দিবস পাশে রেখে ভোটাররা আস্থার খোঁজে

ভোটারদের ভোটবিমুখতার মধ্যে দুয়ারে এল ভোটার দিবস; এদিন হালনাগাদ করা চূড়ান্ত ভোটার তালিকা প্রকাশ করা হবে।

মঈনুল হক চৌধুরীবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 1 March 2023, 07:26 PM
Updated : 1 March 2023, 07:26 PM

কাজী হাবিবুল আউয়াল কমিশন দায়িত্ব নেওয়ার বছর ঘুরতেই বৃহস্পতিবার পালিত হচ্ছে ‘ভোটার দিবস’। এবার এমন একসময় এ দিবস পালিত হচ্ছে, যখন দ্বাদশ সংসদ নির্বাচন দুয়ারে। এবার দিবসের প্রতিপাদ্য- ‘ভোটার হব নিয়ম মেনে, ভোট দেব যোগ্য জনে’।

কিন্তু ভোটার হয়ে ভোট দেওয়ার অপেক্ষা যেমন অনেকের রয়েছে, তেমনই তিক্ত অভিজ্ঞতা ও আস্থার সংকটে কেন্দ্রে যাওয়া নিয়ে সংশয় কাটেনি অনেকের। ভোটার দিবসের আগে রাজনৈতিক বিভেদ কাটিয়ে সব দলের অংশগ্রহণে নির্বাচন দেখার প্রত্যাশার কথাই বলেছেন নাগরিকরা।

দশম ও একাদশ সংসদ নির্বাচনের প্রসঙ্গ টেনে ভোট দেওয়া নিয়ে দ্বিধা-দ্বন্দ্বে থাকার কথা জানালেন প্রবীণ রিনা আক্তার।

তার কথায়, “অবাধ, নিরপেক্ষ নির্বাচন হোক, তাহলে ভোটে আস্থা ফিরবে আমাদের। না হলে ভোট দিতে যাব না৷ কারণ নিরপেক্ষভাবে ভোট দিতে পারি না, কেন্দ্রে ঝামেলা হয়- এ কারণে ভয়ও লাগে।”

হালনাগাদ করা চূড়ান্ত ভোটার তালিকাও প্রকাশ হচ্ছে বৃহস্পতিবার। নতুন তালিকাভুক্তদের নিয়ে দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে ভোটার থাকবে ১১ কোটি ৯০ লাখের মতো।

২০০৭-০৮ সালে ছবিসহ ভোটার তালিকা প্রণয়ন ও জাতীয় পরিচয়পত্র দেওয়া শুরু হয়। নবম সংসদ নির্বাচনের সময় ভোটার ছিল ৮ কোটি ১০ লাখের মতো। সে নির্বাচনে রেকর্ড ৮৭% ভোট পড়েছিল, অংশ নিয়েছিল নিবন্ধিত ৩৮ দল।

দশম সংসদ নির্বাচনে ৯ কোটি ১১ লাখের মতো ভোটার ছিল। গোলযোগ, সহিংসতা ও বিএনপির বর্জনের মুখে সেই নির্বাচনে অংশ নেয় এক ডজন দল। তাতে ১৫৩ আসনে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হওয়ার নজিরও হয়। বাকি ১৪৭ আসনে ভোট পড়ে প্রায় ৪০%।

১০ কোটি ৪১ লাখের বেশি ভোটারের একাদশ সংসদ নির্বাচনে ভোট পড়ে প্রায় ৮০%। এ নির্বাচনে নিবন্ধিত সব দল অংশ নেয়। তবে দুই শতাধিক কেন্দ্রে শতভাগ ভোট পড়ার নজিরও তৈরি হয়।

দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের আগে এবার ভোটার হতে যাচ্ছে ১১ কোটি ৯০ লাখের মতো। এ বছরের নভেম্বর থেকে আগামী বছরের জানুয়ারির মধ্যে হবে এ নির্বাচন।

গত ১৫ বছরে দেশে ভোটার বেড়েছে সাড়ে তিন কোটির বেশি। এর মধ্যে একাদশ সংসদের তুলনায় প্রায় দেড় কোটি নতুন ভোটার প্রথমবারের মত আগামী সংসদ নির্বাচনে ভোট দিতে যাচ্ছে।

রাজনৈতিক পরিস্থিতির মধ্যে সবশেষ দুই সংসদ নির্বাচন নিয়ে সমালোচনার মুখে পড়তে হয়েছে কাজী রকিবউদ্দীন আহমদ ও কে এম নূরুল হুদা কমিশনকে।

