নীলফামারী সদরে চেয়ারম্যান পদে চার, ভাইস চেয়ারম্যান পদে পাঁচ এবং মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে চার প্রার্থীর মনোনয়ন বৈধ।
Published : 05 May 2024, 10:46 PM
ঋণ খেলাপির কারণে উপজেলা নির্বাচনের প্রার্থিতা হারিয়েছেন নীলফামারীর সদর উপজেলার চেয়ারম্যান প্রার্থী ও বর্তমান চেয়ারম্যান শাহিদ মাহমুদ।
রোববার জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সম্মেলন কক্ষে যাচাই-বাছাই শেষে তার মনোনয়ন পত্রটি বাতিল ঘোষণা করেন নির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তা ও অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) বিরোদা রানী রায়।
সকাল ১০টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত চলা এই যাচাই-বাছাইয়ে চেয়ারম্যান পদে অপর চার জনের ও ভাইস চেয়ারম্যান পদে পাঁচ জনের এবং মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে চার জনের মনোনয়ন বৈধ ঘোষণা করেন রিটার্নিং কর্মকর্তা।
মনোনয়ন যাচাই বাছাইয়ের সময় প্রার্থীরা সবাই উপস্থিত ছিলেন।
রিটার্নিং কর্মকর্তা বিরোদা রানী রায় বলেন, “রূপালী ব্যাংক পিএলসি নীলফামারী কর্পোরেট শাখা শাহিদ মাহমুদকে ঋণ খেলাপি উল্লেখ করে তথ্য প্রদান করায় তার মনোনয়ন পত্রটি বাতিল ঘোষণা করা হয়েছে। তিনি আগামী ৮ মের মধ্যে জেলা প্রশাসকের কাছে এ বিষয়ে আপিল করতে পারবেন।”
এ বিষয়ে শাহিদ মাহমুদ বলেন, “রূপালী ব্যাংক নীলফামারী শাখা থেকে আমার মালিকানাধীন উত্তরা বীজ হিমাগারের নামে ১৫ কোটি টাকার প্রকল্প ঋণ নিয়েছি।
“যার মধ্যে আমি ১১ কোটি টাকা উত্তোলন করি। এখনো ৪ কোটি টাকা ব্যাংকে মজুত আছে। আমি কোনো ভাবেই ঋণখেলাপি নই। প্রার্থিতা ফিরে পাওয়ার জন্য আমি আপিল করবো।”
উপজেলা পরিষদ নির্বাচন তৃতীয় ধাপে আগামী ২৯ মে অনুষ্ঠিত হবে নীলফামারী সদর উপজেলা পরিষদ নির্বাচন।
শাহিদ মাহমুদের প্রার্থিতা বাতিল হওয়ায় চেয়ারম্যান পদে এখন লড়াইয়ে আছেন, সদর উপজেলা পরিষদের বর্তমান ভাইস চেয়ারম্যান ও জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক দীপক চক্রবর্তী, সদর উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ও সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মো. আবুজার রহমান, জেলা ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি তপন কুমার রায়, জাতীয় পার্টির সহযোগী সংগঠন জাতীয় যুব সমাজ নীলফামারী জেলা শাখার সাবেক সভাপতি তরিকুল ইসলাম।
ডোমারে ২ চেয়ারম্যান প্রার্থীকে কারণ দর্শানোর নোটিশ
আচরণবিধি লঙ্ঘনের অভিযোগে নীলফামারীর ডোমার উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান পদের দুই প্রার্থীকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়েছে।
রোববার বিকাল ৫টায় ওই দুই প্রার্থীকে নোটিশ প্রদান করেন নির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তা ও জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর হোসেন।
নোটিশ হাতে পাওয়ার ১২ ঘণ্টার মধ্যে টেলিফোন প্রতীকের প্রার্থী সরকার ফারহানা আখতার সুমি এবং ঘোড়া প্রতীকের প্রার্থী আব্দুল মালেক সরকারকে রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয়ে সশরীরে হাজির হয়ে জবাব দিতে বলা হয়েছে।
এ বিষয়ে রিটার্নিং কর্মকর্তা জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন প্রথম ধাপে আগামী ৮ মে অনুষ্ঠিত হবে ডোমার উপজেলা পরিষদ নির্বাচন। ওই নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন আট প্রার্থী।
এদের মধ্যে সরকার ফারহানা আখতার সুমি ও আব্দুল মালেক সরকার উপজেলা পরিষদ বিধিমালা ২০১৬ এর বিধি ১৩ এর (ক) অনুযায়ী নির্বাচনী আচরণবিধির সুস্পষ্ট লঙ্ঘন ও শাস্তিযোগ্য অপরাধ করেছেন।
রিটার্নিং কর্মকর্তা জানান, ফারহানা আখতার সুমির বিরুদ্ধে অভিযোগ, শুক্রবার রাত ৮টার পর মোটরসাইকেল নিয়ে নির্বাচনি শোডাউন করেছেন। অপরদিকে আব্দুল মালেক সরকারের বিরুদ্ধে অভিযোগ, একই দিন তিনিও স্থানীয় প্রশাসন বা রিটার্নিং কর্মকর্তার অনুমতি না নিয়ে তিনি রাত ১১টার দিকে নির্বাচনি এলাকায় পথসভা করেছেন।
“আচরণবিধি ভঙ্গ করায় তাদের পৃথক পৃথকভাবে কারণ দর্শানোর নোটিশ প্রদান করা হয়েছে। নির্ধারিত সময়ের মধ্যে জবাব দাখিল না করলে তাদের প্রার্থীতা বাতিলের জন্য নির্বাচন কমিশনে সুপারিশ করা হবে।”
কারণ দর্শানোর নোটিশ প্রাপ্তির বিষয়টি নিশ্চিত করে ফারহানা আখতার সুমি বলেন, “নোটিশ পেয়েছি, জবাব দেয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছি।”
অপর প্রার্থী আব্দুল মালেক সরকার বলেন, “রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয় থেকে আমাকে ফোন করা হয়েছিল। তবে এখনো নোটিশ হাতে পাই নাই। হাতে পাওয়ার পর জবাব দেয়া হবে।”
এর আগে শুক্রবার রাত ১১টার দিকে পাঙ্গা বাজারের এক প্রান্তে পথসভা করছিলেন চেয়ারম্যান প্রার্থী আব্দুল মালেক সরকার। একইসময় কর্মী সমর্থকদের মিছিলসহ মোটরসাইকেলের বহর নিয়ে ওই বাজারে আসেন আরেক প্রার্থী সরকার ফারহানা আখতার সুমি।
এ নিয়ে উত্তেজনার এক পর্যায়ে দুই পক্ষের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া শুরু হয়। এতে দুই পক্ষের অন্তত ২০ জন আহত হন। এছাড়াও উভয় প্রার্থীর নির্বাচনি ক্যাম্প ও ক্যাম্পের সামনে থাকা অন্তত ১৫টি মোটরসাইকেল ভাঙচুরের ঘটনা ঘটে।
পরে পুলিশ এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। আহতদের উদ্ধার করে ডোমার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। এ ঘটনায় দুই প্রার্থীই পাল্টাপাল্টি অভিযোগ করেন।