আবার অনির্দিষ্ট সময়ের কারফিউ ফেরার মধ্যে আন্দোলনকারীরা ‘ঢাকামুখী লং মার্চ’ একদিন এগিয়ে এনেছে। দেশজুড়ে জনমনে শঙ্কা। তবে আওয়ামী লীগ শোক মিছিলের কর্মসূচি স্থগিত করেছে।
Published : 05 Aug 2024, 01:59 AM
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ডাকা অসহযোগের প্রথম দিনই রক্তক্ষয়ী হয়ে দেখা দিল; দেশজুড়ে হামলা, জ্বালাও-পোড়াও, সংঘর্ষ, গুলি ও পিটুনিতে প্রাণ ঝরল অন্তত একশ মানুষের। আহত হয়ে হাসপাতালে কাতরাচ্ছেন আরও অসংখ্য।
সংঘাতের মধ্যে নাশকতা কোথাও কোথায় ভয়ংকর হয়ে ওঠে। হামলা হয়েছে হাসপাতালে, আগুন দেওয়া হয়েছে অ্যাম্বুলেন্সে। থানায় ও পুলিশ ফাঁড়িতে আক্রমণ করে পিটিয়ে মেরে ফেলা হয়েছে ১৪ পুলিশ সদস্যকে। তিনটি পৃথক জায়গায় ছয়জন করে মোট ১৮ আওয়ামী লীগ ও যুবলীগ কর্মীকে পিটিয়ে মেরে ফেলা হয়েছে। গুলিতে মারা গেছেন শিক্ষার্থীসহ অনেকেই। সংঘর্ষের মধ্যে পড়ে সাধারণের মৃত্যুও হয়েছে।
এমন উত্তপ্ত পরিস্থিতির মধ্যে জঙ্গি হামলার সর্তকতার কথা জানিয়ে সরকারের পক্ষ থেকে কঠোর হওয়ার বার্তা এসেছে। শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের সবাইকে নিরাপদে ঘিরে ফিরে যাওয়ার আহ্বানও জানানো হয়েছে।
এরইমধ্যে সরকারের আলোচনার প্রস্তাব প্রত্যাখান করে সরকার পতনের একদফা দাবিতে অসহযোগ কর্মসূচি চালিয়ে যাওয়ার মধ্যে সোমবার ‘ঢাকামুখী লং মার্চ’ এর ঘোষণা দিয়েছে আন্দোলনকারীরা।
রোববার সংঘাতময় দিন পার করার মধ্যেই প্রথমে সোমবার বিক্ষোভ মিছিল এবং মঙ্গলবার লং মার্চ এর ঘোষণা দেওয়া হয় আন্দোলনকারীদের তরফে। পরে বিকালে তা একদিন এগিয়ে আনার ঘোষণা দেওয়া হয়। দেশের সব প্রান্ত থেকে আন্দোলনকারীরা ঢাকা অভিমুখে যাত্রা করবে বলে ঘোষণা দেয়। ঢাকার আটটি স্থানে জমায়েতের কর্মসূচি দেয় তারা।
সব মিলিয়ে সোমবারও সংঘাতের শঙ্কায় উদ্বেগে দেশের মানুষ। তবে সোমবার থেকে টানা তিন দিন সাধারণ ছুটি ঘোষণার কারণে অফিস যাওয়া থেকে ছাড় পেয়েছেন তারা।
এমন সংঘাতময় পরিস্থিতিতে কারফিউ শিথিলের সময় তুলে দিয়ে রোববার বিকাল ৬টা থেকেই অনির্দিষ্ট সময়ের জন্য আবার কারফিউ জারি করা হয়। সোম থেকে বুধবার পর্যন্ত টানা তিন দিন সাধারণ ছুটি ঘোষণা করা হয়েছে। সেনাবাহিনী সবাইকে কারফিউ আইন মেনে চলার আহ্বান রেখেছে।
তবে কারফিউ জারির পর আওয়ামী লীগ সোমবার তাদের পূর্বঘোষিত কর্মসূচি প্রত্যাহার করেছে।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সরকার পতনের অসহযোগের প্রথম দিনই সময় বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে সংঘাতময় হয়ে ওঠে পুরো দেশ। ঢাকায় ১২ জনসহ অন্তত ১০০ জন নিহত হওয়ার খবর এসেছে।
দিনভর দেশের দেশের বিভিন্ন এলাকায় সংঘাতের মধ্যে ১৯টি থানাসহ পুলিশের ২৬টি স্থাপনায় হামলা হয়েছে। বাদ যায়নি হাসপাতাল, সরকারি অফিস, মন্ত্রী-এমপিদের বাসাও।
এগুলোর মধ্যে সবচেয়ে ভয়ংকর হামলাটি হয়েছে সিরাজগঞ্জের এনায়েতপুর থানায়। সেখানে হামলা চালিয়ে পিটিয়ে ১৩ জন পুলিশ সদস্যকে হত্যা করা হয়েছে।
