শৃঙ্খলাভঙ্গের অভিযোগে তাদের কারণ দর্শানোর নোটিস দেওয়া হয়েছিল কিছুদিন আগে।
Published : 04 Nov 2024, 04:53 PM
রাজশাহীর সারদায় পুলিশ একাডেমিতে প্রশিক্ষণরত আরো ৫৮ এসআইকে শৃঙ্খলা ভঙ্গের ‘অভিযোগে’ অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে; যাদের কারণ দর্শানোর নোটিস দেওয়া হয়েছিল কিছুদিন আগে।
পুলিশ সদর দপ্তরের সহকারী মহাপরিদর্শক (এআইজি) ইনামুল হক সাগর সোমবার বলেন, “শৃঙ্খলাভঙ্গের জন্য নিয়ম অনুযায়ী তাদেরকে শোকজ করা হয়। এর আগে তাদেরকে দেওয়া শোকজ নোটিসের সন্তোষজনক জবাব না পাওয়ায় ৫৮ জনকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে।"
দুই সপ্তাহের ব্যবধানে এ নিয়ে ৩১০ জন এসআইকে অব্যাহতি দেওয়া হল; তাদের সবাই নিয়োগ পেয়েছিলেন বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে।
প্রশিক্ষণ ক্লাসে ‘এলোমেলোভাবে বসে হইচই’ করে শৃঙ্খলাভঙ্গের অভিযোগে এই দফায় অব্যাহতি পাওয়া ৫৮জন এসআইকে কারণ দর্শানোর নোটিস দেওয়া হয়েছিল গত ২১ ও ২৪ অক্টোবর।
পুলিশ একাডেমির অধ্যক্ষের পক্ষে পুলিশ সুপার (অ্যাডমিন অ্যান্ড লজিস্টিক) তারেক বিন রশিদ স্বাক্ষরিত পৃথক দুটি চিঠিতে প্রথমে ১০ জনকে এবং পরে ৪৯ জনকে ওই চিঠি দেওয়া হয়।
দুই সপ্তাহের মাথায় তাদের মধ্য থেকে একজন বাদে সবাইকে অব্যাহতি দেওয়ার কথা জানাল পুলিশ সদর দপ্তর।
সারদা পুলিশ একডেমি বলছে, গত ২১ অগাস্টে সন্ধ্যা ৭টা থেকে রাত সাড়ে ৮টা পর্যন্ত চেমনি মেমোরিয়াল হলে আইনের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ ধারার ওপর ক্লাস ছিল প্রশিক্ষণরত এসআইদের।
সারদায় প্রশিক্ষণরত আরও ৫৯ এসআইকে শোকজ
“প্রশিক্ষণ চলাকালে পরিদর্শক পদমর্যাদার চারজন প্রশিক্ষক দেখতে পান, সিটে বসার সময় শৃঙ্খলার সঙ্গে না বসে এলোমেলোভাবে বসে হইচই করে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করেছেন এসআইরা। একজন প্রশিক্ষক বারবার শৃঙ্খলার সঙ্গে বসতে বললেও নির্দেশ অমান্য ও কর্ণপাত না করে বসা নিয়ে হইচই করতে থাকেন।“
এর আগে গত ২১ অক্টোবর সারদাতেই প্রশিক্ষণরত একই ব্যাচের ২৫২ জন এসআইকে ‘সমাপনী কুচকাওয়াজের অনুশীলন প্যারেডে ‘নাশতা নিয়ে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির’ কারণ দেখিয়ে অব্যাহতি দেওয়া হয়।
এ ঘটনায় পেছনে কোনো রাজনৈতিক ‘কারণ নেই’ বলে সে সময় মন্তব্য করেছিলেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী।
প্রশিক্ষণের মধ্যেই আড়াইশ ক্যাডেট এসআইকে অব্যাহতি
তিনি বলেছিলেন, “শৃঙ্খলার সংজ্ঞা তো অনেক বড়। এটা তো একাডেমি বলতে পারবে। আমাদের সেনাবাহিনীতে দেখছি পাসিং আউটের আগেরদিনও অনেককে ফেরত পাঠানো হয়। এর চেয়ে আরও বেশি সংখ্যায় বের করা হয়। পুরো ব্যাচ ধরে কখনো বের করে দেওয়া হয়। বিজিবিতে একবার পুরো ব্যাচ ধরে বের করে দেওয়া হয়। এরকম হতে পারে। ডিসিপ্লিন শব্দটাতো বিরাট বড়।“
আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে এই ব্যাচে মোট ৮০৪ জন এসআই পদে নিয়োগ পেয়েছিলেন। আগেও এ ব্যাচের তিনজনকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছিল।
এই ব্যাচের ৮০৪ জনের মধ্যে জেলাওয়ারি হিসেবে গোপালগঞ্জ জেলা থেকে সবচেয়ে বেশি ৪৯ জন নিয়োগ পেয়েছিলেন।
২৫২ এসআইকে অব্যাহতির পেছনে রাজনৈতিক কারণ নেই: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা
'নাশতা নিয়ে হইচই করায়' অব্যাহতি ২৫২ জন ক্যাডেট এসআইকে
শেখ হাসিনার সরকার পতনের আগ মুহূর্তে নিয়োগ করা ৮০৩ জন এসআই এবং ৬৭ জন এএসপির নিয়োগ অবিলম্বে বাতিলের দাবি তুলেছিল বিএনপি।
এর আগে গত ২০ অক্টোবর সারদায় অনুষ্ঠেয় ৪০তম বিসিএসের পুলিশ ক্যাডারের শিক্ষানবিশ সহকারী পুলিশ সুপারদের প্রশিক্ষণ সমাপনী কুচকাওয়াজ ‘অনিবার্য কারণে’ স্থগিত করা হয়।
স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টাসহ মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাসহ অতিথিরা পাসিং আউট প্যারেডে অংশ নিতে সারদায় গেলেও অনুষ্ঠান আর হয়নি।