এমন পরিস্থিতিতে নাগরিকদের ভোটাধিকার নিশ্চিতে নির্বিঘ্ন পরিবেশের বিষয়ে আশ্বস্ত করছে নির্বাচন আয়োজনকারী সাংবিধানিক সংস্থা নির্বাচন কমিশন।

তবে পর্যবেক্ষক মহল বলছে, এখন প্রধান সমস্যা হচ্ছে ভোটারের কেন্দ্রবিমুখতা। অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন হলেই যোগ্য প্রার্থীর প্রশ্ন আসে। সব দল, বিশেষ করে প্রধান দলগুলো ভোটে থাকলে ভোটারের অংশগ্রহণও বাড়বে। ভোটার উপস্থিতি অনেক কম হলেও ভোট বৈধ হয়; তবে আন্তর্জাতিক মানদণ্ডে গ্রহণযোগ্যতা বিবেচনায় তা ‘লেজিটিমেট’ বলা যায় না।

আস্থা আর সংশয়

লুৎফুন্নাহার ফুরকান ভোটার হওয়ার পর ২০১৮ সালের সংসদ নির্বাচনে প্রথম ভোট দেন।

এই শিক্ষার্থী বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “ভোট দিতে চাই। কারণ আমার ভোট আমি দিতে চাই, অন্য কেউ দিক বা নষ্ট হোক, তা চাই না। আর আমরা ভোট দিতে না গেলে অনিয়মের সুযোগটাও বাড়বে, ফলে আমাদের উচিত প্রটেস্ট করা। কেন্দ্রেও ভোটের পরিবেশ বজায় থাকবে আশা করি।"

নতুন ভোটার নেহেরু রঞ্জন বিশ্বাস আগামী সংসদ নির্বাচনে ভোট দেওয়ার জন্য সংশয়ে আছেন।

সুনামগঞ্জের এ ভোটার বলেন, “এখনও কোনো আগ্রহ নেই ভোট নিয়ে। ভোট দিতে হলে আবার (ঢাকা থেকে) বাড়ি যাওয়া লাগবে। সময় নষ্ট, খরচ- এলাকায় থাকলে দিব, নইলে যাব না।”

সুষ্ঠু নির্বাচন নিয়ে ‘আস্থা নেই’, তবে ভোটে আগ্রহ আছে গৃহকর্মী সুরমা আক্তারের। তিনি বলেন, “ভোট তো হয় মেশিনে, পরে কী হয়- আমরা তো তা জানি না। সবাইই তো চায় দেশ সুন্দর থাক।”

ভোটার হয়েও 'আস্থাহীনতায়' সংসদ ও স্থানীয় কোনো নির্বাচনে ভোট দেওয়া হয়নি মিরপুরের তরুণী নওরীন চৌধুরীর।

ভোট না দেওয়ার ব্যাখ্যা ও আগামীর প্রত্যাশা তুলে ধরে তিনি বলেন, “ভোট দিতে পারব কি না, আর যাকে ভোট দিব- সে পাবে কি না… কারণ, শুনছি অনেক অনিয়ম হইছে। তবে গত জাতীয় নির্বাচনের সময় ভোট দিতে চাইছিলাম, পরে শুনি আমাদের ভোট হয়ে গেছে। কেন্দ্রেও মারামারি হয়েছে অনেক। সামনে সুষ্ঠু নির্বাচন হলে আগ্রহ আছে জীবনের প্রথম ভোটটা দেওয়ার।”

সুষ্ঠু নির্বাচন হবে– এমন আস্থা কম হলেও কেন্দ্রে যাওয়ার আগ্রহ রয়েছে ব্যাংক কর্মকর্তা হেলিম ভূঁইয়ার।

তিনি বলেন, “যদিও ফেয়ার নির্বাচন হওয়ার সম্ভাবনা কম, তারপরও আমি ভোট দিতে যাব। আমাদের জায়গা থেকে চেষ্টাটা তো করতে হবে, আর আমি ভোট না দিলে তো যাকে নির্বাচিত করতে চাই না; তার জিতে যাওয়ার পথটা মসৃণ হয়ে যেতে পারে।”

কমিশনের সদিচ্ছা ও কঠোর অবস্থান থাকলে দৃষ্টান্তমূলক আরেকটি সংসদ নির্বাচন উপহার দেওয়া সম্ভব বলে মনে করেন তিনি।

Also Read: কম ভোটের ছয় উপ নির্বাচন কী বার্তা দিয়ে গেল

Also Read: ভোটে অনাগ্রহ, কী কারণ?

