বন্যা পূর্বাভাসে সহযোগিতা দিতে ‘প্রস্তুত’ নেপাল

“বাংলাদেশ ও নেপালের কিছু নদীর উৎসমুখ একই। ফলে বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণের ক্ষেত্রে দুই দেশ পরস্পরকে সহযোগিতা করতে পারে,” বলেন নেপালের রাষ্ট্রদূত ঘনশ্যাম ভান্ডারি।

নেপালের রাষ্ট্রদূত ঘনশ্যাম ভান্ডারি রোববার সচিবালয়ে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা অবসরপ্রাপ্ত লেফটেন্যান্ট জেনারেল মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরীর সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন। ছবি: পিআইডি।

উত্তর-পূর্বাঞ্চলে সাম্প্রতিক ভয়াবহ বন্যায় ব্যাপক বিপর্যয়ের পর পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ ব্যবস্থা নিয়ে যে প্রশ্ন উঠেছে, তার মধ্যেই এই ক্ষেত্রে বাংলাদেশকে সহযোগিতা করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে নেপাল।

একই সঙ্গে বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত জনসাধারণের প্রতি সহমর্মিতা জ্ঞাপন করেছেন ঢাকায় নেপালের রাষ্ট্রদূত ঘনশ্যাম ভান্ডারি।

রোববার বিকালে সচিবালয়ে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা অবসরপ্রাপ্ত লেফটেন্যান্ট জেনারেল মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরীর সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাতের সময় দ্বিপক্ষীয় বিভিন্ন বিষয়ে কথা বলেন তিনি।

সন্ধ্যায় মন্ত্রণালয়ের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য তুলে ধরা হয়েছে।

এতে বলা হয়েছে, সাক্ষাতের সময় দুই দেশের মধ্যে পারস্পরিক সম্পর্কোন্নয়ন, বাণিজ্য বৃদ্ধি, নেপালি শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা, ভিসা প্রক্রিয়া সহজ করা, বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ বিষয়ে তথ্য আদান-প্রদানসহ পারস্পরিক স্বার্থসংশ্লিষ্ট বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনা হয়।

রাষ্ট্রদূত নেপাল সরকারের পক্ষ থেকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মাধ্যমে প্রতিষ্ঠিত বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের সঙ্গে একাত্মতা ও সংহতি প্রকাশ করেন এবং সব ধরনের সহযোগিতার আশ্বাস দেন বলে বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে।

উপদেষ্টা জাহাঙ্গীর আলম বলেন, নেপাল বাংলাদেশের অন্যতম নিকটবর্তী দেশ। স্বাধীন দেশ হিসেবে বাংলাদেশকে স্বীকৃতি দেওয়া প্রথম কয়েকটি দেশের মধ্যেও অন্যতম। দুই জনগণের মধ্যে ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ থাকা সত্ত্বেও বাণিজ্যের পরিমাণ আশানুরূপ নয়।

উপদেষ্টা এ সময় দুই দেশের মধ্যে পারস্পরিক ব্যবসা-বাণিজ্য বৃদ্ধির ওপর গুরুত্বারোপ করেন।

বাংলাদেশে প্রায় তিন হাজার নেপালি শিক্ষার্থী মেডিকেলসহ বিভিন্ন বিষয়ে পড়াশোনা করছে। শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তার বিষয়ে উপদেষ্টার সহযোগিতা ও ভিসা প্রক্রিয়া সহজ করার অনুরোধ করেন রাষ্ট্রদূত।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, এসব বিষয়ে নেপালকে সর্বাত্মক সহযোগিতা দেওয়ার আশ্বাস দেন উপদেষ্টা।

রাষ্ট্রদূত বাংলাদেশের সাম্প্রতিক বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত জনসাধারণের প্রতি সহমর্মিতা জ্ঞাপন করে বৈঠকে বলেন, বাংলাদেশ ও নেপালের কিছু নদীর উৎসমুখ একই। ফলে বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণের ক্ষেত্রে দুই দেশ পরস্পরকে সহযোগিতা করতে পারে। সে অনুযায়ী নেপাল বাংলাদেশকে বন্যা পূর্বাভাসের প্রয়োজনীয় তথ্য-উপাত্ত দিয়ে সহযোগিতা করতে প্রস্তুত।

সাক্ষাতে দুই দেশের মধ্যে অনিষ্পন্ন বিষয়গুলো সমাধানের লক্ষ্যে পারস্পরিক তথ্য বিনিময় ও সহযোগিতা জোরদারের বিষয়েও আলোচনা হয়।

বৈঠকে ঢাকাস্থ নেপাল দূতাবাসের দ্বিতীয় সচিবসহ স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা উপস্থিত ছিলেন।