জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসে ১২ মার্চ তাদের যোগ দেওয়ার ব্যবস্থা করতে নির্দেশ দিয়েছে মন্ত্রণালয়।
Published : 04 Mar 2025, 01:07 AM
আপিল বিভাগের রায়ে নিয়োগের পথ খুলে যাওয়া ঢাকা ও চট্টগ্রাম বিভাগের সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক পদে সুপারিশ পাওয়া প্রার্থীরা নিয়োগপত্র পাবেন মঙ্গলবার।
হাই কোর্টের রায়ে নিয়োগ বাতিলের পর টানা আন্দোলনে থাকা ৬ হাজার ৫৩১ জনকে নিয়োগপত্র দেওয়া, যোগদান ও কর্মস্থল নির্ধারণের বিষয়ে প্রশাসনিক অনুমোদন দিয়েছে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়।
সোমবার বিকালের পর এ বিষয়ক আদেশে মন্ত্রণালয় প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরকে মঙ্গলবার নিয়োগপত্র জারি এবং ১২ মার্চ জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসে তাদের যোগ দেওয়ার ব্যবস্থা করতে নির্দেশ দিয়েছে মন্ত্রণালয়।
এর আগে এদিন সকালে আপিল বিভাগ তৃতীয় দফায় প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগের ৬ হাজার ৫৩১ জনের প্রকাশিত ফল বাতিল করা হাই কোর্টের রায় স্থগিত করে। সেই সঙ্গে প্রার্থীদের এক মাসের মধ্যে যোগদান করাতে বলা হয়।
হাই কোর্টের রায়ে বিরুদ্ধে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের করা লিভ টু আপিল (আপিলের অনুমতি চেয়ে আবেদন) অনুমোদন করে আপিল বিভাগ। এতে ৭ ফেব্রুয়ারি থেকে রাজধানীতে আন্দোলনে থাকা নিয়োগ প্রার্থীদের নিয়োগের পথ খুলে যায়।
পরে রাতে তাদের যোগ দেওয়ার বিষয়ে অনুমোদন দিয়ে অধিদপ্তরকে নির্দেশনা দেওয়া হয়।
মন্ত্রণালয়ের উপপ্রধান তথ্য কর্মকর্তা মো. জাহাঙ্গীর আলম খান বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে এ বিষয়ে মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনার দেওয়ার কথা জানান।
মন্ত্রণালয়ের আদেশে বলা হয়েছে, স্বাস্থ্য পরীক্ষা শেষে যেসব প্রার্থী ডকুমেন্ট জমা দিয়েছেন তাদের জন্য মঙ্গলবার নিয়োগপত্র জারি হবে। প্রার্থীদের আগামী ১২ মার্চের মধ্যে জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসে যোগদান করতে হবে।
পুলিশ ভেরিফিকেশনের জন্য প্রার্থীদের পূরণ করা ফরম ১৩ মার্চের মধ্যে জেলা পুলিশ সুপার (এসবি) বা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠাতে হবে। ওইদিনই তাদের কর্মস্থল নির্ধারণ করে দেওয়া হবে।
তবে নির্বাচিত কোনো প্রার্থীর নিয়োগপত্র জারি না হলে বা বিদ্যালয়ে যোগ না দিলে এর কারণ ও মতামতসহ তালিকা ২০ মার্চের মধ্যে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরে পাঠাতে হবে।
আপিল বিভাগের রায়ের পর উচ্ছ্বসিত প্রার্থীরা আন্দোলন প্রত্যাহার করে যোগদান করতে নিজ জেলায় ফিরে যাওয়ার ঘোষণা দেন; যারা একদিন আগেই আত্মাহুতির ঘোষণা দিয়েছিলেন।
এসব প্রার্থীর নিয়োগের চূড়ান্ত ফলাফল ঘোষণা করা হয়েছিল গত ৩১ অক্টোবর। তিন পার্বত্য জেলা ছাড়া ঢাকা ও চট্টগ্রাম বিভাগের সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক পদে নিয়োগের জন্য ৬ হাজার ৫৩১ জন প্রার্থীকে নির্বাচিত করে তৃতীয় ধাপের চূড়ান্ত ফল প্রকাশ করা হয়। ২০২৩ সালের ১৪ জুন এ নিয়োগে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়েছিল।
গত ৬ ফেব্রুয়ারি ঢাকা ও চট্টগ্রাম বিভাগে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষক পদে কোটায় নির্বাচিত হওয়া ৬ হাজার ৫৩১ জনের ফল বাতিল করে হাই কোর্ট। আদালত মেধার ভিত্তিতে নতুন করে ফল প্রকাশের আদেশও দেয়। সেদিন রাত থেকেই আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন নিয়োগ বাতিল হওয়া প্রার্থীরা।
৩০ চাকরি প্রার্থীর করা এক রিট আবেদনের প্রাথমিক শুনানি শেষে গত ১৯ নভেম্বর হাই কোর্ট বেঞ্চ এ নিয়োগ প্রক্রিয়া ছয় মাসের জন্য স্থগিত করে রুলসহ আদেশ দেয়। তাতে ৬ হাজার ৫৩১ জন উত্তীর্ণ প্রার্থীর নিয়োগ আটকে যায়।
এরপর গত ৬ ফেব্রুয়ারি সেই রুলের ওপর রায় দেয় হাই কোর্ট, যাতে ওই প্রার্থীদের নিয়োগ কার্যক্রম বাতিলের সিদ্ধান্ত দেওয়া হয়।
নিয়োগ বাতিলের রায় ঘোষণার পরদিন গত ৭ ফেব্রুয়ারি দুপুরে প্রার্থীরা নিয়োগ নিশ্চিতের দাবিতে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ের দিকে পদযাত্রা করলে পুলিশ লাঠিপেটা করে এবং জলকামান প্রয়োগ করে তাদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়।
পরে তারা একাধিকবার শাহবাগ মোড় অবরোধ করলে একইভাবে তাদের সড়িয়ে দেওয়া হয়। তারা নিয়োগ নিশ্চিতের দাবিতে শাহবাগের জাতীয় জাদুঘরের সামনে লাগাতার অবস্থান কর্মসূচি পালন করছিলেন।
শিক্ষক নিয়োগ: আন্দোলন প্রত্যাহার, যোগদান করতে ফিরে যাচ্ছেন প্রার্থীরা
শিক্ষক নিয়োগ: বাদ পড়াদের বিষয়ে উপদেষ্টার 'সহানুভূতি'
শিক্ষক পদে নিয়োগ বাতিল হওয়া প্রার্থীদের আন্দোলন দ্বাদশ দিনে
প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগ বাতিলের রায় স্থগিতে আবেদন সরকারের
প্রাথমিকের সহকারী শিক্ষক: তৃতীয় ধাপের নিয়োগ বাতিল
শিক্ষক পদে নিয়োগ বাতিল: ফের শাহবাগে আন্দোলনকারীরা, মহাসমাবেশের ডাক
শিক্ষক পদে নিয়োগ বাতিল হওয়া প্রার্থীরা মহাসমাবেশে