করোনাভাইরাস মহামারীকালে এবারের দুর্গোৎসবও অনাড়ম্বরভাবে অনুষ্ঠিত হবে।
Published : 08 Aug 2020, 03:00 PM
এবার পূজার অনুষ্ঠানমালা শুধু ধর্মীয় রীতিনীতি অনুসরণ করে পূজা-অর্চনার মাধ্যমে মন্দির প্রাঙ্গণেই সীমাবদ্ধ থাকবে বলে সিদ্ধান্ত হয়েছে।
বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদ-কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি মিলন কান্তি দত্ত শনিবার বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে এই তথ্য জানিয়েছেন।
তিনি বলেন, আগামী ১১ অগাস্ট হিন্দু সম্প্রদায়ের অন্যতম উৎসব জন্মাষ্টমীও সীমিত পরিসরে উদযাপিত হবে।
“জন্মাষ্টমীতে কোনো প্রকার সমাবেশ, শোভাযাত্রা ও মিছিল করা হবে না। তবে স্বাস্থ্যবিধি মেনে মন্দির প্রাঙ্গণে পূজা অনুষ্ঠান ও সব আচারবিধি পালন করা যাবে।”
দুর্গাপূজার বিষয়ে মিলন দত্ত বলেন, “দুর্গাপূজায় আলোকসজ্জা, মেলা, আরতি প্রতিযোগিতা এবং সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান করা হবে না।”
তিনি বলেন, খোলা জায়গায় অস্থায়ী প্যান্ডেলে স্বাস্থ্যবিধি মেনে পূজা করার বিষয়েও সংশ্লিষ্ট আয়োজকদের অনুমতি নিতে হবে।
কোভিড-১৯ রোগ ছোঁয়াচে হওয়ায় সংক্রমণ এড়াতে সামাজিক দূরত্ব রক্ষা, ভিড় এড়ানো এবং স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার উপর সবচেয়ে গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে।
এই কারণে এবার বাংলা নববর্ষ এবং ঈদেও উৎসবের আমেজ ছিল না।
এ বছর রাজধানীর পূজা নিয়ে ঢাকা মহানগর সার্বজনীন পূজা কমিটির সাধারণ সম্পাদক কিশোর রঞ্জন মন্ডল বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “এ বছর পূজার সংখ্যা কমে যাওয়ার সম্ভাবনাই বেশি। মহামারী করোনাভাইরাসে কারণে সবার আর্থিক অবস্থাও ভালো না।
“তাছাড়া পুরান ঢাকার দিকে বেশকটি পূজা রাস্তার উপরে হত। সেগুলোর অনুমতি পাওয়ার প্রশ্ন রয়েছে। যদি অনুমতি পাওয়া যায়, তবে পূজা হবে। তবে মনে হচ্ছে, সারা দেশেই পূজার সংখ্যা বেশ কমবে।”
গত বছর সারা বাংলাদেশে ৩১ হাজার ১০০টি মণ্ডপে দুর্গাপূজা অনুষ্ঠিত হয়েছিল, যার মধ্যে ঢাকা মহানগরে এবার ২৩৭টি মণ্ডপে পূজা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
কিশোর বলেন, “এবার মহালয়া হবে ১৭ সেপ্টেম্বর। এবার আশ্বিন মাস মল মাস, মানে অশুভ মাস। এ মাসে পূজা হচ্ছে না তাই। পূজা হবে কার্তিক মাসে। মহালয়ার ৩৫ দিন পরে দেবী দুর্গা আসবেন মর্ত্যে।”
হিন্দু পঞ্জিকামতে এবার দুর্গোৎসবের আনুষ্ঠানিকতা শুরু হবে ২৩ অক্টোবর। সেদিন শুক্রবার, মহাসপ্তমী পূজার মাধ্যমে শুরু হবে দুর্গোৎসবের মূল আচার অনুষ্ঠান।
শাস্ত্রমতে, বৃহস্পতিবার বা শুক্রবারে সপ্তমী হলে দেবীর আগমন ঘটে দোলায়।
দোলায় আগমন নিয়ে শাস্ত্রে বলা হয়েছে, ‘দোলায়াং মরকং ভবেৎ’; অর্থাৎ মহামারী, ভূমিকম্প, যুদ্ধ, মন্বন্তর, খরার প্রভাবে অসংখ্য মানুষের মৃত্যু তো ঘটাবেই, আবার সেই সঙ্গে ক্ষয়ক্ষতিও হবে।
২৬ অক্টোবর মহাদশমীর মাধ্যমে শেষ হবে দুর্গোৎসবের সব আনুষ্ঠানিকতা। সেদিন সোমবার। শাস্ত্রমতে, সোমবারে গমন, আগমন হলে তা ঘটে গজে বা হাতিতে।
শাস্ত্র বলে - ‘গজে চ জলদা দেবী শস্যপূর্ণা বসুন্ধরা’ ৷ অর্থাৎ দেবী যদি গজে গমনাগমন করেন তাহলে পৄথিবীতে জলের সমতা বজায় থাকে এবং শস্য ফলন ভালো হয়, সুখ সমৄদ্ধিতে পরিপূর্ণ থাকে মর্ত্যভূমি।
সনাতন ধর্মাবলম্বীদের বিশ্বাস অনুযায়ী, হাতি হল দেবী অন্নপূর্ণার বাহন ৷ দেবী দুর্গার অন্যরূপ অন্নপূর্ণা অন্নপূর্ণার আশির্বাদে শস্য-শ্যামলা হয়ে ওঠে এই বসুন্ধরা ৷