দাফনের সময় নড়ে ওঠার যে শিশুটিকে মৃত ঘোষণা করা হয়েছিল, সেই নিজেদের ব্যর্থতা স্বীকার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এ কে এম নাসির উদ্দিন বলেছেন, তবে তা ইচ্ছাকৃত নয়।
Published : 20 Oct 2020, 06:36 PM
মঙ্গলবার দুপুরে হাসপাতালে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, “অপরিণত হওয়ায় সকল ধরনের পরীক্ষা-নিরীক্ষার পরও শুরুতে বাচ্চাটার কোনো ‘সাইন অফ লাইফ’ পাওয়া যাচ্ছিল না। সে কারণে চিকিৎসক ধরে নিয়েছিলেন তার প্রাণ নেই। এরপর তাকে মৃত ঘোষণা করা হয়েছিল।
“এরপর আমরা আলোচনার ভিত্তিতে চার সদস্যবিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করি। তদন্ত কমিটির বক্তব্য অনুসারে, এক্ষেত্রে হাসপাতালের ব্যর্থতা রয়েছে। তবে চিকিৎসার ক্ষেত্রে কোনো ত্রুটি ছিল না এবং এক্ষেত্রে ব্যাপারটি হয়েছে সম্পূর্ণ অনিচ্ছাকৃতভাবে।”
ঢাকা মেডিকেলে গত শুক্রবার ভোরে অস্ত্রোপচার ছাড়াই ওই মেয়ে শিশুটির জন্ম হয়। জন্মের পরপরই শিশুটিকে মৃত ঘোষণা করে তার বাবা ইয়াসিনের হাতে তুলে দেন চিকিৎসক। দাফনের জন্য মেয়ের মরদেহ বসিলা কবরস্থানে নিয়ে যান ইয়াসিন।
সেখানে দাফনের সময়ে নড়ে উঠলে শিশুটিকে ফের ঢাকা মেডিকেলে যাওয়া হয়। এখন সেখানেই নবজাতক (নিওনেটাল) বিভাগে শিশুটির চিকিৎসা চলছে। পরিবার তার নাম রেখেছে ‘মরিয়ম’।
কবরস্থান থেকে শিশুটিকে হাসপাতালে ফিরিয়ে আনার পর নবজাতক বিভাগের রক্ষীর সঙ্গে তর্ক হওয়া এবং রক্ষী অন্যত্র যাওয়ার কথা বলেছেন বলে জানিয়েছেন শিশুটির বাবা ইয়াসিন মোল্লা।
এই অভিযোগ প্রসঙ্গে ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এ কে এম নাসির উদ্দিন বলেন, “ঘটনাটি সম্পূর্ণ হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের অজান্তে হয়েছে। এর সাথে জড়িতদের বিরুদ্ধে খুব শিগগিরই ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
“বিষয়টা খুব গুরুত্বের সঙ্গে নেওয়া হয়েছে। আন্তরিকভাবে দুঃখপ্রকাশ করছি পরিবারের কাছে এবং পরিবারকে আশ্বস্ত করেছি যে, হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ সব ধরনের সহযোগিতা দেবে।”
শিশুটির সর্বশেষ শারীরিক অবস্থার কথা জানিয়ে নবজাতক বিভাগের প্রধান মনীষা ব্যানার্জী বলেন, “শিশুটিকে এখন অক্সিজেন সাপোর্টে রাখা হয়েছে। স্যালাইন চলছে। যদি এই অবস্থা স্থায়ী হয়, তাহলে আমাদের পরিকল্পনা আছে তাকে পয়েন্ট ফাইভ এমএল করে খাবার খাওয়ানোর চেষ্টা করা হবে।”
তিনি আরও বলেন, “এখনও বাচ্চাটিকে সংকটমুক্ত বলা যাবে না। বরং বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে ২৬ সপ্তাহের প্রিম্যাচিউর একটা বাচ্চা এ পরিস্থিতিতে বেঁচে ফিরলে অবশ্যই সেটি হবে একটি মিরাকল।”