এছাড়া কুমিল্লায় হাইওয়ে পুলিশের এক সদস্যসহ রোববারের হামলায় বাহিনীটির ১৪ সদস্য নিহত হয়েছেন।
শিক্ষার্থী ও সাধারণের বাইরে সিরাজগঞ্জ ও নরসিংদীতে ছয়জন করে আওয়ামী লীগ এবং লক্ষ্ণীপুরে ছয়জন যুবলীগ কর্মী নিহত হয়েছেন।
কোটা আন্দোলনে সহিংসতা ও প্রাণহানি নিয়ে তৈরি উত্তেজনার মধ্যে শনিবার কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার থেকে সরকার পতনের একদফা দাবি আদায়ে সর্বাত্মক অসহযোগের ডাক দেয় আন্দোলনকারীরা।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ব্যানারে এই কর্মসূচি ডাকা হলেও রোববার দেশজুড়ে কর্মসূচিতে বিএনপি ও তাদের সমমনা রাজনৈতিক দলগুলোর সমর্থন দেখা যায়। বিভিন্ন স্থানে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে রাস্তায় দেখা যায় অভিভাবকদেরও।
এদিন সরকার পতনের কর্মসূচি মোকাবেলায় মাঠে নামে ক্ষমতাশীল আওয়ামী লীগও। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে এবং নাশকতা ঠেকাতে চেষ্টা করে পুলিশ।
পুলিশ ও আওয়ামী লীগের সঙ্গে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে আন্দোলনকারীদের সংঘর্ষ-সংঘাতে প্রায় একশ জনের প্রাণহানি হয়। আহত হয় অনেক মানুষ।
দিনব্যাপী টিভি স্ক্রল আর সংবাদমাধ্যমগুলোর ওয়েবসাইটে হতাহতদের সংখ্যা বেড়েছে লাফিয়ে লাফিয়ে।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন অসহযোগের প্রথম দিনে শিক্ষার্থীদের পাশাপাশি বিরোধী রাজনৈতিক কর্মীদের সহিংস অংশগ্রহণ দেখা গেছে দেশের নানা প্রান্তে। আন্দোলনকারীদের ঠেকাতে মাঠে ছিল আওয়ামী লীগের সশস্ত্র লোকজনও। তারা হতাহতও হয়েছে প্রচুর। দেশজুড়েই পুলিশ ছিল হামলার অন্যতম লক্ষ্যবস্তু। হামলা হয়েছে ১৯টি থানা, চার এসপি অফিসসহ, ডিসি অফিস, ইউএনও অফিসসহ অসংখ্য সরকারি স্থাপনায়।
এর বাইরে হামলা-অগ্নিসংযোগ করা হয়েছে মন্ত্রী-এমপিদের বাড়ি, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ও আওয়ামী লীগের বিভিন্ন ইউনিটের কার্যালয়েও।
ঢাকায় দেশের চিকিৎসা বিদ্যার উচ্চ শিক্ষার সবচেয়ে বড় প্রতিষ্ঠান বিএসএমএমইউতে হামলা হয়েছে, হাসপাতাল প্রাঙ্গণে রাখা কয়েকটি গাড়িতে আগুন লাগিয়ে দিলে ঘন কালো ধোঁয়ায় আচ্ছন্ন হয় পুরো হাসপাতাল ভবন।
হাসপাতাল ভবনে আগুন ছড়িয়ে পড়ার শঙ্কায় এসময়টুকু হাসপাতালের কয়েক হাজার রোগী, চিকিৎসক ও নার্সরা কাটিয়েছেন ভীষণ আতঙ্কের মধ্যে।
এমন পরিস্থিতিতে নাশকতাকারীদের ‘জঙ্গি’ আখ্যা দিয়ে তাদের রুখে দিতে দেশবাসীর প্রতি আহ্বান জানানো হয়েছে সরকারের পক্ষ থেকে। বন্ধ করা হয়েছে ফেইসবুক, হোয়াটসঅ্যাপ আর মোবাইল ইন্টারনেট।
সংঘাতময় ঢাকা
প্রধানমন্ত্রীর আলোচনার আহ্বান প্রত্যাখান করে শহীদ মিনার থেকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সরকার পতনের এক দফা দাবি আদায়ে অসহযোগের ঘোষণার পর থেকেই সবার মধ্যে উদ্বেগ ছড়াতে থাকে। রোববার সকালটা সংঘাতের শঙ্কা নিয়েই শুরু হয়েছিল ঢাকাবাসীর। সকাল থেকেই সড়কে যান চলাচল ছিল কম। প্রশাসনের মূলকেন্দ্র সচিবালয়েও উপস্থিতি কম ছিল।
