সফরকালে চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বৈঠকসহ সাংহাই এর ব্যবসায়ী প্রতিনিধিদের সঙ্গে বসবেন পররাষ্ট্র উপদেষ্টা।
Published : 20 Jan 2025, 07:37 PM
ক্ষমতার পালাবদলে অন্তর্বর্তী সরকার গঠনের পর প্রথম দ্বিপক্ষীয় সফরে চীনের উদ্দেশে রওনা হয়েছেন পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেন।
সোমবার বিকালে তিন দিনের সফরে তার ঢাকা ছাড়ার কথা বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। আগামী ২৪ জানুয়ারি তার দেশে ফেরার কথা রয়েছে।
চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াং ই এর আমন্ত্রণে এ সফরে গেলেন পররাষ্ট্র উপদেষ্টা।
এর আগে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র রফিকুল আলম বলেছিলেন, এ সফরকালে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বৈঠক করবেন, যাতে দুই দেশের মধ্যে বিভিন্ন স্বার্থসংশ্লিষ্ট বিষয়ে আলোচনা হবে।
তিনি বলেন, এই সফরে বাংলাদেশ ও চীনের দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের ভবিষ্যৎ রূপরেখা প্রণয়নকল্পে দুই দেশের মধ্যে বিভিন্ন ক্ষেত্রে চলমান সহযোগিতার অগ্রগতি পর্যালোচনা করা হবে। এগুলোর মধ্যে রয়েছে- অর্থনৈতিক সহযোগিতা বাড়ানো, বাণিজ্য ও বিনিয়োগ সম্প্রসারণ, কৃষি, শিক্ষা, অবকাঠামো, নবায়নযোগ্য জ্বালানি খাতে সহযোগিতা, রোহিঙ্গা সংকটের টেকসই সমাধান।
২০২৪ সালের জুলাইয়ে দেশে যখন সরকারি চাকরির কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলন বেগবান হতে শুরু করে তখন চীনের প্রধানমন্ত্রী লি চিয়াংয়ের আমন্ত্রণে বেইজিং সফর করেন তখনকার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
নিকট প্রতিবেশী রাষ্ট্র ভারত সফরের দুই সপ্তাহ পর ৮ থেকে ১০ জুলাই বেইজিং সফরে গিয়েছিলেন তিনি। তবে সফর সংক্ষিপ্ত করে ফিরে আসেন শেখ হাসিনা।
সফরে তিনি চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিংপিং ও প্রধানমন্ত্রী লি চিয়াং এর সঙ্গে বৈঠকসহ বিভিন্ন অনুষ্ঠানে যোগ দেন।
ওই সফরে দুই দেশের মধ্যে ২১টি সমঝোতা স্মারক (এমওইউ) সই হয় এবং সাতটি প্রকল্পের ঘোষণা আসে।
চীন যাচ্ছেন পররাষ্ট্র উপদেষ্টা, কী থাকছে আলোচনায়?
চীন সফরের অভিজ্ঞতা তুলে ধরতে ডাকা সংবাদ সম্মেলনে তখনকার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছিলেন, অনুদান, সুদমুক্ত ঋণ, রেয়াতি ঋণ ও বাণিজ্যিক ঋণ আকারে বাংলাদেশকে দুই বিলিয়ন ডলারের সমপরিমাণ অর্থ দিতে চীন সম্মত হয়েছে।
ছাত্র-জনতার আন্দোলনে শেখ হাসিনা সরকার ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পরবর্তী রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে পররাষ্ট্র উপদেষ্টার এবারের সফরে বাজেট সহায়তার আলোচনাটি থাকবে কি না এবং কোনো চুক্তি স্বাক্ষর এজেন্ডায় আছে কি না, জানতে চাইলে নিয়মিত বিফ্রিংয়ে মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র রফিকুল আলম বলেছিলেন, “এখনও সংযোজন-বিয়োজনের সুযোগ আছে। এখনই তাই কিছু বলছি না।”
এ সফরের কর্মসূচি নিয়ে বলেন, “বাংলাদেশ এবং চীন ২০২৫ সালে তাদের কূটনৈতিক সম্পর্কের সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপন করতে চলেছে। এ লক্ষ্যে উভয় দেশ বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহণ করেছে। এ সফরে দুই দেশের কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপনের ৫০তম বার্ষিকী উদযাপনের শুভ সুচনা হবে।
“বাংলাদেশ ও চীনের মধ্যে বার্ষিক বাণিজ্যের পরিমাণ প্রায় ২৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলার, যদিও এই বাণিজ্য ভারসাম্য বাংলাদেশের অনুকূলে নয়। এই সফরে বাণিজ্য ভারসাম্য পুনর্গঠনের পাশাপাশি বাংলাদেশের বিভিন্ন খাতে চীনা বিনিয়োগ বৃদ্ধির বিষয়ে আলোচনা হবে বলে প্রত্যাশা করা হচ্ছে।”
এছাড়া বাংলাদেশে চীনের বিনিয়োগ বৃদ্ধিতে চীনের সাংহাই এর ব্যবসায়ী প্রতিনিধিদের সঙ্গে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা বৈঠক করবেন।