ঘূর্ণিঝড় বুলবুলের আঘাতে মোংলা সদর উপজেলায় খুব একটা ক্ষয়ক্ষতির খবর না মিললেও পশুর নদীর ওপারে খুলনার দাকোপ উপজেলার বানিশান্তা ইউনিয়ন লণ্ডভণ্ড হয়েছে।
Published : 10 Nov 2019, 03:41 PM
রোববার ১১টার দিকে ঝড়ের তীব্রতা কমে আসার পর বাণিশান্তা গিয়ে গ্রামের অনেক কাঁচা বাড়িঘর বিধ্বস্ত দেখা গেছে। তবে ঝড়ের তাণ্ডবের মধ্যেও এলাকার বেশিরভাগ মানুষই নিজেদের বাড়িঘরে অবস্থান করেছেন।
মূলত ঘূর্ণিঝড় আশ্রয় কেন্দ্রে জায়গার সংকুলান হবে না ভেবেই তারা বাড়িঘরে থেকে গিয়েছিলেন। তবে একেবারেই যারা নদী তীরবর্তি
হাজার বিশেক বাসিন্দার বানিশান্তা ইউনিয়নে রয়েছে সাতটি ঘূর্ণিঝড় আশ্রয় কেন্দ্র। এসব কেন্দ্রে বড়জোড় হাজার দশেক মানুষ আশ্রয় নিতে পারে।
বানিশান্তা গ্রামের আমেনা বেগম গিয়েছিলেন আশ্রয় কেন্দ্রে। তার স্বামী রসুল মিয়া ছিলেন বাড়িতে। সকালের দিকে ঝড় আঘাত হানলে গাছ ভেঙে পড়ে টিনের চালের ওপর। অল্পের জন্য বেঁচে যান রসুল মিয়া।
আমেনা বেগম বলেন, “বাড়িতে গরু-ছাগল, হাঁস-মুরগি সব আছে। এগুলো নিয়ে তো আশ্রয় কেন্দ্রে যাওয়া সম্ভব না। আর আমরা সব সময় নানা সমস্যার মধ্যে থাকি। এইসব সহ্য হয়ে গেছে।”
“রাত তিনটা থেকে বাতাসের তীব্রতা বাড়তে থাকে। সকালে শো শো শব্দে আতঙ্কিত হয়ে যাই। এক পর্যায়ে হুড়মুড় করে গাছপালা ভেঙে পড়তে শুরু করে, ভাগ্য ভালো আমার ঘরের চালে কোনো গাছ পড়েনি। “
অন্যান্য উপকূলীয় এলাকার মতো এখানেও প্রশাসনের পক্ষ থেকে আগাম সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছিল। আশ্রয় কেন্দ্রে যাওয়ার জন্য মাইকিং করা হলেও তাতে খুব একটা সাড়া দেয়নি মানুষ।
বাণিশান্তা গ্রামের শাফায়াত শেখ বলেন, “এখানকার সাইক্লোন সেন্টারে মানুষ বড়জোর হাজারখানেক আশ্রয় নিতে পারে। কিন্তু এখানে মানুষ আছে হাজার পাঁচেক। এত মানুষ তাহলে কোথায় যায়? একারণে অধিকাংশ মানুষ বাড়িতেই ছিল ঝুঁকি নিয়ে।”
তিনি বলেন, “আমার বাড়ি নদী পাড়ে বলে আশ্রয় কেন্দ্রে গিয়েছিলাম। আর শিশু সন্তানের কথাও চিন্তা করতে হয়েছিল। নইলে আমরাও যেতাম না।”
বানিশান্তা থেকে ঢ্যাংমারি-ঠাকুরবাড়ি হয়ে কালাবগী এলাকার দিকে যেতে যেতে রাস্তার দুই দিকেই দেখা গেল বুলবুলের ছোবলের চিহ্ন। কোথাও গাছপালা উপড়ে গেছে, কোথাও কাঁচা ঘরবাড়ির চাল উড়ে গেছে। কালাবগীর পথে পথে পড়ে আছে গাছ। যান চলাচল বন্ধ।