দিন শেষে ঢাকার হাসপাতালগুলোতে হতাহতদের সংখ্যা সেটির পক্ষেই তথ্য দিচ্ছে। ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালসহ রাজধানীর তিনটি হাসপাতাল থেকে ১২ জনের মৃত্যুর তথ্য জানা গেছে।
সংঘাতের মধ্যে পড়ে আহত হয়ে এদিন ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালসহ মিরপুর ও উত্তরার বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন কয়েকশ মানুষ। যার মধ্যে রাত ৮টা পর্যন্ত ঢাকা মেডিকেলে ২২২ জন, সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালে ৬০ জন, মিরপুরের বিভিন্ন হাসপাতাল শতাধিক লোক চিকিৎসা নিয়েছেন। আহতদের বেশির ভাগই গুলিবিদ্ধ। মারধর, ইটের আঘাত, ছররা ও রাবার বুলেটের পাশপাশি লাইভ বুলেটের আঘাতেও হতাহত হয়েছেন মানুষ।
রোববার বিকালের পর থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নয়জন, মিটফোর্ড হাসপাতালে একজন, সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালে একজন এবং উত্তরায় একজনের মৃত্যুর খবর জানা গেছে।
ঢাকা মেডিকেলে বিকেল পৌনে ৪টার দিকে রাজধানীর জিগাতলা এলাকা থেকে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় কলেজ ছাত্র আব্দুল্লাহ সিদ্দিকীকে (২৩) নিয়ে আসা হলে চিকিৎসকেরা মৃত ঘোষণা করেন। তিনি হাবিবুউল্লাহ বাহার কলেজের বিবিএ এর শিক্ষার্থী।
এর কিছুক্ষণ পর ফার্মগেইট থেকে গুলিবিদ্ধ হওয়া তৌহিদুল ইসলাম (২২) নামে আরেক তরুণকে ঢাকা মেডিকেলে আনা হয়। তিনি কবি নজরুল কলেজ থেকে উচ্চ মাধ্যমিক পাস করে স্নাতকে ভর্তির অপেক্ষায় ছিলেন। পাশাপাশি ঢাকার একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের অফিস সহকারী হিসেবে কাজ করতেন।
এরপর আরও দুইজনকে গুরুতর অবস্থায় ঢাকা মেডিকেলের জরুরি বিভাগে আনতে দেখেন বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের মেডিকেল প্রতিনিধি। পরে এ দুইজন ‘মারা গেছেন বুঝতে পেরে’ তাদের বহনকারীরা জরুরি বিভাগের রেজিস্টারে তাদের পরিচয় নিবন্ধন করেননি। এদের একজনের শরীরে জাতীয় পতাকা বাঁধা ছিল। পরে এই দুইজন এবং তৌহিদুলের মৃতদেহ জরুরি বিভাগ থেকে স্ট্রেচারে করে শহীদ মিনারের দিকে নিয়ে যায় আন্দোলনকারীরা।
তাৎক্ষণিকভাবে নিহত ওই দুজনের তাদের নাম জানতে পারেননি মেডিকেল প্রতিনিধি।
এরপর সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে রমিজ উদ্দিন রূপ (২৪) নামে ড্যাফোডিল বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থীকে ঢাকা মেডিকেল আনা হয় মৃত অবস্থায়। এর কিছুক্ষণ পর অজ্ঞাত আরেক যুবকের লাশ হাসপাতালের জরুরি বিভাগে রেখেই চলে যান কয়েকজন। পরে জানা যায় তার নাম রিয়াজ উদ্দীন তালুকদার (৩০), যাত্রাবাড়ীতে গুলিবিদ্ধ হন তিনি। তার বাসা মীর হাজিরবাগে।
