সম্রাটের পাশাপাশি তার ঘনিষ্ঠ সহযোগী এনামুল হক আরমানের বিরুদ্ধে মঙ্গলবার দুদকের ঢাকার এক নম্বর সমন্বিত জেলা কার্যালয়ে মামলা করেছে দুর্নীতি বিরোধী সংস্থাটি।
গত ১৮ সেপ্টেম্বর ঢাকার মতিঝিল-ফকিরাপুলের ক্লাবপাড়ায় র্যাবের অভিযানে অবৈধ ক্যাসিনো চলার বিষয়টি প্রকাশ্যে আসার পর আত্মগোপনে চলে যান যুবলীগের ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সভাপতি সম্রাট। ৭ অগাস্ট কুমিল্লার চৌদ্দগ্রাম থেকে সম্রাট ও তার সহযোগী আরমানকে গ্রেপ্তার করে র্যাব।এরপর সম্রাটের পাশাপাশি আরমানকে ঢাকা দক্ষিণের সহ-সভাপতির পদ থেকে বহিষ্কার করে যুবলীগ।
মামলায় সম্রাটের বিরুদ্ধে দুই কোটি ৯৪ লাখ ৮০ হাজার ৮৭ টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগ আনা হয়েছে। আর আরমানের বিরুদ্ধে দুই কোটি ৫ লাখ ৪০ হাজার টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগ করা হয়।
দুদকের অনুসন্ধান, বিভিন্ন সূত্রের তথ্য, পত্রপত্রিকায় প্রকাশিত খবর ও অন্যান্য গোপন তথ্যের বিভিত্তিতে সম্রাটের বিরুদ্ধে মামলায় বলা হয়, “ইসমাইল চৌধুরী সম্রাট রাজধানীর মতিঝিল ও ফকিরাপুল এলাকায় আটটি ক্লাব নিয়ন্ত্রণ এবং ক্লাবগুলোতে নিজের লোকজন দিয়ে অবৈধভাবে ক্যাসিনো ব্যবসা পরিচালনা করতেন।”
এছাড়াও তার বিরুদ্ধে চাঁদাবাজি, টেন্ডারবাজি এবং অবৈধ মাদক ব্যবসা পরিচালনার অভিযোগ রয়েছে উল্লেখ করে এসব বিষয়ে ইতোমধ্যে তার বিরুদ্ধে রমনা থানায় একাধিক মামলা থাকার বিষয়টিও এজাহারে বলা হয়।
বাংলাদেশ ব্যাংক ও অন্যান্য প্রতিষ্ঠান থেকে থেকে পাওয়া তথ্যের কথা উল্লেখ করে মামলায় বলা হয়, “আসামি ইসমাইল চৌধুরী সম্রাট তার এসব অবৈধ কার্যক্রমের মাধ্যমে অবৈধ উপায়ে অর্জিত অর্থ দ্বারা দেশের বিভিন্ন স্থানে একাধিক প্লট, বাড়ি ও ফ্ল্যাট, সিনেমা প্রযোজনায় বিনিয়োগসহ দেশের বাইরে বিভিন্ন দেশে নামে-বেনামে প্রায় এক হাজার কোটি টাকার সম্পদ অর্জন করেছেন।”
সম্রাটের বিরুদ্ধে এ মামলার তদন্তে তার আরও অবৈধ অর্থ পাওয়া গেলে আমলে নেওয়া হবে বলে এজাহারে উল্লেখ করা হয়।
অন্যদিকে অনুসন্ধানের তথ্য, পত্রপত্রিকায় প্রকাশিত সংবাদ পর্যালোচনায় বিষয়টি উল্লেখ করে এনামুল হক আরমানের বিরুদ্ধে মামলায় বলা হয়, “আসামি আরমান অবৈধ ক্যাসিনো ব্যবসার মাধ্যমে অর্জিত অর্থ হতে বিপুল পরিমাণ অর্থ দ্বারা দেশ বাংলা মাল্টি মিডিয়া নামক সিনেমা প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান প্রতিষ্ঠা করেন এবং অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে সিনেমা তৈরিতে বিপুল পরিমান অর্থ বিনিয়োগ করেন।
“তাছাড়াও তিনি দেশ-বিদেশে কোটি কোটি টাকার অবৈধ সম্পদ তার নামে বেনামে অর্জন করেন মর্মে জানা যায়।”
সম্রাট ও আরমানের বিরুদ্ধে এসব অভিযোগ থাকার বিষয়ে সাংবাদিকরা জানতে চাইলে দুদক সচিব দিলোয়ার বখত বলেন, “প্রাথমিক প্রমাণ পাওয়া সাপেক্ষে তাদের বিরুদ্ধে এসব অবৈধ সম্পদ অর্জনের মামলা দায়ের করা হয়েছে।
“তাদের বিরুদ্ধে বিদেশে পাচার করা কোটি কোটি টাকার অবৈধ সম্পদের তদন্তে প্রমাণ পাওয়া গেলে পরবর্তীতে মামলার চার্জশিটে অন্তর্ভুক্ত করা হবে।”