টোবরে তফসিল ঘোষণার প্রস্তুতি রেখে নির্বাচনী সব কাজ গুছিয়ে রাখতে চায় ইসি।
সেজন্য জুনের ভেতরে ভোটার তালিকা চূড়ান্ত করার কথাও বলছেন কমিশনাররা।
বৃহস্পতিবার নির্বাচন কমিশনার আনোয়ারুল ইসলাম সরকার জানান, এবারের হালনাগাদে লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশি নাগরিকের তথ্য সংগ্রহ করা হয়েছে, ‘টার্গেট’ ছিল ৬১ লাখ ৮৮ হাজার জনের।
এরমধ্যে ৪৩ লাখের বেশি ভোটার নিবন্ধিত হয়েছেন, যাদের বয়স অনেক আগেই ১৮ বছর হয়েছে। নতুন তথ্য সংগ্রহ হয়েছে ১৯ লাখ ৬৬ হাজার জনের।
সব মিলিয়ে প্রায় ৬৩ লাখ নাগরিকের তথ্য সংগ্রহ করা হয়েছে। আর মৃত ভোটারের তথ্য এসেছে ২১ লাখ ৬০ হাজার।
এ নির্বাচন কমিশনার বলেন, “বাড়ি বাড়ি গিয়ে হালনাগাদের কাজটা অত্যন্ত সফলভাবে হয়েছে। সবার তথ্য নেওয়ার প্রাথমিক কাজের পর নিবন্ধনের কাজও চলমান রয়েছে। ভোটার তালিকা জুনের মধ্যে চূড়ান্ত হয়ে যাবে।”
১ জানুয়ারি ভোটারযোগ্যদের তালিকাভুক্ত করতে তথ্য সংগ্রহের পর প্রতিবছর ২ জানুয়ারি খসড়া প্রকাশ করা হয়। দাবি আপত্তি নিষ্পত্তি শেষে ২ মার্চ চূড়ান্ত হয় ভোটার তালিকা।
এ নিয়ম পরিবর্তন করতে ভোটার তালিকা আইনের ধারা-৩ ও ১১ তে সংশোধনের প্রস্তাব তৈরি করছে ইসি।
এর মধ্যে উপধারা ৩(জ) তে ‘যৌক্তিক বিবেচনায় ঘোষিত অথবা নির্ধারিত অন্য কোনো তারিখ’ সংযোজনের প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে, যাতে জানুয়ারির প্রথম দিন ছাড়াও অন্যদিন হালনাগাদ তালিকা প্রকাশের সুযোগ থাকে।
আর যে ১১(৩) উপধারা সংযোজনের প্রস্তাব করা হয়েছে, তাতে বলা হয়েছে, তফসিল ঘোষণার আগে কারণ উল্লেখ করে যে কোনো সময় ভোটার তালিকা হালনাগাদ করতে পারবে ইসি।
নির্বাচন কমিশনার আনোয়ারুল ইসলাম সরকার বলেন, “সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য একটি স্বয়ংসম্পূর্ণ ও পরিশুদ্ধ ভোটার তালিকা অপরিহার্য। নির্বাচন কমিশন ভোটার তালিকা হালনাগাদের কাজ ঘরে ঘরে গিয়ে সুন্দরভাবে সম্পন্ন করেছে। আমরা আশা করি জুনের মধ্যে চূড়ান্ত ভোটার তালিকাটি পেয়ে যাব।”
>> চলমান ভোটার তালিকা হালনাগাদে যুক্ত হয়েছেন আগে বাদ পড়া (যাদের জন্ম ২০০৭ সালের ১ জানুয়ারি বা তার আগে) ৪৩,৩১,৯৯৯ জন ভোটার।
এরমধ্যে পুরুষ ১৯,১২,১২১ জন; নারী ২৪,১৯,৭৫০ জন এবং হিজড়া ১২৮ জন।
বাদ পড়া এসব ভোটার ২০২৫ সালের ডিসেম্বরের আগেই ভোটারযোগ্য রয়েছেন।
>> তালিকায় এবার যোগ হয়েছেন ১৯,৬৬,৩৬১ জন নতুন ভোটার (যাদের জন্ম ২ জানুয়ারি ২০০৭ থেকে ১ জানুয়ারি ২০০৮ সালের মধ্যে)।
এর মধ্যে পুরুষ ১০,৩৭,৯৩৬ জন; নারী ৯,২৮,০৮২ জন এবং হিজড়া ৩৪৩ জন।
>> বিদ্যমান তালিকা থেকে বাদ যাবে মৃত ভোটাররাভ সেই সংখ্যা ২১,৫৯,৪৮৫ জন।
এরমধ্যে পুরুষ ১২,৩৭,৯৪৫ জন, নারী ৯,২১,২০৪ জন এবং হিজড়া ৩৩৮ জন।
এবারের হালনাগাদে ১৭ বছর বয়সী যে নাগরিকদের তথ্য নেওয়া হয়েছে, তাদের অধিকাংশই ২০২৬ সালের ১ জানুয়ারি ভোটার হওয়ার যোগ্য হবেন। ডিসেম্বরে ভোট হলে তাদের ভোট দেওয়ার সুযোগ হবে না।
তবে ভোট যদি পিছিয়ে মার্চের দিকে যায়, তাহলে আরো ২০ লাখের মত তরুণের ভোট দেওয়ার সুযোগ হবে।
সেক্ষেত্রে তখন মোট ভোটার সংখ্যা হবে ১২ কোটি ৮০ লাখের মত।
পুরনো খবর
তালিকা হালনাগাদ: এবারও বিশেষ হিসাব-নিকাশে তরুণ ভোটাররা