এরপর রাত পৌনে ৮টার দিকে বুকে গুলিবিদ্ধ আরেক যুবককে রাজধানীর কাজলা এলাকা থেকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে আসেন কয়েকজন কিশোর। ওই ব্যক্তির নাম জুয়েল (২৮)। তার বাসা ডেমরার কোনাপাড়া ৭ তলা মসজিদের পাশে।
যাত্রাবাড়ীতে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় কিশোর রেজাউল করিমকে (১৬) ঢাকা মেডিকেলে আনা হলে তারা মৃত ঘোষণা করেন চিকিৎসকেরা।
এর বাইরে সকালে ইটের আঘাতে আহত হয়ে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ঢাকা মেডিকেলে মারা যান মো. সেলিম নামে এক ব্যক্তি।
অপরদিকে রাজধানীর মিটফোর্ড হাসপাতালে আরেক যুবকের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। জহির উদ্দিন (২৫) নামে ওই যুবককে গুলিস্তান থেকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়।
রাতে সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালের পরিচালক শফিউর রহমান বলেন, সেখানে অজ্ঞাত পরিচয় একজনকে মৃত অবস্থায় আনা হয়েছে। আহত হয়ে চিকিৎসা নিয়েছেন ৬০ জনের মতো।
উত্তরায় ত্রিমুখী সংঘর্ষ
উত্তরা-আজমপুর এলাকায় বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে স্থানীয় আওয়ামী লীগ ও পুলিশের ত্রিমুখী সংঘর্ষ হয়েছে। আওয়ামী লীগের নেতারা গুলি ছুড়েছেন বলে অভিযোগ আন্দোলনকারীদের। ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার এক পর্যায়ে আন্দোলনকারীদের কয়েকজন আওয়ামী লীগ নেতাদের ঘিরে ধরে মারপিট করে। এতে কয়েকজন গুরুতর আহত হন।
আন্দোলনকারীদের মারধরে আনোয়ারুল ইসলাম নামে ৬০ বছর বয়সী এক আওয়ামী লীগ নেতার মৃত্যু হয় বলে জানিয়েছেন ওই এলাকার সাবেক সংসদ সদস্য হাসান হাবিব। একই জায়গায় মারধরে আব্দুস সাত্তার নামে দক্ষিণ খান থানা আওয়ামী লীগের এক নেতার মৃত্যুর খবর জানিয়েছেন সেখানকার স্থানীয় নেতাকর্মীরা। তবে পুলিশ বা হাসপাতাল বা দলের নেতাদের থেকে বিষয়টি নিশ্চিত হওয়া যায়নি।
অপরদকে দুপুরে আন্দোলনকারীরা ঢাকার সিএমএম আদালত প্রাঙ্গণে রাখা পুলিশেরে একটি বড় প্রিজন ভ্যান ও পাঁচটি গাড়ি ভাঙচুর করে। আদালত প্রাঙ্গণে পাল্টা পাল্টি বিক্ষোভ মিছিল করে আওয়ামী লীগ ও বিএনপিপন্থি আইনজীবীরা।
যাত্রাবাড়ীতে বেলা সাড়ে ১১টার পরে ঢাকা চট্টগ্রাম মহাসড়ক আন্দোলনকারীরা দখলে নেয়। অ্যাম্বুলেন্স ছাড়া কোনো কিছুই চলতে দেয়নি। এমনকি রিকশা চলাচালও বন্ধ করা হয়। আন্দোলনকারীদের সংখ্যা কম থাকায় আওয়ামী লীগ, ছাত্রলীগ ও যুবলীগের নেতাকর্মীরা তাদের ধাওয়া দিয়ে সরিয়ে দেয়।
পরে শনি আখড়া, রায়েরবাগ থেকে আন্দোলনকারীরা ওই এলাকায় প্রবেশ করলে আওয়ামী লীগ ও তাদের সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা সরে যায়। এরপর পুলিশ টিয়ারসেল মেরে আন্দোলনকারীদের সরিয়ে দিতে চাইলে তারা থানা ঘেরাও করে ফেলে। থানায় অবরুদ্ধ হয়ে পড়েন বেশ কয়েকজন পুলিশ সদস্য। পরে প্রচুর গুলি, সাউন্ড গ্রেনেড, টিয়ার গ্যাস মেরে থানার নিয়ন্ত্রণ ফিরে পায় পুলিশ। এসময় অনেকে আহত হন।
