ঢাকা রেসিডেনসিয়াল মডেল কলেজের শিক্ষার্থী নাইমুল আবরার রাহাতের বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে মৃত্যুর ঘটনাকে ‘হত্যাকাণ্ড’ উল্লেখ করে এর যথাযথ তদন্তের দাবি জানিয়েছে প্রতিষ্ঠানটির সাবেক ছাত্রদের একটি সংগঠন।
Published : 06 Nov 2019, 01:41 PM
বুধবার ঢাকা রেসিডেনসিয়াল মডেল কলেজের সামনে মানববন্ধন করে ওই দুর্ঘটনায় জড়িতদের শাস্তিও দাবি করেন তারা।
রেসিডেনসিয়াল মডেল কলেজের প্রাক্তন শিক্ষার্থীদের সংগঠন ওল্ড রেমিয়ান ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশন-ওরওয়া আয়োজিত মানববন্ধনে কলেজের বর্তমান শিক্ষার্থীরাও অংশ নেন।
মানববন্ধনে ওরওয়ার সাধারণ সম্পাদক মশিউর রহমান বলেন, রাহাতের মৃত্যুর বিষয়টি ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা হয়েছিল।
“তার মরদেহের ময়না তদন্ত না করা, তাড়াহুড়ো করে তার গ্রামের বাড়িতে লাশ পাঠিয়ে দেওয়া- সবই ছিল তড়িঘড়ির ব্যাপার। একটা রাখঢাকের ব্যাপার ছিল, মানুষ বুঝতে পারার আগে ব্যাপারটি ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা হয়েছে।
গত ১ নভেম্বর রেসিডেন্সিয়াল মডেল কলেজ ক্যাম্পাসে দৈনিক প্রথম আলোর সাময়িকী কিশোর আলোর একটি অনুষ্ঠান চলাকালে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে মারা যায় নবম শ্রেণির ছাত্র নাইমুল আবরার রাহাত (১৫)। আনিসুল হক কিশোর আলোর সম্পাদক।
ওই অনুষ্ঠানের জন্য তৈরি করা মঞ্চের পেছনে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়েছিল নবম শ্রেণির ছাত্র রাহাত। আয়োজকরা তাকে মহাখালীর ইউনিভার্সেল মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
কাছের অনেকগুলো হাসপাতাল রেখে রাহাতকে মহাখালীর হাসপাতালটিতে নেওয়া নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।
কিশোর আলোর পক্ষ থেকে বলা হয়, ওই অনুষ্ঠান আয়োজনের অংশীদার ছিল ইউনিভার্সেল মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল। তাদের মেডিকেল ক্যাম্পও সেখানে ছিল। ওই ক্যাম্পের চিকিৎসকদের পরামর্শে তাকে মহাখালীর হাসপাতালটিতে নেওয়া হয়েছিল।
রাহাতের মৃত্যুর ঘটনায় ১০ কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ চেয়ে দৈনিক প্রথম আলোকে উকিল নোটিস পাঠিয়েছেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মো. ফয়েজ উল্লাহ (ফয়েজ)।
বুধবারের মানববন্ধনে মশিউর রহমান বলেন, প্রথম আলো রাহাতের মৃত্যুর দায় এড়াতে পারে না। তাকে কাছের কোনো হাসপাতালে না নিয়ে দূরের হাসপাতালে নেওয়ার সমালোচনা করেন তিনি।
“স্কুলের কর্তৃপক্ষ ছিল, র্যাব, পুলিশ ছিল কারও সঙ্গে পরামর্শ না করে প্রিন্সিপালের সঙ্গে কোনো আলোচনা না করে, বাচ্চার গার্ডিয়ানকে না জানিয়ে তারা আবরারকে অনেক দূরের ওই হাসপাতালে নিয়ে গেল।
আমরা এই এলাকাটাকে হসপিটাল এলাকা বলি তারপরও বিপজ্জনক অবস্থায় তাকে কাছের হাসপাতালে না নিয়ে আয়েশা মেমোরিয়ালে নিয়ে গেল। যদি বাচ্চাটাকে কাছের হাসপাতালে নিত, হয়তো সে বেঁচে যেত।”
তিনি বলেন, “প্রিন্সিপালকে খবর দেওয়া, তার পরিবারের লোকজনকে খোঁজা এই কাজগুলো করল আরেকজন। কিন্তু প্রথম আলোর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বা দায়িত্বশীল কেউ ছিল তাদের মধ্যে কোনো তৎপরতা দেখা যায়নি। প্রিন্সিপালকে আরেক ছাত্রের অভিভাবক ফোন করে জানাল।”
এ ঘটনার তদন্তে গঠিত কমিটির ৭২ ঘণ্টার মধ্যে প্রতিবেদন দেওয়ার কথা থাকলেও তা না দেওয়ায় ক্ষোভ জানান তিনি।
“এটাও ঘটনাটি ধামাচাপা দেওয়ার একটি অংশ,” অভিযোগ করেন তিনি।