দুর্ঘটনার কারণ উদঘাটনে বিমান বাহিনীর উচ্চ পর্যায়ের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে, বলছে আইএসপিআর।
Published : 10 May 2024, 12:43 AM
চট্টগ্রামের পতেঙ্গায় বিমান বাহিনীর প্রশিক্ষণ উড়োজাহাজটিতে আগুন লাগার পর ক্ষয়ক্ষতি এড়াতে সেটিকে ঘনবসতিপূর্ণ এলাকা থেকে সরিয়ে জনবিরল এলাকায় নিয়ে যান দুই বৈমানিক।
’জান-মাল রক্ষায় তারা এমন ঝুঁকি নিয়েছিলেন,’ বলে বৃহস্পতিবারের এ দুর্ঘটনার পর সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলেছে আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর (আইএসপিআর)।
আইএসপিআর বলেছে, “বিমানটিতে আগুন ধরে যাওয়ার পর বড় ধরনের ক্ষতি এড়াতে বৈমানিকদ্বয় অত্যন্ত সাহসিকতা ও দক্ষতার সাথে বিমানটিকে বিমান বন্দরের নিকট অবস্থিত ঘনবসতিপূর্ণ এলাকা থেকে জনবিরল এলাকায় নিয়ে যেতে সক্ষম হন।”
বৃহস্পতিবার প্রশিক্ষণ শেষে ফেরার সময় বিমান বাহিনীর ওই উড়োজাহাজে আগুন লাগে, যা পরে চট্টগ্রাম বোট ক্লাবের কাছে কর্নফুলী নদীতে বিধ্বস্ত হয়।
এ ঘটনায় দুই বৈমানিক প্যারাশুট দিয়ে নেমে এলেও শেষ পর্যন্ত প্রাণ হারান একজন।
নৌবাহিনীর ইসা খাঁ ঘাঁটির বিএনএস পতেঙ্গা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় বৃহস্পতিবার বেলা ১২টার দিকে স্কোয়াড্রন লিডার মুহাম্মদ আসিম জাওয়াদের মৃত্যু হয়।
ওই ঘটনায় আহত উইং কমান্ডার সোহান হাসান খাঁন বিমান বাহিনীর জহুরুল হক ঘাঁটির মেডিকেল স্কোয়ার্ডনে চিকিৎসাধীন।
এ দুর্ঘটনার বিষয়ে আইএসপিআর সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলেছে, “বিমান বাহিনীর একটি ইয়াক-১৩০ প্রশিক্ষণ বিমান নিয়মিত প্রশিক্ষণের অংশ হিসেবে আজ বৃহস্পতিবার আনুমানিক সকাল ১০টা ২৫ মিনিটে চট্টগ্রামের বাংলাদেশ বিমান বাহিনী ঘাঁটি জহুরুল হক থেকে উড্ডয়নের পর প্রশিক্ষণ শেষে ফেরার সময় কর্ণফুলী নদীর মোহনার কাছে দুর্ঘটনায় পতিত হয়।
”দুর্ঘটনার পর বৈমানিকদ্বয় উইং কমান্ডার মোঃ সোহান হাসান খাঁন, পিএসসি এবং স্কোয়াড্রন লিডার মুহাম্মদ আসিম জাওয়াদ জরুরি প্যারাসুট দিয়ে বিমান থেকে নদীতে অবতরণ করেন। বিমানের দুইজন বৈমানিককে বাংলাদেশ বিমান বাহিনী ও নৌবাহিনীর উদ্ধারকারী দল এবং স্থানীয় জেলেদের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় উদ্ধার করা হয়।”
তাদের মধ্যে আসিম জাওয়াদের অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় দ্রুত চিকিৎসার জন্য বিএনএস পতেঙ্গায় নেওয়া হয়। কর্তব্যরত চিকিৎসক সর্বাত্মক প্রচেষ্টার পর তাকে মৃত ঘোষণা করেন বলে আইএসপিআর জানায়।
আইএসপিআর বলেছে, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নিহতের শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা জানিয়েছেন। বিমান বাহিনী প্রধান এয়ার চিফ মার্শাল শেখ আব্দুল হান্নানও শোকসন্তপ্ত পরিবাররের প্রতি সমবেদনা জ্ঞাপন করেন।
দুর্ঘটনায় পতিত বিমানটিকে উদ্ধারের কার্যক্রম চলমান রয়েছে জানিয়ে বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, সহকারী বিমান বাহিনী প্রধান (পরিকল্পনা) এয়ার ভাইস মার্শাল মুঃ কামরুল ইসলাম ঢাকা থেকে দুর্ঘটনাস্থলে পৌঁছান এবং উদ্ধার কার্যক্রমে সংশ্লিষ্ট সকলকে প্রয়োজনীয় দিক নির্দেশনা প্রদান করেন। বিমান বাহিনী ঘাঁটি জহুরুল হকের এয়ার অধিনায়ক এয়ার ভাইস মার্শাল এ কে এম শফিউল আজম দুর্ঘটনা পরবর্তী কার্যক্রম তত্ত্বাবধান করছেন।
আইএসপিআর বলছে, বিমান বাহিনী প্রধানের নির্দেশে দুর্ঘটনার কারণ উদঘাটনের জন্য বিমান বাহিনীর একটি উচ্চ পর্যায়ের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।