নগরীর অপরপ্রাপ্ত মিরপুর এলাকায় দিনভর আন্দোলনকারীদের সঙ্গে আওয়ামী লীগ নেতাকর্মী ও পুলিশের সংঘাত হয়েছে। স্থানীয় হাসপাতালগুলোতে চিকিৎসা নিয়েছেন কয়েকশ মানুষ।
এর বাইরে শাহবাগ, ফার্মগেইট, জিগাতলা, মগবাজার, কারওয়ান বাজার, বাড্ডা, বাংলা মোটর এলাকায় সংঘর্ষ ও গুলির ঘটনার খবর এসেছেন দিনভরই। এসব এলাকায় সংঘাতে হতাহতদের পরে হাসপাতালে নেওয়া হয়।
বিএসএমএমইউতে আতঙ্কের প্রহর
এদিন সকাল সাড়ে ১০টার দিকে শাহবাগ মোড় দখল করে বিক্ষোভ শুরু করেন শিক্ষার্থীসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার আন্দোলনকারীরা। বেলা ১১টার পর শাহবাগ মোড়ে মানুষের ঢল নামে। ধীরে ধীরে আন্দোলনকারীদের জমায়েত হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টাল, মৎসভবন, কাঁটাবন ও টিএসসি এলাকায়ও ছড়িয়ে পড়ে। জড়ো হওয়া আন্দোলনকারীদের একটি অংশ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বিএসএমএমইউ) হামলা ও ভাঙচুর চালায়।
পুরান ঢাকার চকবাজার থেকে একদল শ্রমিক লাঠিসোঁটা হাতে শাহবাগে জড়ো হন। এসময় বিএসএমএমইউ এর সামনের দিকে আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা স্লোগান দিচ্ছিলেন। দুই পক্ষ মুখোমুখি হলে আন্দোলনকারীদের একটি অংশ ইটপাটকেল নিক্ষেপ করেন। এক পর্যায়ে ধাওয়া দিলে আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা বিএসএমএমইউর ভেতরে চলে যান।
পরে আন্দোলনকারীরা বিএসএমএমইউর ফটক ভেঙে ভেতরে ঢুকে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের ছত্রভঙ্গ করে দেন। হাসপাতাল প্রাঙ্গণে অ্যাম্বুলেন্সসহ বেশ কিছু যানবাহন ভাঙচুর করা হয়, পুড়িয়ে দেওয়া হয় কয়েকটি মোটরসাইকেল ও স্টাফ বাস। পাশাপাশি হাসপাতালের বিভিন্ন ভবনে ঢিল ছুঁড়ে এবং লাঠি দিয়ে ভাঙচুর চালানো হয়।
আগুনে পুড়তে থাকা যানবাহনগুলো থেকে নির্গত কালো ধোঁয়া সুউচ্চ হাসপাতাল ভবনকেও গ্রাস করে। চরম আতঙ্কে অনেকে ওপর তলার ওয়ার্ডগুলো থেকে রোগী নিয়ে নেমে আসেন, কিন্তু চারদিকে সংঘর্ষ চলায় তখন যাওয়ার কোনো জায়গা ছিল না তাদের।
আতঙ্কিত রোগী ও তাদের স্বজন, হাসপাতালের চিকিৎসক-নার্সরা ছোটাছুটি চিৎকার শুরু করেন, ফেইসবুকে পোস্ট দিয়ে সাহায্য চান অনেকে। এক পর্যায়ে হাসপাতালের কর্মীরাও রুখে দাঁড়ান, ইট-পাটকেল ছোঁড়া শুরু করেন। আধাঘণ্টা তুমুল সংঘর্ষের পর পরিস্থিতি কিছুটা ঠাণ্ডা হলে এক ঘণ্টা পর ফায়ার সার্ভিস সেখানে এসে পোড়া যানবাহনগুলোতে পানি দেয়।
আওয়ামী লীগ ও সহযোগীরা বিভিন্ন পয়েন্টে
অসহযোগ আন্দোলন ঠেকাতে রাজধানীর বিভিন্ন পয়েন্টে অবস্থান নেয় সরকার দলীয় নেতাকর্মীরা। রোববার সকাল ১০টার পরপর আওয়ামী লীগ যুবলীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগ, ছাত্রলীগসহ সহযোগী ও পেশাজীবী সংগঠনের নেতাকর্মীরা অবস্থান নেয়।
