রাহাতের মৃত্যুতে ১০ কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ চেয়ে প্রথম আলোকে উকিল নোটিস

ঢাকা রেসিডেনসিয়াল মডেল কলেজ ক্যাম্পাসে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে স্কুলছাত্র নাইমুল আবরার রাহাতের মৃত্যুর ঘটনায় ১০ কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ চেয়ে দৈনিক প্রথম আলোকে উকিল নোটিস দেওয়া হয়েছে।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 3 Nov 2019, 07:23 AM
Updated : 3 Nov 2019, 07:19 PM

ওই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সাবেক ছাত্র ওবায়েদ আহমেদের পক্ষে নোটিসটি পাঠিয়েছেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মো. ফয়েজ উল্লাহ (ফয়েজ)।

শুক্রবার বিকালে রাজধানীর মোহাম্মদপুরের ওই কলেজ ক্যাম্পাসে প্রথম আলোর সাময়িকী কিশোর আলোর একটি অনুষ্ঠান চলাকালে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে মারা যায় নবম শ্রেণির ছাত্র নাইমুল (১৫)।

এ ঘটনায় আয়োজকদের অব্যবস্থাপনাকে দায়ী করে শিক্ষার্থীরা বলছে, সংশ্লিষ্টদের অবহেলার কারণেই রাহাতকে মরতে হয়েছে।

ঘটনার জন্য প্রথম আলোর প্রকাশক-সম্পাদক, কিশোর আলোর সম্পাদক, তথ্য সচিব ও শিক্ষা সচিবকে ‘যৌথভাবে দায়ী’ করে তাদের ঠিকানায় রেজিস্ট্রি ডাকে রোববার নোটিসটি পাঠানো হয়।

নোটিস পাওয়ার তিন দিনের মধ্যে নাইমুল আবরার রাহাতের পরিবারকে ১০ কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ দিতে প্রথম আলোর প্রকাশক, সম্পাদক ও কিশোর আলোর সম্পাদকের কাছে দাবি জানানো হয়েছে।

তা না হলে নাইমুল আবরারের মৃত্যুর ঘটনায় অবহেলার অভিযোগ এনে যথাযথ আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার হুমকি দেওয়া হয়েছে।

এছাড়া শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে এ ধরনের অনুষ্ঠানের অনুমতি দেওয়ার আগে বিশেষ নিরাপত্তা ব্যবস্থা ও নিরাপদ বিদ্যুৎ সংযোগ নিশ্চিত করতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতেও সংশ্লিষ্টদের অনুরোধ করা হয়েছে।

এদিকে রাহাতের মৃত্যুর ঘটনায় শনিবার দায়ের করা অপমৃত্যু মামলার বিষয়ে জানতে চাইলে মোহাম্মদপুর থানার পরিদর্শক (অপারেশনস) শরিফুল ইসলাম বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “ময়নাতদন্ত না হলেও ডাক্তার বিদ্যুতস্পৃষ্ট হয়ে মৃত্যুর কথা উল্লেখ করেছেন।”

আর মামলার তদন্ত কর্মকর্তা এসআই সজীব ঘোষ বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, বিষয়টি তারা গুরুত্ব দিয়েই তদন্ত করছেন।

“প্রত্যক্ষদর্শীর সাথে কথা বলা ছাড়াও ভিডিও ফুটেজ সংগ্রহের চেষ্টা চলছে। এছাড়া ঘটনার কতক্ষণ পর হাসপাতালে নেওয়া হয়, কারা বৈদ্যুতিক কাজ করেছে, কার কী ভূমিকা ছিল এসব বিষয়ে খোঁজ খবর নেওয়া হচ্ছে। আমরা প্রয়োজনে সংশ্লিষ্ট সবার সাথে কথা বলব।”

সুষ্ঠু তদন্তের দাবি সাবেক শিক্ষার্থীদের

নাইমুল আবরার রাহাতের মৃত্যুর ঘটনাটির সুষ্ঠু তদন্তের দাবি জানিয়েছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়নরত রেসিডেনসিয়াল কলেজটির সাবেক শিক্ষার্থীরা।

রোববার বিকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে কলেজটির সাবেক শিক্ষার্থীদের প্ল্যাটফর্ম 'ডিউ রেমিয়েন্স' মানববন্ধন করে এ দাবি জানায়।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের শিক্ষার্থী নুরে শাফী আহনাফ কর্মসূচিতে চার দফা দাবি পেশ করে বলেন, “কিশোর আলো'র অনুষ্ঠানে আয়োজকদের অব্যবস্থাপনা ও অবহেলার জন্যই নাইমুর আবরারের মৃত্যু  হয়েছে। মৃত্যুর পর কীভাবে ৩ ঘণ্টা  অনুষ্ঠান চালিয়ে যেতে পারে, আমাদের জানা নেই। তাই নাইমুরের হত্যার দায়ভার প্রথম আলো এবং কিশোর আলোকেই নিতে হবে।”

নৃবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী জোবায়ের ইভান এই ঘটনার বিচার বিভাগীয় তদন্ত দাবি করে বলেন, “যে কেউ জানে যখন কেউ বিদ্যুতস্পৃষ্ট হয়, তখন তার হার্ট আঘাত প্রাপ্ত হয়। কিন্তু কর্তৃপক্ষ চিকিৎসার জন্য পাশের হার্ট ইন্সটিটিউট বা সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালে না নিয়ে কেন জ্যাম ঠেলে মহাখালী নিয়ে গেল? এটি আমাদের মনে সন্দেহের সৃষ্টি করেছে।”

মানববন্ধনে সংহতি জানান ডাকসুর  সাংস্কৃতিক সম্পাদক আসিফ তালুকদার।