একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য ১০ ডিসেম্বরের মধ্যে সব ধরনের বার্ষিক পরীক্ষা শেষ করতে শিক্ষা মন্ত্রণালয়কে নিদের্শনা দিয়েছে নির্বাচন কমিশন।
Published : 31 Oct 2018, 01:26 PM
রাজধানীর আগারগাঁওয়ে কমিশনের কার্যালয়ে বুধবার নির্বাচনের প্রাক প্রস্তুতি নিয়ে আন্তঃমন্ত্রণালয় বৈঠক শেষে নির্বাচন কমিশন সচিব হেলাল উদ্দিন আহমেদ সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান।
তিনি বলেন, “৪১ হাজারের বেশি ভোটকেন্দ্রকে নির্বাচনের উপযোগী রাখা, সংস্কার ও ভোটগ্রহণ কর্মকর্তাদের প্রস্তুত রাখার জন্য বলা হয়েছে। ১০ ডিসেম্বরের আগে সব বার্ষিক পরীক্ষা শেষ করতে বলা হয়েছে, যাতে প্রতিষ্ঠানের ভোটকেন্দ্রগুলো প্রস্তুত রাখা সম্ভব হয়।”
এই সরকারের মেয়াদ শেষে ৩০ অক্টোবর থেকে ২৮ জানুয়ারির মধ্যে সংসদ নির্বাচনের সাংবিধানিক বাধ্যবাধকতা রয়েছে। আগে থেকেই ডিসেম্বরের মধ্যে ভোট করার প্রস্তুতি রয়েছে নির্বাচন কমিশনের।
সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রথম থেকে চতুর্থ শ্রেণির বার্ষিক পরীক্ষার সূচিতেও পরিবর্তন এনেছে সরকার। আগামী ১১-১৮ ডিসেম্বর এই পরীক্ষা হওয়ার কথা থাকলেও তা ৬ ডিসেম্বরের মধ্যে শেষ করতে বলা হয়েছে।
গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “মধ্য ডিসেম্বরের পর থেকে যে কোনো দিন জাতীয় নির্বাচন হওয়ার সম্ভাবনার কথা আমাদের বলা হয়েছে।”
নির্বাচনের সময় বিদ্যালয়গুলো ভোটকেন্দ্র হিসেবে ব্যবহার হওয়ার পাশাপাশি শিক্ষকরা ভোটগ্রহণ কর্মকর্তা হিসেবে কাজ করেন।
এক সপ্তাহের মধ্যে নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করা হবে জানিয়ে সচিব বলেন, “তফসিল ঘোষণার আগে-পরে শান্তিপূর্ণ পরিবেশ বজায় রাখতে জননিরাপত্তা বিভাগকে বলা হয়েছে। সন্ত্রাসী, মাদকসেবী, এবং নির্বাচন ভন্ডুল করতে পারে এমন বিশৃঙ্খলাকারীদের গ্রেপ্তার ও অবৈধ অস্ত্র উদ্ধারের জন্য ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে।”
এবার পার্বত্য জেলার ৩৪টি কেন্দ্রে নির্বাচনী মালামাল ও ভোটগ্রহন কর্মকর্তাদের পরিবহনে হেলিকপ্টার ব্যবহারের সিদ্ধান্ত হয়েছে বলেও জানান হেলালুদ্দীন।
জাতীয় সংসদ নির্বাচনের প্রার্থীদের মনোনয়নপত্র দাখিলের নীতিমালা সহজ করা হয়েছে জানিয়ে ইসি সচিব বলেন, নির্বাচনের আগে কোনো প্রার্থী ঋণখেলাপি বলে প্রমাণিত হলে, মনোনয়নপত্র দাখিলের একসপ্তাহ আগে তা পরিশোধের নির্দেশনা ছিল। সংশোধিত গণপ্রতিনিধিত্ব আইন (আরপিও) অনুযায়ী মনোনয়নপত্র দাখিলের আগের দিনও এই বিল পরিশোধ করা যাবে।
তিনি জানান, প্রার্থী হতে আর আয়কর রিটার্ন সনদ বাধ্যতামূলক নয়। যাদের টিআইএন নম্বর রয়েছে তারাই দেবেন; অন্যদের দরকার নেই।
১ নভেম্বর রাষ্ট্রপতির সঙ্গে সিইসিসহ নির্বাচন কমিশনারদের দেখা করার কথা রয়েছে। এরপর নভেম্বরের প্রথম সপ্তাহে তফসিল ঘোষণা করা হবে।
মনোনয়ন দাখিল, বাছাই, প্রত্যাহারের শেষ সময় এবং প্রতীক বরাদ্দ শেষে প্রচারের পর্যাপ্ত সময় দিয়ে তফসিল ঘোষণা থেকে ভোটের দিন পর্যন্ত ৪০-৪৫ দিন ব্যবধান রাখা হয়ে থাকে।
এর আগে নবম সংসদ নির্বাচনে ৪৭ দিন সময় নিয়ে ভোটের তফসিল ঘোষণা করা হয়েছিল। দশম নির্বাচনে ৪২ দিন সময় নিয়ে তফসিল ঘোষণা করা হয়েছিল।
সভায় ইসির নির্দেশনা
* প্রার্থী হতে আর কর শনাক্তকরণ নম্বর সনদ বাধ্যতামূলক নয়। যাদের টিআইএন নম্বর রয়েছে তারাই দেবেন; অন্যদের দরকার নেই।
* ঋণখেলাপিদের তালিকা সরবরাহ করবে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
* তফসিল ঘোষণার পর থেকে ভোটের পরদিন পর্যন্ত অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার ও সন্ত্রাসীদের গ্রেপ্তারে ব্যবস্থা নেবে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।
* ১০ ডিসেম্বরের আগে সব বার্ষিক পরীক্ষা শেষ করবে মন্ত্রণালয়, বোর্ড ও অধিদপ্তর।
* ৪১ হাজারেরও বেশি কেন্দ্র ভোটের উপযোগী করে রাখতে হবে।
* পার্বত্য এলাকার ৩৪ কেন্দ্রে হেলিকপ্টারে মালামাল ও ভোটগ্রহণ কর্মকর্তাদের পরিবহন ও যাতায়তে ব্যবস্থা নেবে সশস্ত্রবাহিনী বিভাগ।
* নির্বাচনী আচরণবিধি প্রচারে ব্যবস্থা নেবে বিটিভি-বেতার।
* আইন শৃঙ্খলা রক্ষায় নির্বাহী হাকিম নিয়োগ দেবে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়।
* বিদেশি পর্যবেক্ষকদের ভিসা প্রক্রিয়া সহজ করতে হবে।
* তফসিল ঘোষণার এক সপ্তাহের মধ্যে আগাম প্রচার সামগ্রী অপসারণে ব্যবস্থা নিতে হবে।