ঢাকার মিরপুর ১০ নম্বর গোল চত্তর, পুরান ঢাকার লক্ষীবাজার, বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউ, ধানমন্ডি, ফার্মগিইট, সংসদ ভবনের পার্শে আড়ং এর মোড়ে কয়েক হাজার নেতাকর্মী নিয়ে অবস্থান নেয় তারা।
এছাড়া মহাখালীর তিতুমীর কলেজের সামনে, কাকরাইল মোড়, পরিবাগ, সাইন্স ল্যাব মোড়ে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা অবস্থান নিয়ে ও বাইকে শোডাউন দিতে দেখা যায়।
আরও কঠোর সরকার
অসহযোগের প্রথম দিন সংঘর্ষ ও প্রাণহানির ঘটনায় রোববার সন্ধ্যা ৬টা থেকে সারাদেশে আবার কারফিউ ঘোষণা করেছে সরকার। কারফিউ শিথিলের সময় তুলে নেয়া হয়েছে।
সরকারি বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, “পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত ঢাকা মহানগরসহ সকল বিভাগীয় সদর, সিটি কর্পোরেশন, পৌরসভা, শিল্পাঞ্চল, জেলা সদর ও উপজেলা সদরে সান্ধ্য আইন বলবৎ করা হল।”
প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের প্রেস উইং থেকে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, “ছাত্র-ছাত্রী ও অভিভাবক সকলকে নিরাপদে ঘরে ফিরে যাওয়ার জন্য অনুরোধ করা হচ্ছে। বিভিন্ন জায়গায় জঙ্গি হামলা হচ্ছে। জঙ্গি হামলাকারীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
সংঘাতের মধ্যে সোম থেকে বুধবার পর্যন্ত সাধারণ ছুটি ঘোষণা করেছে সরকার।
সোমবারই ‘লং মার্চ টু ঢাকা’ কর্মসূচি
এদিনের প্রাণঘাতী সংঘাতের পর বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের তরফে কর্মসূচি এগিয়ে আনা হয়েছে। মঙ্গলবারের বদলে ঢাকামুখী যাত্রা সোমবার পালনের ঘোষণা দেওয়া হয়েছে।
আগের কর্মূসচি অনুযায়ী সোমবার সারাদেশে বিক্ষোভ ও গণঅবস্থান এবং মঙ্গলবার ‘লং মার্চ টু ঢাকা’ কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়েছিল রোববার দুপুরে।
তবে বিকালে এক বিবৃতিতে আন্দোলনের সমন্বয়ক আসিফ মাহমুদ এক বিবৃতিতে বলেন, “পরিস্থিতি পর্যালোচনায় এক জরুরি সিদ্ধান্তে আমাদের 'মার্চ টু ঢাকা' কর্মসূচি ৬ অগাস্ট থেকে পরিবর্তন করে ৫ অগাস্ট করা হল। অর্থাৎ আগামীকালই সারাদেশের ছাত্র-জনতাকে ঢাকার উদ্দেশ্যে যাত্রা করার আহ্বান জানাচ্ছি।”
সরকারকে চূড়ান্ত জবাব দেওয়ার সময় এসেছে মন্তব্য করে বিবৃতিতে বলা হয়, “বিশেষ করে আশেপাশের জেলাগুলো থেকে সবাই ঢাকায় আসবেন এবং যারা পারবেন আজই ঢাকার উদ্দেশ্যে রওনা হয়ে যান।”
সন্ধ্যায় ঢাকার আটটি পয়েন্টে জমায়েতের ঘোষণা দেওয়া হয় তাদের অফিসিয়াল টেলিগ্রাম চ্যানেলে।
সিরাজগঞ্জে ১৩ পুলিশসহ ২২ জনকে পিটিয়ে হত্যা
সংঘাতের মধ্যে সিরাজগঞ্জের এনায়েতপুর থানায় ১৩ পুলিশ সদস্য হত্যার শিকার হয়েছেন। থানা আক্রমণের পর তাদের পিটিয়ে মারা হয়েছে।
পুলিশের রাজশাহী রেঞ্জের অতিরিক্ত ডিআইজি বিজয় বসাক বলেন, “আন্দোলনকারীরা মিছিল নিয়ে এসে এনায়েতপুর থানায় হামলা ও ভাঙচুর চালায়। একপর্যায়ে তারা থানায় আগুন দেয় এবং সেখানে থাকা পুলিশ সদস্যদের পিটিয়ে হত্যা করে।”