Also Read: ভোটের হারে ‘অশনি সংকেত’ দেখছেন মাহবুব তালুকদার

Also Read: মানুষ ভোট দিতে চাইছে: সিইসি

Also Read: আসল চ্যালেঞ্জ নিতে এক বছরে কতটা তৈরি হল ইসি

প্রশ্ন যখন গ্রহণযোগ্যতার

নির্বাচন বিশ্লেষক ড. আব্দুল আলীম মনে করেন, সাম্প্রতিক বছরগুলোতে অনেক নির্বাচনে ভোটার উপস্থিতি তুলনামূলক কম হয়েছে। এখন প্রধান সমস্যা দাঁড়িয়েছে ভোটারের কেন্দ্র বিমুখতা। নির্বাচনকে জনগণের কাছে নিয়ে যেতে হবে; দলগুলোকেও নির্বাচনে থাকতে হবে।

“ভোটারকে কেন্দ্রে ফেরাতে হলে অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনই এর অন্যতম শর্ত। সব দলকে কীভাবে ভোটে আনা যায়, অংশগ্রহণে উদ্বুদ্ধ করা যায়-তা নিশ্চিত করতে হবে। দলের অংশগ্রহণ থাকলে দেখা যাবে- ভোটারের আগ্রহ বেড়ে যাবে কেন্দ্রে যাওয়ার।”

এক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট সবার সহযোগিতা থাকতে হবে বলেও মন্তব্য করেন নির্বাচন পর্যবেক্ষকদের মোর্চা ইলেকশন ওয়ার্কিং গ্রুপের সাবেক এ পরিচালক।

কাজী হাবিবুল আউয়াল নেতৃত্বাধীন ইসির অধীনে ইভিএমে সবশেষ উপনির্বাচন গাইবান্ধা ৫ আসনে প্রায় ৩৮% ভোট পড়ে। আর বিএনপির ছেড়ে দেওয়া ছয় আসনের উপনির্বাচনে গড়ে ২৮% ভোট পড়েছে। এর মধ্যে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ১৬% ভোট পড়েছে।

অবশ্য আগের কমিশনের সময়- করোনাভাইরাস মহামারীর মধ্যে ২০২০ সালের মার্চে ঢাকা-১০ আসনের উপনির্বাচনে ইভিএমে সবচেয়ে কম ভোট পড়ার নজির তৈরি হয়। ওই দিন ভোট পড়ার হার ছিল ৫ দশমিক ২৮ শতাংশ।

তারও আগে ২০২০ সালের ১ ফেব্রুয়ারি ইভিএমের ব্যাপক প্রচারের মধ্যে ভোটারের খরা দেখেছিল ঢাকার দুই সিটির নির্বাচনে। সেবার দক্ষিণ সিটিতে ২৯ শতাংশ ও উত্তরে ভোটের হার ছিল ২৫ দশমিক ৩ শতাংশ।

আব্দুল আলীম বলেন, “দেশের নির্বাচন পদ্ধতিতে ভোটের হার যত কমই হোক না; নির্বাচনে কোনো প্রশ্নের অবকাশ নেই, এটা বৈধ। ভোটার ৫%, ১০% হোক- যিনি বেশি ভোট পাবেন, তিনি জিতবেন। এটা আমাদের ইলেকটোরাল সিস্টেমের দুর্বলতা।

“কিন্তু আন্তর্জাতিক মানদণ্ডে এটা তো লেজিটিমেট বলা যায় না, গ্রহণযোগ্য ও বিশ্বাসযোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন থেকে যায়। ভোটারের জন্য নির্বিঘ্ন পরিবেশ ও প্রধান দলগুলোর অংশগ্রহণ নিশ্চিত হবে কেন্দ্রে উৎসব হবে ভোটের সময়।”

দল ও ভোটারের অংশগ্রহণ ভালো হলেই তারা যোগ্য প্রার্থী বেছে নিতে পারবে বলে মন্তব্য করেন আব্দুল আলীম।

