সোনালী ব্যাংক থেকে জাতীয় সংসদের প্রধান হুইপ আ স ম ফিরোজের নেওয়া ঋণের সুদ মওকুফ ও নবমবারের মত ঋণ পুনঃতফসিলের সিদ্ধান্ত হাই কোর্ট স্থগিত করে দিয়েছে।
Published : 22 Nov 2018, 04:06 PM
এ আদেশের ফলে পটুয়াখালী-২ আসনে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের সাংসদ ফিরোজের আসন্ন একাদশ সংসদ নির্বাচনে অংশগ্রহণ হুমকির মুখে পড়ল বলে রিটকারীপক্ষের আইনজীবীর দাবি।
পটুয়াখালী জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক বাউফলের পৌর মেয়র মো. জিয়াউল হকের এক রিট আবেদনের শুনানি নিয়ে বিচারপতি শেখ হাসান আরিফ ও বিচারপতি রাজিক আল জলিলের হাই কোর্ট বেঞ্চ বৃহস্পতিবার রুলসহ এই আদেশ দেয়।
আদালতে রিটকারী পক্ষে শুনানিতে ছিলেন আইনজীবী রোকন উদ্দিন মাহমুদ, সঙ্গে ছিলেন ও এম মাইনুল ইসলাম। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মোখলেছুর রহমান।
আদেশের পর মাইনুল ইসলাম বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, বাংলাদেশ ব্যাংকের ব্যাংকিং রেগুলেশনস অ্যান্ড পলিসি ডিপার্টমেন্টের (বিআরপিডি) ১৫তম সার্কুলার অনুযায়ী ঋণ তিনবারের বেশি পুনঃতফসিল করা যায় না। কিন্তু মেসার্স পটুয়াখালী জুট মিলস লিমিটেডের নামে আ স ম ফিরোজের নেওয়া ঋণ সোনালী ব্যাংক ১৯৯৪ সাল থেকে এ বছর পর্যন্ত নয়বার পুনঃতফসিল করেছে।
এ আইনজীবী বলেন, “এ আদেশের ফলে আ ফ ম ফিরোজ এখন ঋণ খেলাপি। আর আইন অনুযায়ী ঋণ খেলাপি ব্যক্তি তো নির্বাচনে অংশ নিতে পারেন না।”
মেসার্স পটুয়াখালী জুট মিলের ঋণ বারবার পুনঃতফসিল করার ক্ষেত্রে আইনি বাধ্যবাধকতা মানতে সোনালী ব্যাংক ও বাংলাদেশ ব্যাংকের ব্যর্থতা কেন আইনগত কর্তৃত্ববহির্ভূত ও বেআইনি ঘোষণা করা হবে না, জানতে চেয়ে রুল জারি করেছে আদালত।
এছাড়াও, বাংলাদেশ ব্যাংকের বিআরপিডি সার্কুলার-১৫ অনুযায়ী মেসার্স পটুয়াখালী জুট মিলের ঋণ পুনঃতফসিল করার নির্দেশ কেন দেওয়া হবে না, তাও জানতে চাওয়া হয়েছে রুলে।
সোনালী ব্যাংক ও বাংলাদেশ ব্যাংকে চার সপ্তাহের মধ্যে রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।
আশির দশকে রাষ্ট্রায়ত্ব সোনালী ব্যাংক থেকে আ স ম ফিরোজের মালিকানাধীন মেসার্স পটুয়াখালী জুট মিলস লিমিটেড যে ঋণ নিয়েছিল সুদে-আসলে সে ঋণের পরিমাণ দাড়িয়েছে ২৬ কোটি ৮০ লাখ টাকা।
গত ১৯ আগস্ট সোনালী ব্যাংক তাদের বোর্ড অব ডাইরেটরস-এর ৫৯৪তম সভায় ঋণের সুধ মওকুফ করে এবং ঋণের পুনঃতফসিল স্থগিত করে।
সোনালী ব্যাংকের ঋণ মওকুফ ও পুনঃতফসিলের এ সিদ্ধান্তকে গত ৯ সেপ্টেম্বর অনুমোদন দেয় বাংলদেশ ব্যাংক।
বাংলাদেশ ব্যাংক ও সোনালী ব্যাংকের এ সিদ্ধান্তকে চ্যালেঞ্জ করে গত সপ্তাহে হাই কোর্টে রিট করেন বাউফল পৌর মেয়র মো. জিয়াউল হক।