এর বাইরে সিরাজগঞ্জেই আরও ১৪ জন নিহত হয়েছেন। বিভিন্ন স্থানে আন্দোলনকারী এবং বিএনপি ও জামায়াতের নেতাকর্মীরদের সঙ্গে ক্ষমতাসীনদের সংঘাতে তাদের প্রাণ যায়।
নিহতরা হলেন, শহর যুবদলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক রঞ্জু খান (৩৯), যুবদল কর্মী আব্দুল লতিফ (২৫), ছাত্রদল কর্মী সুমন শেখ (২৫), রায়গঞ্জ উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলম (৩৮), রায়গঞ্জ উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি ইলিয়াছ হোসেন, সাধারণ সম্পাদক আল আমিন (৩৯), রায়গঞ্জের ব্রহ্মগাছা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান গোলাম সরোয়ার রিপন (৪০) ও একই ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক গোলাম হাসনাত টিটু এবং দৈনিক খবরপত্র পত্রিকার উপজেলা প্রতিনিধি প্রদীপ কুমার ভৌমিক (৫০)।
রাতে আরও নিহত পাঁচজনের খবর আসে। তবে তাদের পরিচয় জানা যায়নি। তাদের মধ্যে তিনজন ছাত্র।
এর বাইরে সিরাজগঞ্জ-২ আসনের এমপি জান্নাত আরা হেনরী, সাবেক এমপি হাবিবে মিল্লাত মুন্না, সিরাজগঞ্জ-৬ আসনের এমপি চয়ন ইসলাম, জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আব্দুস সামাদ তালুকদার, সহ-সভাপতি বিমল কুমার দাসের বাড়িতে ভাংচুর ও অগ্নিসংযোগ করা হয়েছে।
অন্য জেলাগুলোর মধ্যে লক্ষ্মীপুরে সংঘর্ষে ১০ জন, ফেনীতে ৮ জন, নরসিংদীতে ৬ জন, সিলেটের গোলাপগঞ্জে ৫ জন, বগুড়ায় ৪ জন, রংপুরে যুবলীগ কর্মীসহ ৩ জন, কিশোরগঞ্জে ৩ জন, কুমিল্লায় ৩ জন, শেরপুরে ৩, পাবনায় ৩ জন, মুন্সীগঞ্জে ৩ জন, মাগুরায় ছাত্রদল নেতাসহ ২ জন, জয়পুরহাটে ২ জন, বরিশাল সদরে ১ আওয়ামী লীগ নেতা, সাভারে ১ জন, ভোলায় ১ জন, ঠাকুরগাঁওয়ে ১ জন, কক্সবাজারে ১ জন ও হবিগঞ্জে ১ জনের মৃত্যু হয়েছে।
মোবাইল ইন্টানেট-ফেইসবুক ফের বন্ধ
বেলা ১টার দিকে মোবাইল ইন্টারনেট বন্ধ হয়েছে বলে গ্রাহকরা জানাতে শুরু করেন। তবে দায়িত্বশীল সংস্থা বিটিআরসি কিংবা মন্ত্রণালয় থেকে বিষয়টি স্বীকার করা হয়নি। দুপুরের পর বন্ধ করে দেওয়া হয় ফেইসবুক ও হোয়াটসঅ্যাপও।
এর আগে গত ১৭ জুলাই রাত থেকে মোবাইল ইন্টারনেট এবং ১৮ জুলাই রাতে ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট বন্ধ হয়ে যায়। ২৩ জুলাই ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট সংযোগ সীমিত পরিসরে ফেরারপর ২৮ জুলাই মোবাইল ইন্টারনেট চালু হয়। ৩১ জুলাই ফেসবুকও চালু করা হয়।
নাশকতা হলে সর্বোচ্চ ক্ষমতা প্রয়োগ, কারফিউ ভাঙলে ব্যবস্থা: ডিএমপি
থানায় হামলা, পুলিশের ওপর আক্রমণসহ অসহযোগের প্রথম দিনে দিনভর রাজধানীজুড়ে সহিংসতায় হতাহতের ঘটনার পর নাশকতাকারীদের বিরুদ্ধে আইনের সর্বোচ্চ ক্ষমতা প্রয়োগ করার ঘোষণা দিয়েছেন ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি) কমিশনার হাবিবুর রহমান।
