বাংলাদেশ থেকে অর্থ পাচার করে যারা বিদেশে অবস্থান করেছেন- এমন সাত-আটজনের একটি তালিকা ইন্টারপোলকে দিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন।
Published : 10 Mar 2020, 09:40 PM
ওই ব্যক্তিদের ধরতে পুলিশের আন্তর্জাতিক সংস্থাটির সহযোগিতা চাওয়ার কথা জানালেও এখনই তাদের নাম প্রকাশ করতে চাননি দুদক চেয়ারম্যান ইকবাল মাহমুদ।
মঙ্গলবার কমিশনের প্রধান কার্যালয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি ইন্টারপোলের সহযোগিতা চাওয়ার কথা জানান।
গত কয়েক বছরে বাংলাদেশ থেকে বিপুল পরিমাণ অর্থ বিদেশে পাচার হয়েছে বলে আলোচনা রয়েছে। অর্থ পাচারের পর বিদেশে পালিয়ে যাওয়া বেশ কয়েকজনকে নিয়ে অনুসন্ধানও চালাচ্ছে দুদক।
যারা বিদেশে অর্থ পাচার করেছে তাদের বিরুদ্ধে দুদকের ব্যবস্থা সম্পর্কে জানতে চাইলে ইকবাল মাহমুদ বলেন, “ইন্টারপোলের কাছে সাত থেকে আটজনের একটি তালিকা আমরা পাঠিয়েছি।
“আমাদের কাছে ৬০ থেকে ৭০ জনের একটা তালিকা আছে। সাত-আটজনেরটা ইতোমধ্যে ইন্টাররপোলে গেছে। অন্যগুলোও যাবে।”
নাম প্রকাশে অস্বীকৃতি জানিয়ে তিনি বলেন, “তাদের নাম আমি বলতে চাচ্ছি না, নাম বলতে হয়তে তারা স্থান পরিবর্তন করতে পারে।”
পাচারকারীদের রাজনৈতিক পরিচয় জানতে চাইলে দুদক চেয়ারম্যান বলেন, “আমরা এসব তথ্য সংগ্রহ করি না। আমরা মূলত অন্যায়-অপরাধটাই দেখি। কে প্রভাবশালী, আর কে প্রভাবশালী নন, তা আমাদের দেখার কথা না।”
যারা অর্থ আত্মসাৎ করে সিঙ্গাপুরে অবস্থান করেছেন, তাদের বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়ার অংশ হিসেবে দুদকের একটি দল সেই দেশে যাওয়ার কথা ছিল।
তার অগ্রগতি জানেতে চাইলে ইকবাল মাহমুদ বলেন, সব প্রস্তুতি নেওয়া হলেও নভেল করোনাভাইরাস সংক্রমণের কারণে তাতে অগ্রগতি আসেনি।
“আমাদের তো সেফটি দেখতে হবে,” বলেন তিনি।
করোনাভাইসারের প্রভাবের মধ্যে অসাধু চক্র সংশ্লিষ্ট জিনিসপত্রের দাম বাড়িয়ে দিয়েছে- এমন অভিযোগের বিষয়ে দুদক থেকে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হবে কি না, ইকবাল মাহমুদের কাছে সাংবাদিকরা জানতে চান।
তিনি বলেন, “সরকার যথেষ্ট উদ্যোগ নিয়েছে, ইতোমধ্যে ভ্রাম্যমান আদালতের মাধ্যমে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। সরকারের এমন উদ্যোগের পর যদি দেখা যায় কোনো ব্যক্তিবর্গ বা চক্র ওষুধের দাম বা ইকুইপমেন্টের দাম বাড়িয়ে জনগণকে জিম্মি করে অবৈধ অর্থ উপার্জন করছে তখন আমরা ব্যবস্থা নেব।
“আমরা আপাতত এই বিষয়ে কোনো পদক্ষেপে যাচ্ছি না। সরকার করছে, তা আমরা দেখছি।”
“আমরা দেখব, পাপিয়া তিন কোটি টাকার বিল কোথায় থেকে দিয়েছে, কী তার আয়, তার কোনো জ্ঞাত আয় বহির্ভূত সম্পদ আছে কি না?
“অনুসন্ধান চলছে, আমরা জাম্প করবো না। আইন-কানুন দেখে সেই অনুযায়ী ব্যবস্থা নেব।”
সম্পদের বৈধ উৎস দেখাতে না পারলে পাপিয়ার বিরুদ্ধে মামলা করা হবে বলে জানান তিনি।
ফারমার্স ব্যাংক (পদ্মা ব্যাংক) কেলেঙ্কারি নিয়ে ব্যাংকটির সাবেক অডিট কমিটির চেয়ারম্যান মাহবুবুল আলম চিশতী ওরফে বাবুল চিশতী ছাড়া তদন্তে সংশ্লিষ্টতায় নতুন কারও নাম পাওয়া গেছে কি না- প্রশ্ন করা হলে দুদক চেয়ারম্যান বলেন, “আমাদের অনুসন্ধান এখনও চলছে, তাই এই মুহুর্তে সেই বিষয়ে বলতে পারছি না।
“যার সংশ্লিষ্টতা পাওয়া গেছে, তার বিরুদ্ধে আইন আমলে নিয়েছি। চেয়ারম্যান বা বোর্ডের কেউ আসবে কি আসবে না তা এই মুহূর্তে আমরা বলতে পারছি না।”
এই সংক্রান্ত খবর