জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে চতুর্থ টি-টোয়েন্টিতে একশ ছাড়ানো উদ্বোধনী জুটির পরও দেড়শ করতে পারেনি বাংলাদেশ।
Published : 10 May 2024, 11:22 PM
শুরু থেকেই স্ট্রোকের ফুলঝুরি ছোটালেন তানজিদ হাসান। চোট কাটিয়ে ফেরা সৌম্য সরকার কিছুটা সময় নেওয়ার পর আভাস দিলেন ছন্দে ফেরার। দুজনের উদ্বোধনী জুটিতে দ্রুতই একশ ছুঁয়ে ফেলল বাংলাদেশ। দলের দৃষ্টি তখন ১৭০-১৮০ রানে, এমনকি ২০০ রানও ছিল না দৃষ্টিসীমার বাইরে।
কিন্তু কিসের কী! প্রথম উইকেট পড়ার পর হুড়মুড়িয়ে ভেঙে পড়ল বাংলাদেশের ব্যাটিং অর্ডার। স্রেফ ৪২ রানের মধ্যে ১০ উইকেট হারিয়ে দেড়শর আগেই গুটিয়ে গেল নাজমুল হোসেন শান্তর দল।
বোলারদের দারুণ পারফরম্যান্স আর জিম্বাবুয়ের ব্যর্থতা মিলিয়ে পরে ৫ রানের জয়ের স্বস্তি মিলেছে বটে। তবে ম্যাচ শেষে আরও বেশি অস্বস্তি জাগাচ্ছে ওই ব্যাটিং ধস।
চট্টগ্রামে প্রথম তিন ম্যাচ জিতে সিরিজ আগেই নিজেদের করে নিয়েছিল বাংলাদেশ। কিন্তু ব্যাটিং পারফরম্যান্স খুব জুতসই হয়নি একদিনও। মিরপুরে শুক্রবার দারুণ শুরুর পরও এমন ব্যাটিং ধস জন্ম দিচ্ছে অনেক প্রশ্নের। কদিন পরই বিশ্বকাপ। ব্যাটিংয়ের এমন বেহাল দশায় শঙ্কার জায়গা তো থাকেই।
টস হেরে ব্যাটিংয়ে নামার পর উদ্বোধনী জুটিতে ১০১ রান যোগ করেন তানজিদ ও সৌম্য। সিরিজে দ্বিতীয় ফিফটি করে দ্বাদশ ওভারে ড্রেসিং রুমে ফেরেন তানজিদ। একই ওভারে সৌম্যকেও ফেরান লুক জঙ্গুয়ে।
এক ওভার পর সিকান্দার রাজার বলে ছক্কা মারতে গিয়ে ডিপ স্কয়ার লেগে ক্যাচ দেন তাওহিদ হৃদয়। সেখান থেকেই শুরু পিছিয়ে পড়ার। ২২ রানের মধ্যে শেষের ৮ উইকেট হারিয়ে ১৪৩ রানে গুটিয়ে যায় স্বাগতিকরা।
প্রথম তিন ব্যাটসম্যানের পর বাকিদের কেউই দুই অঙ্ক ছুঁতে পারেননি। উইকেটও পড়েছে জোড়ায় জোড়ায়। ১২, ১৪ ও ১৭তম ওভারে দুজন করে ব্যাটসম্যান ধরেন ড্রেসিং রুমের পথ। ব্রায়ান বেনেটের বলে বোল্ড হন সাকিব আল হাসান ও শান্ত। রিচার্ড এনগারাভার বল ছক্কায় ওড়াতে গিয়ে সীমানার অনেক ভেতরে ধরা পড়েন জাকের আলি।
৩৪ বলে ৪১ রান করার পর ড্রেসিং রুমে ফিরে দলের এই ধস দেখেছেন সৌম্য। ম্যাচ শেষে সংবাদ সম্মেলনে সেই ধসের কারণ তুলে ধরার চেষ্টা করলেন তিনি।
“প্রথম দিকে আমি ও তামিম (তানজিদ হাসান) যখন ব্যাটিং করছিলাম, তখন (উইকেট) ভালো ছিল। নতুন বলটা ভালো ব্যাটে আসছিল। বল পুরোনো হওয়ার পর অসম গতিতে আসছিল, উঁচুনিচু হচ্ছিল। প্রথম দিকে হয়তো সবাই ভুলটা করেছে... শুরুর দিকে আমাদের দেখে মনে হয়েছিল, উইকেটটা হয়তো ১৭০-১৮০ রানের। বল যখন পুরোনো হয়েছে, ধীর হয়ে আসছিল। এটা হয়তো সবাই গিয়ে দ্রুত আক্রমণে চলে গেছে, (শুরুর) ওই ছন্দে খেলতে গিয়ে হয়তো তারা ভুলটা করেছে।”
তবে সৌম্যও মানছেন, ক্রিজে গিয়েই আক্রমণাত্মক ব্যাটিং না করে আরেকটু সময় নিলে শেষ দিকে ভালো স্কোর পেত বাংলাদেশ।
“টি-টোয়েন্টিতে প্রতি বলেই পরিস্থিতি বদলে যেতে পারে। তামিম ও আমি যেভাবে খেলছিলাম, ৭-৮ বলের মধ্যে মনে হয় আমরা আউট হয়েছিলাম। ওই সময় গিয়ে তাওহিদ (হৃদয়) কিন্তু অমন ব্যাটিংই করে। আজকে হয়তো ওর ওই পিক-আপ শটটা ছক্কা হয়নি।”
“ওই সময়টা স্পিনাররা যখন বল করছিল, ভালো বোলিং করছিল। আমরাও হয়তো সোজা ব্যাটে খেললে আরেকটু ভালো হতো। একজন যদি একটু ১০-১৫ রানের জুটি করত, তাহলে হয়তো শেষের দিকে ভালো কিছু করতে পারত।”
মিরপুরের ঠিক ভিন্ন চিত্র দেখা গেছে চট্টগ্রামের তিন টি-টোয়েন্টিতে। প্রতি ম্যাচেই হতাশ করেন টপ-অর্ডারের ব্যাটসম্যানরা। চার নম্বরে নামা হৃদয় দায়িত্ব নিয়ে এগিয়ে নেন দলকে। তাকে সঙ্গ দেন মাহমুদউল্লাহ, জাকের আলিরা।
তাই চতুর্থ ম্যাচে ধস নামলেও মিডল-অর্ডার ব্যাটসম্যানদের কাঠগড়ায় তুলতে রাজি নন সৌম্য।
“প্রত্যেক ম্যাচে তো সবাই ভালো করবে না। গত ম্যাচগুলোতে ওরাই (মিডল-অর্ডার) তো ভালো করেছে। তো একদিন ওদের হতেই পারে। এটা নিয়ে কিছু না। ওরা পরের ম্যাচেই আবার ঘুরে দাঁড়াবে।”
জিম্বাবুয়েকে হোয়াইটওয়াশ করার অভিযানে রোববার শেষ ম্যাচ খেলবে বাংলাদেশ। খেলা শুরু সকাল ১০টায়।