“আমাদের তদন্ত সংস্থা তাদের বক্তব্য, কীভাবে গুলি লেগেছে, কারা গুলি করেছে এই তথ্যগুলো কম্পাইল করছে।”
Published : 08 Sep 2024, 09:07 PM
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় ‘গণহত্যার’ তথ্যপ্রমাণ সংগ্রহে জনগণের সহায়তা চেয়েছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের প্রধান প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম।
আন্দোলনে আহতদের দেখতে রোববার ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে যান তাজুল ইসলাম।
সেখানে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, “আমরা ট্রাইবুনালের প্রসিকিউশন টিম আজ দায়িত্ব নিয়েছি। আমরা তিনজন আজ জয়েন করেছি। আমাদের প্রথম চ্যালেঞ্জটা হলো এই গণহত্যার অভিযোগের স্বপক্ষে যে তথ্য-প্রমাণগুলো রয়েছে সেগুলোকে সংরক্ষণ করা, কালেকশন করে একসাথে করে মামলার উপযুক্ত করা।
“সেই কাজটা আমরা আজকে আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু করলাম। আমাদের একটা তদন্ত সংস্থা আছে, এতদিন এটা ফাংশনাল ছিল না। তো আমরা প্রথমেই শুরু করেছি ঢাকা মেডিকেল কলেজে গিয়ে দেখা, যারা এখনো চিকিৎসাধীন আছেন তাদের কী অব্স্থা।”
তাজুল ইসলাম বলেন, “একমাস পরেও যারা চিকিৎসা নিচ্ছেন বুঝতেই পারছেন যে, তাদের অবস্থা কতটা ভয়াবহ। অলমোস্ট সবাইতো দেখলাম গুলি লেগেছে। কারও বুকে লেগেছে, কারও কোমরে লেগে আরেকদিক দিয়ে বের হয়ে গেছে। ভাগ্যক্রমে তারা বেঁচে আছে। এর মধ্যে একটা শিশুও আছে, ক্লাস থ্রিতে পড়ে। তার দুটো পায়ে গুলি লেগেছে, মাংস সব চলে গেছে। একেবারে বীভৎস!
সুপ্রিম কোর্টের এই আইনজীবী বলেন, “একটা রাষ্ট্রের বাহিনী এরকম ছোট বাচ্চা, নিরস্ত্র সিভিলিয়ানদের ওপর গুলি করে মানুষ মারতে পারে, এটা চোখে না দেখলে বিশ্বাস করা মুশকিল। …সে সময়ে যারা অপরাধে সম্পৃক্ত ছিল তারা করেছে। তাদেরকে বিচারের আওতায় আনতে হবে। আমাদের তদন্ত সংস্থা তাদের বক্তব্য, কীভাবে গুলি লেগেছে, কারা গুলি করেছে এই তথ্যগুলো কম্পাইল করছে। সেই কাজটা আমরা শুরু করেছি। এটা চলতে থাকবে।”
দেশবাসীর কাছে তথ্য-প্রমাণ দেওয়ার আহ্বান জানিয়ে তাজুল ইসলাম বলেন, “আমি দেশবাসীর কাছে আহ্বান জানাব, যারা এই আন্দোলন চলাকালে পুলিশের দ্বারা, এই রাষ্ট্রের দ্বারা আহত হয়েছেন, গুলিবিদ্ধ হয়েছেন, শহীদ হয়েছেন- সবাই আমাদের এই তদন্ত সংস্থাকে তথ্যপ্রমাণ দিয়ে সাহায্য করুন। এর বিচার যেন বাংলাদেশে সুষ্ঠু ও সুন্দরভাবে আমরা করতে পারি সেজন্য জনগণকে অনুরোধ করছি তথ্যপ্রমাণ দিয়ে সাহায্য করুন, যাতে আমাদের আদালত তদন্ত সংস্থা ও প্রসিকিউশনের তৎপরতার মধ্য দিয়ে একটা ন্যায় বিচার করতে পারে।”
গত বৃহস্পতিবার আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের প্রধান প্রসিকিউটর হিসেবে তাজুল ইসলামকে নিয়োগ দিয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করে সরকার।
সেই সঙ্গে সুপ্রিম কোর্টের আরও চার আইনজীবীকে ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউটর হিসেবে নিয়োগ দিয়েছে আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয়।
এই চার প্রসিকিউটর হলেন- মো. মিজানুল ইসলাম, গাজী মোনাওয়ার হুসাইন তামিম, বি এম সুলতান মাহমুদ ও আব্দুল্লাহ আল নোমান।
রোববার দায়িত্ব নেওয়ার পরই ট্রাইব্যুনালের প্রধান কৌঁসুলি তাজুল ইসলাম বলেছেন, কোটা সংস্কার আন্দোলনে গণহত্যার অভিযোগে করা মামলার আসামি শেখ হাসিনাকে দেশে ফিরিয়ে এনে বিচারের মুখোমুখি করা হবে।