ইসির আশ্বাস

নির্বাচন কমিশনার আহসান হাবিব খান বলেন, ভয়ভীতিহীন নির্বাচন ও নির্বিঘ্ন পরিবেশ নিশ্চিতে নির্বাচন কমিশন তৎপর রয়েছে। মেয়াদের প্রথম বছরে এ পর্যন্ত যত নির্বাচন হয়েছে- যেখানে বাধা, অনিয়মের অভিযোগ এসেছে, সেখানেই ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।

“এ পর্যন্ত বর্তমান ইসির অধীনে পাঁচ শতাধিক নির্বাচন হয়েছে; যার বেশিরভাগই ইভিএমে। এসব ভোটে নির্ভরযোগ্য কোনো অভিযোগ তো আসেইনি, সংক্ষুব্ধ কেউ আদালতেও যায়নি। ইভিএমের নির্বাচনে ভোটারদের নির্বিঘ্নে ভোট দেওয়ার সুযোগ প্রসারিত হয়েছে।

“ভোটকেন্দ্রের গোপন কক্ষে অবাঞ্ছিত লোকের উপস্থিতি ও কেন্দ্রে প্রভাব খাটানোর অভিযোগ পেলে তাৎক্ষণিকভাবে কয়েকজনকে আইনের আওতায় আনা হয়েছে।”

ভোটার, নির্বাচনী কর্মকর্তা, এজেন্ট, সংবাদমাধ্যমকর্মীসহ সংশ্লিষ্টদের নিরাপত্তা নিশ্চিতে কমিশন ‘বদ্ধপরিকর’ জানিয়ে আহসান হাবিব খান বলেন, “আমরা সারা বছরই ভোটারদের উদ্বুদ্ধ করতে কাজ করে যাচ্ছি। হালনাগাদের নির্ধারিত কর্মসূচির বাইরেও সারাবছরই যোগ্যরা ভোটার হতে পারছেন।

“ভোটার হওয়ার পাশাপাশি তাদের এনআইডি সেবাও সহজ করার সব ধরনের পদক্ষেপ রয়েছে। প্রত্যেক ভোটারের নাগরিক অধিকার তার ভোটাধিকার। এ অধিকার রক্ষায় আমাদের দিক থেকে সর্বোচ্চ ব্যবস্থা নিয়েছি এবং তা অব্যাহত থাকবে।”

এ নির্বাচন কমিশনার মনে করেন, নির্বাচনের ফলাফল মেনে নেওয়ার সংস্কৃতি গড়ে তুলতে হবে সবাইকে। যে কোনো উপায়েই জিততে হবে- এমন প্রবণতা থেকে যেমন বেরিয়ে আসতে হবে, তেমনই পরাজয় মেনে নেওয়ার মানসিকতা থাকতে হবে।

“আমরা নির্বাচন কমিশন শুধু ভালো নির্বাচন করব; কিন্তু যিনি বা যারা পরাজিত হবেন- তিনি বা তারা সমালোচনায় মুখর হবেন তা সমীচীন নয়। নির্বাচনের গুণগত সংস্কৃতির বিকাশে ভোটার, দল, অংশীজনসহ সবার সহযোগিতা দরকার। ভোট নিয়ে কল্পনাপ্রসূত কোনো শঙ্কার বশবর্তী হয়ে নির্বাচন বর্জনের সংস্কৃতিও কাঙ্ক্ষিত নয়,” বলেন আহসান হাবিব খান।

সব দলকে ভোটে আনার বিষয়ে ইসির আহ্বান বরাবরই থাকে মন্তব্য করে এ নির্বাচন কমিশনার বলেন, “ভোটাধিকার মুখের কথা নয়, এটাকে অর্থবহ করতে আমাদের সব ধরনের উদ্যোগ, সর্বোচ্চ সদিচ্ছা থাকবে। আমরা চাই দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনসহ সব নির্বাচন হোক অবাধ, সুষ্ঠু, শান্তিপূর্ণ ও অংশগ্রহণমূলক।”

সাবেক এ সেনা কর্মকর্তা আশ্বস্ত করে বলেন, “ভোটে আসেন সবাই, প্রতিদ্বন্দ্বিতা হোক। গোলযোগ, সহিংসতা পরিহার করতে হবে; নির্বাচন কমিশনও অনিয়ম ঠেকাতে কঠোর অবস্থান রয়েছে। প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ নির্বাচন হলে ভোটের মাঠেও ভারসাম্য থাকবে। ভোটে সবার জন্য সমান সুযোগ থাকবে।”

