রোববার সকালে সকালে রাজধানীতে এক মানববন্ধনে তিনি বলেন, “গত এক দশকে বাংলাদেশ থেকে প্রায় ৭ বিলিয়ন ডলার অর্থাৎ প্রায় ৫ কোটি ৮৮ লক্ষ কোটি টাকা বিদেশে গেছে। এটা বর্তমান বাজেটে যে অর্থ বরাদ্দ করা হয়েছে তার চাইতেও বেশি।”
এই অর্থ কারা পাচার করছে প্রশ্ন রেখে মওদুদ বলেন, “যারা এই সরকারের মদদপুষ্ট হয়ে ব্যবসা-বাণিজ্য করেছে তারাই এই কালো টাকা করেছে, দেশে বিনিয়োগ না করে তারা বিদেশে এই টাকা চালান করেছে।
“আজকে আপনি কানাডা যান, মালয়েশিয়া যান, নিউইর্য়কে যান, অস্ট্রেলিয়ার সিডনিতে যান। আপনি দেখবেন যে, বড় বড় মল, বড় বড় বাড়ি, বড় বড় দোকান, বড় বড় ব্যবসা-বাণিজ্যকেন্দ্র… সব আওয়ামী লীগের পৃষ্ঠপোষকতায় অর্থপাচার করে সেখানে তারা গড়ে তুলছে, ব্যবসা করছে।”
এই সরকারের পতন হলে ‘বাংলাদেশের মাটিতে থাকা খুব কঠিন হবে’ বুঝে নিজেদের জন্য তারা একটা বিকল্প ঘর-বাড়ির ব্যবস্থা করে রেখেছেন বলে মন্তব্য করেন এই বিএনপি নেতা।
তৃতীয় মেয়াদে আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন সরকারের প্রথম বাজেট গত বৃহস্পতিবার সংসদে পেশ করেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। প্রস্তাবিত বাজেটে ২০১৯-২০ অর্থবছরের জন্য ৫ লাখ ২৩ হাজার কোটি টাকার বরাদ্দ রাখা হয়েছে।
‘এই বাজেট সরকারের সুবিধাভোগীদের জন্য’ বলে মন্তব্য করে বাজেটের সমালোচনা করে সাবেক আইনমন্ত্রী বলেন, “আমি বলি, এই বাজেট, এটা জনসাধারণের জন্য না। এই বাজেটের মাধ্যমে দরিদ্র আরো দরিদ্র হবে, ধনী আরো ধনী হবে।
“কালো টাকা সাদা করার এই ব্যবস্থা গত ১০ বছর যাবত এই সরকার রেখেছে। কেন? তাদেরই লোকজন, তাদেরই মদদপুষ্ট লোকেরা, তাদেরই স্বার্থান্বেষী যেসব ব্যক্তিরা আছেন তারাই এই কালো টাকার মালিক। এই কালো টাকা সাদা করার উদ্দেশ্য হলো ক্ষমতাসীন দলের নেতাদের বা ব্যক্তিদের, যারা অনেক কালো টাকা করেছেন এবং ‘আন্ডার দ্য কার্পেট’ অর্থ উপার্জন করেছেন সেই অর্থকে সাদা করার আবার একটা সুযোগ দেওয়া।”
বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে আইনি প্রক্রিয়ার পাশাপাশি আন্দোলনের জন্যও সকলকে প্রস্তুতি নেওয়ার আহ্বান জানান বিএনপির স্থায়ী কমিটির এই সদস্য।
“আমরা বলতে চাই, আইনি প্রক্রিয়ায় আমরা বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তির ব্যবস্থা করার যথাসাধ্য চেষ্টা করব। তবে তার সত্যিকারের মুক্তি আসবে আন্দোলনের মাধ্যমে। রাজপথেই বেগম জিয়ার মুক্তি নিশ্চিত হতে পারে।
“সেজন্য আমাদেরকে সংগঠিত হতে হবে, আমাদেরকে কর্মসূচি দিতে হবে এবং আমাদেরকে এমন কর্মসূচি দিতে হবে যাতে করে সরকার বাধ্য হয় তাকে মুক্তি দিতে।”
জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে জাতীয়তাবাদী মুক্তিযোদ্ধা দলের উদ্যোগে খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে এই মানববন্ধন হয়।
সংগঠনের সহ-সভাপতি মিজানুর রহমানের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক সাদেক আহমেদ খানের পরিচালনায় মানববন্ধনে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শওকত মাহমুদ, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য আবদুস সালাম, স্বনির্ভর বিষয়ক সম্পাদক শিরিন সুলতানা বক্তব্য দেন।