“এটা বীরত্বের একটি স্মারক; হয়তো আপনি থাকবেন না, আপনার কার্ডটা থেকে যাবে," বলেন সিইসি।
Published : 23 May 2024, 04:16 PM
জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তানদের হাতে ‘বীর মুক্তিযোদ্ধা’ খচিত স্মার্ট জাতীয় পরিচয়পত্র তুলে দিতে শুরু করেছে কাজী হাবিবুল আউয়াল নেতৃত্বাধীন নির্বাচন কমিশন।
বৃহস্পতিবার নির্বাচন ভবনে এক অনুষ্ঠানের মাধ্যমে ১০৪ জন বীরমুক্তিযোদ্ধার হাতে এই বিশেষ স্মার্ট কার্ড তুলে দেওয়া হয়।
এই স্মার্ট কার্ডের চিপের নিচ দিয়ে লেখা আছে ‘বীর মুক্তিযোদ্ধা’। স্মার্ট কার্ডে তিন স্তরের ২৫টি নিরাপত্তা বৈশিষ্ট্য রয়েছে।
অনুষ্ঠানে প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী হাবিবুল আউয়াল বলেন, “সংগ্রামের মাধ্যমেই একটি দেশ স্বাধীনতা অর্জন করে৷ আমাদের মুক্তিযুদ্ধে যে পরিমাণ ত্যাগ বাঙালি জাতিকে করতে হয়েছে- তা বিশ্বের ইতিহাসে স্মরণীয়।”
দেশবাসীকে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা চেতনা ধারণ করার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, “এ চেতনার মূল্যবোধে ত্রিশ লক্ষ বাঙালি শহীদ হয়েছে। …মুক্তিযুদ্ধের ঝান্ডা প্রজন্ম থেকে প্রজন্ম সঞ্চারিত করতে হয়। "
এই বিশেষ স্মার্ট কার্ড যত্ন করে রাখার পরামর্শ দিয়ে বীর মুক্তিযোদ্ধাদের উদ্দেশে সিইসি বলেন, “এই কার্ড হারাবেন না। এটা বীরত্বের একটি স্মারক। হয়তো আপনি থাকবেন না, আপনার কার্ডটা থেকে যাবে।"
অনুষ্ঠানে বীর মুক্তিযোদ্ধা সায়মা খান বলেন, "কৃতজ্ঞতা জানাই, প্রধান নির্বাচন কমিশনারসহ নির্বাচন কমিশনকে। পরিবারের সবাই আমরা জীবন বাজি রেখে দেশ মুক্ত করতে গিয়েছিলাম। আমি গর্বিত মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মান জীবিত অবস্থায় দেখে গেলাম।"
মানবাধিকার কমিশনের সাবেক চেয়ারম্যান ও বীর মুক্তিযোদ্ধা কাজী রিয়াজুল হক বলেন, "বীর মুক্তিযোদ্ধাদের ধরে রাখার জন্য বর্তমান সরকার অনেক কাজ করেছেন। এই সরকারের অধীনেই নির্বাচন কমিশন মুক্তিযোদ্ধাদের এই কার্ড দিয়েছে। তারা শুধু সম্মানটুকু পেতে চায়। এইটাই তাদের দাবি, এর বেশি না। "
সাবেক নির্বাচন কমিশনার ও অবসরপ্রাপ্ত ব্রিগেডিয়ার জেনারেল জাবেদ আলী বলেন, “তারা মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মানিত করেছেন; মুক্তিযোদ্ধাকে সম্মানিত করার মাধ্যমে কমিশনও সম্মানিত হয়েছেন।"
নির্বাচন কমিশনার আহসান হাবিব খান বলেন, “আপনারা জাতির সূর্য সন্তান। আপনারা বিশ্বের মানচিত্রে বাংলাদেশ নামক একটি দেশের অবস্থান করে দিয়েছেন।"
নির্বাচন কমিশনার আনিছুর রহমান বলেন, “বিলম্ব হলেও আমি আনন্দিত, পরিতৃপ্ত। আপনাদের একটাই লক্ষ্য- দেশের স্বাধীনতা। আমি মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের সন্তান। আপনারা শতায়ু হন।"
এর আগে ২০২২ সালে তৎকালীন নূরুল হুদা কমিশন বিদায়ের আগ মুহূর্তে বীর মুক্তিযোদ্ধা খচিত স্মার্ট কার্ড বিতরণ শুরু করে। তবে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে সমন্বয়হীনতার কারণে সেই কার্যক্রম শুরুতেই হোঁচট খায়।
এরপর কাজী হাবিবুল আউয়াল কমিশন দায়িত্বে আসার দুই বছরের মাথায় গত ৭ মে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিনের হাতে ‘বীর মুক্তিযোদ্ধা' খচিত জাতীয় পরিচয়পত্র তুলে দেওয়ার মাধ্যমে বিশেষ এ স্মার্ট কার্ড বিতরণ কার্যক্রম আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু করে।
নির্বাচন কমিশনার মো. আলমগীর বলেন, “এই বিষয় গত কমিশন থেকে শুরু হয়েছে। আপনাদের যে সম্মান দিতে পেরেছি তা আপনাদের সম্মানের তুলনায় অনেক কম।"
মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব ইশরাত চৌধুরী বলেন, "জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তানদের জন্য এই আয়োজন করা হয়েছে।”
জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন অনুবিভাগের মহাপরিচালক মাহবুবুর রহমান বলেন, "বীরমুক্তিযোদ্ধা খচিত স্মার্ট কার্ড দেওয়ায় নতুন একটি মাত্রা যুক্ত হলো। "
আরও পড়ুন