বর্তমান ইসির ১ বছর

  • সংসদের উপনির্বাচন ২টি- ভোটের হার গড়ে ২৯.৩৪% (ফরিদপুর-২ আসনে ২৬.২৪% ও গাইবান্ধা-২ আসনে ৩৮.২৩%)

  • সিটি নির্বাচন ২টি- ভোটের হার গড়ে ৬৩.১৭% (কুমিল্লায় ৫৮.৭৪% ও রংপুরে ৬৫.৯১%)

  • পৌরসভা নির্বাচন ১৯টি- ভোটের হার গড়ে ৬৪.৫৩%

  • উপজেলা পরিষদ নির্বাচন ৭টি- ভোটের হার গড়ে ৩৬.৭৫%

  • ইউপি নির্বাচন ২৩২টি- ভোটের হার গড়ে ৬৮%

  • জেলা পরিষদ নির্বাচন ৬১টি- ভোটের হার ৯৯.১১%।

>> সংসদের ছয় আসনে উপনির্বাচন ব্যালট পেপারে ভোট হয়। এসব উপনির্বাচনে গড়ে ২৮.৪৫% ভোট পড়ে।

>> একটি উপজেলা, ১৫টি ইউপি এবং সিটি, পৌরসভা, উপজেলা, ইউপির শূন্য পদে মিলিয়ে ৮৭টি ব্যালট পেপারে এবং ৫০২টি ইভিএমে ভোট হয়েছে।

>> সম্প্রতি রাষ্ট্রপতি নির্বাচনও শেষ করেছে ইসি। সংসদে সংরক্ষিত আসনের ভোটও হয়েছে।

ভোটার দিবসের আয়োজন

পঞ্চম জাতীয় ভোটার দিবস পালনে বৃহস্পতিবার দেশজুড়ে নানা কর্মসূচি থাকছে। তা পালনের প্রস্তুতি নিয়েছে ইসি।

নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ের যুগ্ম সচিব এসএম আসাদুজ্জামান এক বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছেন, ভোটার দিবসে সারাদেশে হালনাগাদ করা চূড়ান্ত ভোটার তালিকা প্রকাশ করা হবে।

সকাল সাড়ে ৮টায় নির্বাচন ভবনের সামনের চত্বর থেকে শোভাযাত্রার মধ্য দিয়ে দিবসের কর্মসূচি উদ্বোধন হবে। বিকাল ৪টায় থাকবে আলোচনা সভা। এতে প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী হাবিবুল আউয়াল প্রধান অতিথি এবং নির্বাচন কমিশনাররা বিশেষ অতিথি হিসেবে থাকবেন।

ভোটার দিবসে দক্ষতা ও কৃতিত্বের সঙ্গে দায়িত্ব পালনের জন্য নির্বাচন কমিশনের তিনজন চৌকস কর্মকর্তাকে ‘জাতীয় নির্বাচনী পদক’ দেওয়া হবে।

কেন্দ্রীয়ভাবে এসব কর্মসূচি ছাড়াও সারাদেশে আঞ্চলিক, জেলা ও উপজেলা ও থানা পর্যায়ে শোভাযাত্রা ও আলোচনা অনুষ্ঠান হবে।

২০১৩ সালে সার্কভুক্ত দেশগুলোর নির্বাচন বিষয়ক সংগঠন ফেমবোসার চতুর্থ সভায় সদস্য দেশগুলোতে জাতীয়ভাবে ভোটার দিবস পালনের তাগাদা আসে। এরপরই মূলত জাতীয় ভোটার দিবস উদযাপনের চিন্তাভাবনা শুরু হয়। 

এরই ধারাবাহিকতায় ২০১৭ সালে নির্বাচন কমিশন সচিবালয় ১ জানুয়ারি বা ৭ জুলাই জাতীয়ভাবে ভোটার দিবস উদযাপনে একটি প্রস্তাব কমিশন সভায় উপস্থাপন করে। পরে কমিশন ১ মার্চ জাতীয় ভোটার দিবস উদযাপনের সিদ্ধান্ত নেয়। সেই সিদ্ধান্ত ২০১৮ সালে সরকারের সায় পেয়েছিল।

তবে ১ মার্চকে জাতীয় বীমা দিবস ঘোষিত হওয়ায় ২০২০ সাল থেকে ২ মার্চকে ভোটার দিবস পালনের সিদ্ধান্ত আসে।

[প্রতিবেদন তৈরিতে সহায়তা করেছেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি সাবিকুন্নাহার লিপি]