দিনের বড় অংশজুড়ে গণ্ডগোলের পুরো সময়ে মেট্রোরেল চলাচলে কোনো ব্যাঘাত ঘটেনি বলে জানিয়েছে এমআরটি পুলিশ।
Published : 19 May 2024, 09:02 PM
পুলিশের সঙ্গে সংঘাতের পর মিরপুরের কালশি এলাকায় থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে; দীর্ঘ সময় রাস্তাগুলো বন্ধ থাকার পর সন্ধ্যায় চালু হলেও মিরপুরমুখী সবগুলো সড়কে ছিল ব্যাপক যানজট।
তবে দিনের বড় অংশজুড়ে গণ্ডগোলের পুরো সময়ে মেট্রোরেল চলাচলে কোনো ব্যাঘাত ঘটেনি বলে জানিয়েছে এমআরটি পুলিশ।
আগামী সোম ও মঙ্গলবারও প্রতিবাদ কর্মসূচি থাকার কথা জানিয়েছেন ব্যাটারিচালিত রিকশাচালকরা। জাতীয় প্রেস ক্লাব ও সচিবালয় এলাকায় মানববন্ধন কর্মসূচির ঘোষণা দিয়েছেন তারা।
এদিকে সংঘাতের সময় ছররা গুলিতে আহত এক পথচারীকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে।
রাজধানীতে সড়কে দুর্ঘটনা কমিয়ে আনতে ব্যাটারিচালিত রিকশা চলাচল বন্ধে পুলিশের সাম্প্রতিক অভিযানের বিরুদ্ধে রোববার সকালে মিরপুরের বিভিন্ন এলাকায় লাঠিসোঁটা হাতে বিক্ষোভে নামে রিকশাচালক ও ব্যবসায়ীরা। সকাল ১০টা থেকে তারা মিরপুর ১০ নম্বর গোল চত্বর অবরোধ করে রাখেন। একই সময় কালশীতেও তাদের বিক্ষোভ চলতে থাকে।
দিনভর থেমে থেমে বিক্ষোভের মধ্যে বিকাল ৪টার পর কালশী এলাকায় পুলিশের সঙ্গে সংঘাতে জড়ায় রিকশাচালকরা। সেখানে ফ্লাইওভারের নিচে ট্রাফিক পুলিশের বক্সটি ভাঙচুর করে তাতে আগুন ধরিয়ে দেয় বিক্ষুব্ধ চালকরা।
পুলিশ বক্সের ভেতরে টিভি, এসি, আইপিএসসহ যন্ত্রপাতিগুলো ভেঙে ফেলে তারা। এসময় তাদের ছত্রভঙ্গ করতে গেলে পুলিশের সঙ্গে তাদের সংঘর্ষ শুরু হয়। পুলিশ রাবার বুলেট, টিয়ার গ্যাস ছুঁড়ে তাদের ছত্রভঙ্গ করার চেষ্টা করে। তারাও পাল্টায় ঢিল ছুঁড়তে থাকে। সংঘাত ছড়িয়ে পড়ে আশপাশের অলি-গলিতেও।
খোরশেদ আলম নামে রিকশাচালকদের একজন নেতা বলেন, রিকশা চলাচলের অনুমতি না দেওয়া পর্যন্ত সামনের দিনগুলোতে দফায় দফায় তাদের কর্মসূচি চলবে। রোববার মিরপুর ১০ নম্বরে বিক্ষোভ করেছে দুয়ারীপাড়া এলাকার রিকশাচালকেরা। আর কালশীতে ছিলেন কালাপানি এলাকার রিকশাচালক ও সংশ্লিষ্টরা।
সন্ধ্যা ৬টার দিকে মিরপুর ট্রাফিক বিভাগের উপকমিশনার জসিম উদ্দিন বলেন, বিক্ষোভকারীরা পুলিশ বক্স, বিভিন্ন গাড়িতেও হামলা চালিয়ে ভাংচুর করেছে। তবে এখন পরিস্থিতি স্বাভাবিক। তারা বিক্ষিপ্তভাবে অবস্থান নিলেও যান চলাচলে কোনো সমস্যা হচ্ছে না।
এর আগে রিকশাচালকরা সড়কে নামার পর তিনি বলেছিলেন, ব্যাটারিচালিত রিকশার চালক এবং এই ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত অনেকে মিরপুর ১০ নম্বর গোল চত্বর অবরোধ করে। এতে ওই এলাকায় যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। পুলিশের সাম্প্রতিক অভিযানে কারণে তারা এরকম করছেন।
মিরপুর ১০ নম্বর গোল চত্বরে জড়ো হওয়ার আগে বিক্ষোভকারীরা মিরপুরের কালশিসহ আরও কয়েকটি সড়কে বিক্ষোভে নামেন।
“এ সময় তারা প্যাডেলচালিত রিকশাচালকদেরও মারধর করেন, কয়েকটি বাসে হামলা করেন। পরে তারা মিরপুর ১০ নম্বর গোল চত্বরে এসে অবস্থান নেন।”
ওই এলাকায় বিক্ষোভ ও সংঘাতের কারণে মেট্রোরেল চলাচলে কোনো সমস্যা হয়নি বলে জানাচ্ছেন মেট্রোরেলের নিরাপত্তায় গঠিত এমআরটি পুলিশের ডিআইজি সাইফুল ইসলাম।
তিনি বলেন, শুধু যেখানে বিক্ষোভ ছিল মেট্রো স্টেশনের সেদিককার গেটগুলো বন্ধ রাখা হয়। যাত্রীরা অন্য গেট ব্যবহার করে ট্রেনে ওঠানামা করেছেন।
এদিকে সংঘাতের সময় ছররা গুলিতে আহত এক পথচারীকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে। আহত সাগর চৌকদার (২৫) দর্জি দোকানের কারিগর।
তিনি বলেন, উত্তরায় কাজ শেষে এক বন্ধু বাসায় ফেরার পথে কালশী মোড়ে বিকাল ৩টার দিকে তার শরীরে ছররা গুলি লাগে।
ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল পুলিশ ফাড়ির ইনচার্জ পরিদর্শক মোঃ বাচ্চু মিয়া বলেন, আহত সাগর হাসপাতালের জরুরি বিভাগে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
আরও পড়ুন: