কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার থেকে সচিবালয় ঘেরাওয়ের কর্মসূচি ঘোষণা করেন বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের সমন্বয়ক মাহিন সরকার।
Published : 12 Feb 2025, 04:08 PM
পুলিশের বাধায় সচিবালয়ের সামনে রাস্তায় কাফনের কাপড় পরে শুয়ে পড়েছেন আন্দোলনরত বিডিআর সদস্যরা।
বুধবার দুপুর সাড়ে ১২ টার দিকে শিক্ষা ভবনের সামনের রাস্তায় অবস্থান নেন তারা।
দুপুর একটার কিছু আগে তারা সচিবালয়ের দিকে এগোলে শিক্ষা ভবনের সামনে ব্যারিকেড দিয়ে তাদের আটকে দেয় পুলিশ। বাধা অতিক্রম করে সামনের দিকে এগোতে থাকলে পুলিশ জলকামান দিয়ে তাদের আটকানোর চেষ্টা করে।
তবে পুলিশের ব্যারিকেড ভেঙ্গে সচিবালয়ের সামনের এলাকায় ঢুকে পড়ে আন্দোলনরতরা।
শাহবাগ থানার ওসি মো. খালিদ মনসুর বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “শিক্ষা ভবনের সামনের ব্যরিকেড ভেঙে তারা এখন সচিবালয় এলাকায় চলে এসেছে।”
এর আগে বুধবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে সচিবালয় ঘেরাওয়ের কর্মসূচি ঘোষণা করেন বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক মাহিন সরকার।
সচিবালয় এলাকায় ঢুকে পড়ার পর বিডিআর বিদ্রোহের ঘটনায় চাকরিচ্যুত সদস্যদের ফের আব্দুল গণি রোডের খাদ্য অধিদপ্তর ও বিদ্যুৎ ভবনের সামনে আবারও আটকে দেয় পুলিশ।
আন্দোলনরত বিডিআর সদস্যদের শপথ পাঠ করান এই সমন্বয়ক।
গেল ২০০৯ সালের ২৫ ও ২৬ ফেব্রুয়ারি ঢাকার পিলখানায় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর সদর দপ্তরে বিদ্রোহের ঘটনায় ৫৭ সেনা কর্মকর্তাসহ ৭৪ জন নিহত হন। দেশের গণ্ডি পেরিয়ে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে আলোড়ন তোলে ওই ঘটনা।
এই ঘটনায় হত্যা ও বিস্ফোরক আইনে দুটি মামলা হয়। হত্যা মামলায় খালাস বা সাজাভোগ শেষে বিস্ফোরক মামলার কারণে ৪৬৮ জনের মুক্তি আটকে আছে।
হত্যা মামলায় ৮৫০ জনের বিচার শেষ হয় ২০১৩ সালের ৫ নভেম্বর। তাতে ১৫২ জনের ফাঁসি, ১৬০ জনের যাবজ্জীবন ও ২৫৬ জনকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড দেওয়া হয়। খালাস পান ২৭৮ জন।
২০১৭ সালের ২৭ নভেম্বর সেই মামলার ডেথ রেফারেন্স ও আপিলের রায়ও হয়ে যায় হাই কোর্টে। তাতে ১৩৯ আসামির মৃত্যুদণ্ড বহাল রাখা হয়। যাবজ্জীবন সাজা দেওয়া হয় ১৮৫ জনকে। আরো ২২৮ জনকে দেওয়া হয় বিভিন্ন মেয়াদে সাজা। খালাস পান ২৮৩ জন।
হাই কোর্টের রায়ের আগে ১৫ জনসহ সব মিলিয়ে ৫৪ জন আসামি মারা গেছেন। হত্যা মামলায় হাই কোর্টের দেওয়া রায়ের বিরুদ্ধে ২২৬ জন আসামি আপিল ও লিভ টু আপিল করেছেন।
অন্যদিকে হাই কোর্টে ৮৩ জন আসামির খালাস এবং সাজা কমানোর রায়ের বিরুদ্ধে লিভ টু আপিল করেছে রাষ্ট্রপক্ষ। এসব আপিল ও লিভ টু আপিল এখন শুনানির অপেক্ষায়।
অন্যদিকে বিস্ফোরক আইনের মামলায় ৮৩৪ জন আসামির বিরুদ্ধে বিচারকাজ শুরু হয়েছিল ২০১০ সালে। কিন্তু মাঝপথে বিস্ফোরক মামলার কার্যক্রম এক প্রকার স্থগিত রেখে শুধু হত্যা মামলার সাক্ষ্য উপস্থাপন করে রাষ্ট্রপক্ষ।
ক্ষমতার পালাবদলের অন্তর্বর্তীকালীন সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পর বিডিআর বিদ্রোহের ঘটনার তদন্ত পুনরায় শুরুর দাবি ওঠে। গত ১৯ ডিসেম্বর অভিযোগ নিয়ে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে যান শহীদ পরিবারের সদস্যরা।
পনের বছর আগে এই হত্যাকাণ্ড পুনঃতদন্তের জন্য গেল বছরের ২৪ ডিসেম্বর আ ল ম ফজলুর রহমানকে প্রধান করে কমিশন গঠন করে ৯০ দিনের সময় বেঁধে দেয় সরকার।
গত ২১ জানুয়ারি বিস্ফোরক আইনের মামলায় সাড়ে ১৫ বছর ধরে কারাগারে আটক ১৭৮ জন বিডিআর জওয়ানের জামিন মঞ্জুর করে আদালত। এর দুইদিন পর জামিনে মুক্ত হন তারা।
পুরোনো খবর
শহীদ মিনারে চাকরিচ্যুত বিডিআর সদস্যরা, দাবি পূরণে ২৪ ঘণ্টা
পিলখানা হত্যাকাণ্ড: ১৭৮ বিডিআর জওয়ানের মুক্তিতে বাধা নেই
বিডিআরে বিদ্রোহ হয়নি, 'ওটা সেনা হত্যার ষড়যন্ত্র': তদন্ত কমিশনের প্রধান
বিডিআর বিদ্রোহ: বিস্ফোরক আইনের মামলা পরিচালনায় ২০ বিশেষ পিপি