কাজী হাবিবুল আউয়াল নেতৃত্বাধীন নতুন নির্বাচন কমিশন শপথ নিয়েছে।
Published : 27 Feb 2022, 04:09 PM
রোববার বিকালে সুপ্রিম কোর্টের জাজেজ লাউঞ্জে তাদের শপথ অনুষ্ঠান হয়; শপথ পড়ান প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী।
সবার আগে শপথ পড়েন প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী হাবিবুল আউয়াল।
তারপর একে একে শপথ পড়ানো হয় রাশেদা সুলতানা এমিলি, আহসান হাবীব খান, মো. আলমগীর ও মো.আনিছুর রহমানকে।
রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ শনিবারই সাংবিধানিক সংস্থাটিতে তাদের নিয়োগ দেন।
শপথ পাঠের আনুষ্ঠানিকতা শেষে প্রধান বিচারপতির সঙ্গে ছবি তোলেন সিইসিসহ নির্বাচন কমিশনাররা।
তারা সোমবার সকালে কাজে যোগ দেবেন বলে ইসি সচিবালয়ের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।
সোমবার বেলা ১১টায় ইসি সচিবালয়ের কর্মকর্তাদের সঙ্গে মতবিনিময় করবেন সিইসি ও নির্বাচন কমিশনাররা। সাড়ে ১২টার দিকে তারা সংবাদ মাধ্যমের সামনে আসবেন।
নির্বাচন কমিশন আইন হওয়ার পর সেই আইনের অধীনে গঠিত এটাই প্রথম ইসি। আর তাদের অধীনেই দ্বাদশ সংসদ নির্বাচন হবে।
রাষ্ট্রপতি গঠিত সার্চ কমিটির প্রস্তাবিত ১০ জনের মধ্য থেকে পাঁচজনকে নিয়ে নতুন ইসি গঠন হল। কারা বাদ পড়লেন, তা জানা যায়নি।
দেশের ত্রয়োদশ সিইসি হিসেবে দায়িত্ব নেওয়া কাজী হাবিবুল আউয়াল দীর্ঘদিন আইন সচিবের দায়িত্বে ছিলেন। ২০১৭ সালে অবসর নেওয়ার সময় তিনি ছিলেন প্রতিরক্ষা সচিবের দায়িত্বে।
বিচারপতি ও আমলাদের বাইরে বিচার প্রশাসনের সাবেক কর্মকর্তা হিসেবে তিনিই প্রথম সিইসির দায়িত্ব নিলেন।
মুন্সেফ হিসেবে ১৯৮১ সালে সরকারি চাকরিতে যোগ দিয়েছিলেন তিনি, ১৯৯৭ সালে জজ হন।
২০০০ সালের ডিসেম্বরে আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম-সচিব হন হাবিবুল আউয়াল। এরপর টানা এক দশক এই মন্ত্রণালয়ে ছিলেন তিনি। এরমধ্যে পদোন্নতি পেয়ে অতিরিক্ত সচিব ও সচিব হন।
পাঁচ বছরের জন্য সিইসি পদে নিয়োগ পাওয়ার পর শনিবার প্রথম প্রতিক্রিয়ায় হাবিবুল আউয়াল বলেছিলেন, সবার প্রতি সমান দৃষ্টি থাকবে তার, সবার সঙ্গে সমআচরণও নিশ্চিত করার চেষ্টা করবেন।
গত দুই ইসিকে নিয়ে সরকারবিরোধীদের নানা অভিযোগের প্রেক্ষাপটে দায়িত্ব পালনে সবার সহযোগিতা চেয়েছেন হাবিবুল আউয়াল।
তিনি একইসঙ্গে বলেন, সব দোষ ইসির উপর চাপালে, তা তিনি মানবেন না।
ইসিতে দায়িত্ব পালনে সহকর্মী হিসেবে হাবিবুল আউয়াল পাচ্ছেন একজন সাবেক জজ, একজন সাবেক সেনা কর্মকর্তা এবং দুজন সাবেক আমলা।
এর মধ্যে রাশেদা সুলতানা এমিলি জেলা ও দায়রা জজ হিসেবে দায়িত্ব পালনের পর ২০২০ সালে অবসরে যান।
আরেক নির্বাচন কমিশনার আহসান হাবীব খান সেনাবাহিনীর ব্রিগেডিয়ার জেনারেল ছিলেন। তিনি ২০১৩ সালে অবসর নেন। বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনের (বিটিআরসি) ভাইস চেয়ারম্যানের পদেও তিনি দায়িত্ব পালন করেন।
নতুন নির্বাচন কমিশনারদের মধ্যে মো. আলমগীরের নির্বাচন কমিশনে দায়িত্ব পালনের অভিজ্ঞতা রয়েছে। জ্যেষ্ঠ সচিব হয়ে অবসর নেওয়া এই কর্মকর্তা এক বছর আগেও ইসি সচিবের দায়িত্বে ছিলেন।
কে এম নূরুল হুদা নেতৃত্বাধীন ইসিতে সিইসি ও সচিবের কর্তৃত্ব নিয়ে বিরোধের মধ্যে আলোচিত ছিলেন আলমগীর। মাহবুব তালুকদারসহ চার নির্বাচন কমিশনার একাট্টা হয়ে তার বিরুদ্ধে নালিশও করেছিলেন।
২০১৯ সালে নির্বাচন কমিশনে আলমগীর সচিব পদে যোগ দেওয়ার পর তাকে নিয়ে বিএনপিও আপত্তি তুলেছিল।
আরেক নির্বাচন কমিশনার আনিছুর রহমান জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয় সচিবের দায়িত্ব পালন করে ২০২০ সালে অবসরে যান। তিনি ১৯৮৫ ব্যাচের বিসিএস (প্রশাসন) কর্মকর্তা।