কেন্দ্রীয় ব্যাংক কর্মকর্তা গোলাম রাব্বীকে নির্যাতনের অভিযোগ ওঠার পর সমালোচনার মধ্যে থাকা পুলিশ কর্তৃপক্ষ বাহিনীর কর্মকর্তা মাসুদ শিকদারকে সাময়িক বরখাস্ত করেছে।
Published : 16 Jan 2016, 12:17 PM
ঢাকা মহানগর পুলিশের উপকমিশনার (মিডিয়া) মারুফ হোসেন সরদার শনিবার বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে এই তথ্য জানিয়েছেন।
এসআই মাসুদ মোহাম্মদপুর থানায় কর্মরত ছিলেন। তার বিরুদ্ধে অভিযোগ তদন্তে পুলিশের এক কর্মকর্তা কাজ করছেন।
অভিযোগ ওঠার পর এসআই মাসুদকে থানা থেকে সরিয়ে নেওয়া হয়েছিল। বিষয়টি নিয়ে গভর্নর আতিউর রহমান পুলিশ প্রধানকে চিঠি পাঠানোর দু’দিন পর সাময়িক বরখাস্তের আদেশ হল।
গত ৯ জানুয়ারি রাতে মোহাম্মদপুর জেনেভা ক্যাম্পের কাছে বাংলাদেশ ব্যাংকের কমিউনিকেশন্স বিভাগের কর্মকর্তা গোলাম রাব্বীকে আটক করে তাকে মাদকসেবী বানানোর ভয় দেখিয়ে এসআই মাসুদ অর্থ আদায়ের চেষ্টা করেছিলেন বলে অভিযোগ উঠেছে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ছাত্র গোলাম রাব্বী একটি টেলিভিশন চ্যানেলে সংবাদ উপস্থাপনাও করেছেন এক সময়।
তিনি বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, রাতে মোহাম্মদপুরের তাজমহল রোডে এক আত্মীয়ের বাসা থেকে বেরিয়ে কল্যাণপুরে নিজের বাসায় ফেরার পথে রাত সাড়ে ১১টার দিকে জেনেভা ক্যাম্পের কাছে তাকে আটকানো হয়।
“ইয়াবা ব্যবসায়ী-সেবনকারী বলে আমার দেহ তল্লাশি করে। পরে গাড়িতে উঠিয়ে টাকা দাবি করে। টাকা না দিলে গ্রেপ্তারের ভয় দেখানো হয়,” বলেন রাব্বী।
তবে এই অভিযোগ অস্বীকার করে এসআই মাসুদ বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেছিলেন, “এত রাতে তিনি (রাব্বী) সেখানে কেন আসলেন, তার কোনো সদুত্তর দিতে পারেননি।”
ঘটনাটি প্রকাশের পর পুলিশ সমালোচনার মধ্যে পড়ে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরাও নানা কর্মসূচি পালন করে।
এরপর ঘটনাটি তদন্তের জন্য ডিএমপির মোহাম্মদপুর জোনের সহকারী কমিশনার হাফিজ আল ফারুককে দায়িত্ব দেওয়া হয়। তদন্তে প্রাথমিকভাবে অভিযোগের সত্যতা পাওয়া গেছে বলে পুলিশের একটি দায়িত্বশীল সূত্র জানিয়েছে।
হাফিজ বলেছেন, ‘খুব শিগগিরই’ তদন্ত প্রতিবেদ দেবেন তিনি।
এদিকে রাব্বীর ঘটনায় সমালোচনার মধ্যেই রাজধানীর যাত্রাবাড়ীতে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের এক কর্মকর্তাকে পেটানোর অভিযোগ উঠেছে আরেক পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে।
তদন্ত এগোচ্ছে
পুলিশের বিরুদ্ধে এ দুটি নির্যাতনের ঘটনার তদন্ত এগিয়ে চলেছে বলে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের যুগ্ম কমিশনার মনিরুল ইসলাম জানিয়েছেন।
শনিবার দুপুরে ডিএমপির গণমাধ্যম কার্যালয়ে সাংবাদিকদের তিনি বলেন, “পুলিশ ব্যক্তিগত কারও অপরাধের দায় নেবে না। পুলিশের তদন্তে কেউ দোষী প্রমাণিত হলে তার বিরুদ্ধে দৃষ্টান্তমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
পুলিশের উপর সবাইকে আস্থা রাখার আহ্বান জানিয়ে যুগ্ম কমিশনার বলেন, “পুলিশ বাংলাদেশের অনেক ঘটনার তদন্ত করে সফলভাবে প্রতিবেদন দিয়েছে।পুলিশের তদন্তের দোষী পুলিশ সদস্যদের ফাঁসি হওয়ারও নজির আছে।
“যাত্রাবাড়ির ঘটনার তদন্ত প্রতিবেদনে ঊর্ধ্বতন কোনো কর্মকর্তার গাফিলতি বা দায়িত্বে অবহেলা পেলে তার বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেওয়া হবে”
মনিরুল বলেন, “মোহাম্মদপুর বা যাত্রাবাড়িতে যে ঘটনা ঘটেছে তাতে পুলিশ কারও পক্ষে অবস্থান নেয়নি বা কোনো ধরনের বক্তব্যও দেয়নি।ওই ঘটনা তদন্তে গঠিত কমিটি যে প্রতিবেদন দেবে, সে অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”