ঢাকার তেজগাঁও ট্রাকস্ট্যান্ড সংলগ্ন সড়কে এলোপাতাড়ি ফেলে রাখা ট্রাক ও অবৈধ স্থাপনা সরাতে সিটি করপোরেশনের উচ্ছেদ অভিযানে বাধা দিয়ে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে জড়িয়েছে শ্রমিকরা।
Published : 29 Nov 2015, 01:56 PM
ট্রাক মালিকদের ২০ দিন সময় দিলেন মেয়র আনিসুল
তেজগাঁওয়ে সড়কে আর ট্রাক নয়: মেয়র আনিসুল
ময়মনসিংহ সড়কে চার লেইনের সুফল আটকে দিচ্ছে গাজীপুরের ট্রাক স্ট্যান্ড
পুলিশের সঙ্গে ট্রাক শ্রমিকদের ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার মধ্যে বাংলাদেশ ট্রাক ও কভার্ড ভ্যান ড্রাইভার্স ইউনিয়ন অফিসের ভেতরে কার্যত আটকে আছেন ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের মেয়র আনিসুল হক।
রোববার বেলা ১টার পর উচ্ছেদে বাধা দিতে আসা শ্রমিকদের সরিয়ে দিতে পুলিশ লাঠিপেটা ও টিয়ার শেল নিক্ষেপ শুরু করলে সংঘর্ষ বাঁধে। এ সময় একজন শ্রমিক এবং বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের একজন আলোকচিত্র সাংবাদিক আহত হন।
রেলমন্ত্রী মুজিবুল হকও সে সময় ঘটনাস্থলে উপস্থিত ছিলেন। সংঘর্ষ শুরু হলে চালক সমিতির কার্যালয়ে কিছু সময় অবস্থান করে পরে তিনি সেখান থেকে চলে যান।
ঘটনাস্থল থেকে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম প্রতিবেদক জানান, পুলিশের টিয়ার শেলের আঘাতে এক শ্রমিক আহত হলে অন্যরা উত্তেজিত হয়ে পড়ে। এক পর্যায়ে এক শ্রমিক নিহত হয়েছে বলে গুজব ছড়িয়ে পড়ে এবং শ্রমিকরা সড়ক অবরোধ করে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে।
ট্রাক শ্রমিকদের অভিযোগ, জসিম উদ্দিন (৪০) নামে তাদের একজন সহকর্মী পুলিশের ছররা গুলিতে আহত হয়েছেন। তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠান হয়েছে।
এদিকে সংঘর্ষের মধ্যে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের আলোকচিত্রী তানভীর আহমেদকে ঘিরে ধরে মারধর করে কয়েকজন। তার ক্যামেরা কেড়ে নিয়ে ভেঙে ফেলা হয়।
মাথায় ইটের আঘাত নিয়ে স্থানীয় একটি হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছে তানভীর। ঘটনাস্থলে সরাসরি সম্প্রচারে থাকা কয়েকটি টেলিভিশনের সংবাদকর্মীদের দিকেও ঢিল ছুড়তে দেখা গেছে শ্রমিকদের।
ঢাকা মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত উপ কমিশনার ওয়াহিদুল ইসলাম বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের উদ্যোগে সাতরাস্তা এলাকায় সড়কের ওপর অবৈধভাবে রাখা ট্রাক ও অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদের অভিযান চলার সময় কিছুটা উত্তেজনা দেখা দিয়েছিল। এখন পরিস্থিতি অনেকটা শান্ত।”
তবে বেলা ৩টার পরও শ্রমিকদের ওই রাস্তায় টায়ারে আগুন দিয়ে বিক্ষোভ করতে দেখা যায়।
ঢাকা উত্তরের মেয়র আনিসুল হক বাংলাদেশ ট্রাক ও কাভার্ড ভ্যান ড্রাইভার্স ইউনিয়ন অফিসের ভেতরে বসে ক্ষুব্ধ কণ্ঠে বলেন, “শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনতে হবে। বাইরে চার-পাঁচজন লোক হই হই করলে তাদের কথা মানতে হবে এর কোনো কারণ নেই।
“শহরের মানুষ যাতে নির্বিঘ্নে চলতে পারে সেই কাজ করছি। ভয় পাওয়ার কিছু নেই। কেউ উত্তেজিত করলেন আর আমি আমার লোক নিয়ে দৌঁড়ে চলে গেলাম; না এটা হবে না।”
ঠিক কী ঘটেছে জানতে চাইলে মেয়র বলেন, “সমস্যা কিছুই হয়নি। কেউ একজন ইটাইটি করেছে।… যেটা হচ্ছে এটা অনভিপ্রেত।”
আনিসুল বলেন, ওই এলাকার ট্রাক মালিক, কাউন্সিলরসহ সবাই তার সঙ্গে আছেন। নির্দেশনা মেনে অনেকেই ট্রাক সরিয়ে নিয়েছেন। যারা সরায়নি তাদের বিরুদ্ধেই এ অভিযান।
এর আগে গত ৮ নভেম্বর ট্রাকস্ট্যান্ড সংলগ্ন ওই সড়কে অভিযানে যায় সিটি করপোরেশনের ভ্রাম্যমাণ আদালত।
সেদিন কয়েকটি টিনশেড দোকান ভাঙার পর অবৈধ স্থাপনা ও রাস্তা থেকে ট্রাক সরাতে ২৭ নভেম্বর পর্যন্ত সময় বেঁধে দেন তিনি।
ওই নির্দেশনা পালন করা হবে বলেই সেদিন প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন ট্রাক ও কভার্ড ভ্যান ড্রাইভার্স ইউনিয়নের নেতা মোহম্মদ মাসুমুল হক এবং বাংলাদেশ ট্রাক-কভার্ড ভ্যান অ্যান্ড ট্রান্সপোর্ট এজেন্সি মালিক শ্রমিক ঐক্য পরিষদের আহ্বায়ক মো. রুস্তম আলী খান।