নৌপথের নিরাপত্তায় নদীতে ‘বাল্কহেড’ ধরনের নৌযান চলাচল বন্ধ রাখতে বলা হয়েছে।
Published : 25 Mar 2025, 12:03 PM
ঈদের আগে ও পরে সুনির্দিষ্ট তথ্য ছাড়া চলন্ত যানবাহন না থামাতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে নির্দেশ দিয়েছি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।
সেইসঙ্গে নৌপথের নিরাপত্তায় নদীতে ‘বাল্কহেড’ ধরনের নৌযান চলাচল বন্ধ রাখতে বলা হয়েছে।
ঈদুল ফিতর সামনে রেখে দেশের সার্বিক আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে গত রোববার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এসব নির্দেশনা জারি করেছে।
নির্দেশনায় বলা হয়েছে, যানজট নিরসনের লক্ষ্যে ঈদের আগে সাত দিন এবং পরের সাত দিন সুনির্দিষ্ট তথ্য ছাড়া সড়কে যানবাহন থামাতে পারবে না আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারি বাহিনী।
নদীতে চলাচলের ক্ষেত্রে ঈদের আগে পাঁচ দিন এবং পরে পাঁচ দিন বাল্কহেড চলাচল বন্ধ রাখতে হবে।
অন্যান্য নির্দেশনায় বলা হয়েছে–
>> চুরি-ডাকাতি, ছিনতাই, চাঁদাবাজি ও সন্ত্রাসি কর্মকাণ্ড রোধে ইউনিফর্মধারী পুলিশের পাশাপাশি গোয়েন্দা সংস্থার সদস্য মোতায়েন করা হবে। বিশেষ বিশেষ রাস্তায় ও মোড়ে চেকপোস্ট স্থাপন করা টাকা স্থানান্তরে মানি এস্কর্ট দেওয়া হবে। জাল টাকার বিস্তার রোধ ও সনাক্তকরণের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে হবে।
>> রাজধানীর কূটনৈতিক এলাকা, গুরুত্বপূর্ণ স্থানসহ দেশের অন্যান্য বড় শহর ও বন্দরে সেনাবাহিনী, বিজিবি, পুলিশ ও র্যাবের টহল বৃদ্ধি করতে হবে।
>> গার্মেন্টস ও অন্যান্য শিল্পের মালিক পক্ষ, অর্থাৎ বিজিএমইএ, বিকেএমইএ এবং শিল্প পুলিশ একত্রে বসে ঈদের আগে শ্রমিকদের বেতন-ভাতা ও বোনাস পরিশোধের বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবে।
>> ঈদ উপলক্ষে নির্বিঘ্নে কেনা-কাটা নিশ্চিত করতে পোশাকধারী পুলিশের পাশাপাশি নারী পুলিশ ও সাদা পোশাকে পুলিশ সদস্য মোতায়েন করা হবে। মার্কেটগুলোতে বিশেষ রাত্রিকালীন নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে হবে। সকল মার্কেট সিসি ক্যামেরার আওতায় আনার ব্যবস্থা করতে হবে।
>> ঈদ উপলক্ষে ঘরমুখো মানুষের যাতায়াত নিরাপদ করতে বাস, ট্রেন ও লঞ্চে অতিরিক্ত ভাড়া আদায় যাতে না হয়, তা নিশ্চিত করতে হবে। লঞ্চ- ফেরি ঘাটে অনিয়ম ও অবৈধ সিরিয়াল দেওয়ার মাধ্যমে অতিরিক্ত টাকা আদায় যাতে না হয়। অতিরিক্ত যাত্রী পরিবহন বন্ধ করা এবং পরিবহনে চাঁদাবাজি নিয়ন্ত্রণে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে প্রয়োজনীয় কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে।
সারাদেশে যানজট নিরসনের লক্ষ্যে করণীয় বিষয়ে বলা হয়েছে–
>> যমুনা সেতু, পদ্মা সেতু এবং ফ্লাইওভারসহ টোলপ্লাজাগুলোতে যানজট নিরসনে ইলেকট্রনিক টোল কালেকশন- ইটিসি চালুর কার্যকর ব্যবস্থা নিতে হবে।
>> সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের চিহ্নিত ১৫৫ স্পটে আইপি - সিসি ক্যামেরা স্থাপন করে ঈদুল ফিতরের আগে ও পরে মনিটরিং জোরদার করতে হবে। প্রয়োজনে বেশি গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় ড্রোনের মাধ্যমে মনিটরিং করতে হবে।
>> অত্যাবশ্যকীয় পণ্য পরিবহনকারী বা যাত্রীবাহী যানবাহন ছাড়া স্থলবন্দর ও নৌবন্দরসহ যে কোনো জায়গা থেকে ছেড়ে আসা নির্মাণ সামগ্রী বহনকারী ও লম্বা যানবাহন ঈদের আগের তিন দিন এবং পরের তিন দিন যান মহাসড়কে চলাচল করতে না পারে, বা নৌ-রুটে ফেরি পারাপার করতে না পারে, সে বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।
>> বিভিন্ন সড়ক, মহাসড়ক ও নৌ-পথে আকস্মিক দুর্ঘটনায় উদ্ধারকাজ পরিচালনায় ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের টিম, রেসকিউ বোট, ডুবুরি, অগ্নিনির্বাপন সরঞ্জামসহ অ্যাম্বুলেন্স প্রস্তুত রাখতে হবে, প্রয়োজনে কোস্টগার্ডের সহযোগিতা নিতে হবে।
>> দুর্ঘটনা কবলিত অথবা রাস্তা- ব্রিজে কোনো গাড়ি নষ্ট হলে দ্রুত তা অপসারণ করে পার্শ্ববর্তী খালি জায়গায় স্থানান্তর করতে হবে । যমুনা ও পদ্মা সেতুসহ যানজটপ্রবণ এলাকায় প্রয়োজনীয় সংখ্যক রেকারের ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে হবে।
>> ঈদের সময় সার্বিক আইনশৃঙ্খলা রক্ষার পাশাপাশি সড়কের শৃঙ্খলা রক্ষায় পুলিশ অধিদপ্তর এবং অন্যান্য আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী কন্ট্রোলরুম স্থাপন করবে। সকল কন্ট্রোল রুম স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কেন্দ্রীয় জয়েন্ট অপারেশন সেন্টারের (০১৩২০০০১২২৩) সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষা করার পাশাপাশি জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯ এর সঙ্গে যোগাযোগ রাখবে।