রোববার রাত সাড়ে ১০টায় ডিএমপির মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, নাশকতাকারী, অগ্নিসংযোগকারী ও পুলিশ হত্যাকারীদের বিন্দুমাত্র ছাড় দেওয়া হবে না।
"তাদের বিরুদ্ধে ডিএমপি আইনের সর্বোচ্চ ক্ষমতা প্রয়োগ করতে বাধ্য হবে।"
তিনি বলেন, "কোটা সংস্কারের দাবিতে সাধারণ ছাত্র-ছাত্রীদের যে আন্দোলন শুরু হয়েছিল সেখানে আন্দোলনকারীদের ঢাল হিসেবে ব্যবহার করেছে দুর্বৃত্তরা। তারা ঢাকাসহ সারা দেশে নজীরবিহীন অরাজকতা, অগ্নিসংযোগ ও ভাংচুর চালিয়েছে।"
সরকারি চাকরিতে কোটা বাতিলের দাবিতে শুরু হওয়া এ আন্দোলনকে ঘিরে শুধু ডিএমপিতেই এখন পর্যন্ত অন্তত ৩৩০ জন পুলিশ সদস্য আহত ও তিনজন নিহত হয়েছেন।
সর্বশেষ রোববার ডিএমপি এলাকায় আন্দোলনকারীদের আক্রমনের শিকার হয় খিলগাঁও, যাত্রাবাড়ী ও শাহবাগ থানা। এদিন ঢাকায় ১০টি পুলিশ বক্সে ভাংচুর ও অগ্নিসংযোগ করা হয়। ভাংচুর ও অগ্নিসংযোগ করা হয় বেশ কয়েকটি পুলিশ গাড়িতে।
এদিন সহিংসতায় গুলিতে আহত হয়েছেন ৩ জন পুলিশ সদস্য। ওয়ারী বিভাগের ডিসিসহ সর্বমোট ডিএমপির ১১ সদস্য আহত হয়েছেন।
সারাদেশে আন্দোলনকারীদের তাণ্ডবের কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, "ঢাকার ধানমন্ডি, সায়েন্স ল্যাবরেটরি, শাহবাগ, প্রেসক্লাব, বাংলা মটর, মোহাম্মদপুর, কাজলা, উত্তরাসহ বিভিন্ন জায়গায় অগ্নিসংযোগ ও নজীরবিহীন সন্ত্রাসী হামলা চালানো হয়েছে। তারা রাজধানীর বিভিন্ন পয়েন্টে দেশীয় অস্ত্র, আগ্নেয়াস্ত্র, ককটেল বোমাসহ সমবেত হয়ে নিরীহ জনগণ ও পুলিশের উপর আক্রমন চালায়।
"তাদের নারকীয় তান্ডবের হাত থেকে রেহাই পায়নি দেশের চিকিৎসাসেবার প্রাণকেন্দ্র বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ও। সন্ত্রাসীরা রাজধানীর সিএমএম আদালতেও হামলা করে। তাদের নাশকতামূলক কার্যকলাপ নিঃসন্দেহে প্রমাণ করে তারা কেউই ছাত্র নয়, তারা সন্ত্রাসী, তারা জঙ্গি।"
আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল থেকে যে কোন ধরনের ধ্বংসাত্মক কার্যক্রম থেকে বিরত থাকার আহ্বান জানিয়ে হাবিবুর রহমান বলেন, "কারফিউ চলাকালীন কেউ বিনা প্রয়োজনে ঘর থেকে বের হবেন না। যারা কারফিউয়ের ভঙ্গ করবেন তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যাবস্থা গ্রহন করা হবে।"
সোমবার শোক মিছিল করবে না আওয়ামী লীগ
রক্তক্ষয়ী সহিংসতার প্রেক্ষাপটে কারফিউ শিথিলের সময় তুলে নিয়ে আবার অনির্দিষ্টকালের কারফিউ জারি হওয়ায় পূর্বনির্ধারিত শোক মিছিল করবে না আওয়ামী লীগ।
সোমবার এ কর্মসূচি পালনের কথা ছিল ক্ষমতাসীন দলটির।
রোববার রাতে দলের উপদপ্তর সম্পাদক সায়েম খান বিজ্ঞপ্তি দিয়ে শোক মিছিল হচ্ছে না বলে তথ্য দেন।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, “কারফিউ এর কারণে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের আগামীকালের (সোমবার) পূর্বনির্ধারিত শোক মিছিল অনুষ্ঠিত হবে না। একই সঙ্গে শহীদ বীর মুক্তিযোদ্ধা শেখ কামালের জন্মবার্ষিকীর কর্মসূচির আনুষ্ঠানিকতা স্থগিত করা হয়েছে।”