এবারও ভোটারপ্রতি খরচ করা যাবে গড়ে ১০ টাকা

আসনভিত্তিক ভোটার সংখ্যা এখনও প্রকাশ করেনি ইসি।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 16 Nov 2023, 06:34 PM
Updated : 16 Nov 2023, 06:34 PM

আগামী সংসদ নির্বাচনে ভোটার প্রতি গড় ব্যয় ১০ টাকা ঠিক করে দিয়েছে নির্বাচন কমিশন; তবে তা কোনোভাবেই ২৫ লাখ টাকার বেশি হতে পারবে না। 

প্রার্থীদের নির্বাচনী ব্যয় সংক্রান্ত এ প্রজ্ঞাপন তফসিল ঘোষণার দিন বুধবারই জারি করেন ইসি সচিব মো. জাহাংগীর আলম। 

এতে বলা হয়েছে, গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ (আরপিও) অনুযায়ী দলীয় অনুদানসহ প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীর নির্বাচনী খরচ ২৫ লাখ টাকার বেশি হবে না। যেহেতু নির্বাচনী ব্যয় ভোটারপ্রতি হারে নির্ধারিত হওয়ার বিধান রয়েছে, সেহেতু ইসি দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রতিটি নির্বাচনী এলাকায় ভোটারপ্রতি নির্বাচনী ব্যয় ১০ টাকা নির্ধারণ করল। 

এ নির্বাচনে ৩০০ আসনে ভোটার রয়েছে প্রায় ১১ কোটি ৯৭ লাখ।

এ বিষয়ে ইসির অতিরিক্ত সচিব অশোক কুমার দেবনাথ জানান, প্রতি আসনে দল ও স্বতন্ত্র প্রার্থী সর্বোচ্চ ২৫ লাখ টাকা নির্বাচনী ব্যয় করতে পারবে। আরপিওতে বলা হয়েছে, কোনো প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীর নির্বাচনী ব্যয় তার নির্বাচনী এলাকার ভোটার সংখ্যার ভিত্তিতে মাথাপিছু হারে নির্ধারণ করা হবে। 

“এর মানে মাথাপিছু হারে ১০ টাকা নির্বাচনী ব্যয় বিবেচনায়- ৭ লাখ ভোটারের নির্বাচনী এলাকাতেও প্রার্থী কোনোভাবেই ৭০ লাখ টাকা ব্যয় করতে পারবেন না। আবার ২ লাখ ভোটারের নির্বাচনী এলাকার প্রার্থীদের ব্যয় ভোটারপ্রতি ১০ টাকা বিবেচনায় ২০ লাখ টাকা ব্যয় করতে পারবেন।”

মাথাপিছু হারে খরচ যেভাবে

*একাদশ সংসদ নির্বাচনে ৩০০ আসনের মধ্যে সবচেয়ে বেশি ৭ লাখ ৪৭ হাজার ৩০১ জন ভোটার ছিল ঢাকা-১৯ আসনে। আর সবচেয়ে কম ১ লাখ ৭৮ হাজার ৭৮৫ জন ভোটার ছিল ঝালকাঠি-১ আসনে। 

*এক্ষেত্রে ঢাকা-১৯ আসনে ভোটার প্রতি প্রার্থী খরচ করতে পারেন ৩ টাকা ৩০ পয়সা, আর ঝালকাঠি-১ আসনের প্রার্থীর সর্বোচ ব্যয় ঠিক হয়েছিল ১৭ লাখ ৮৭ হাজার ৮৫০ টাকা। 

তার মানে ঢাকা-১৯ আসনে ভোটার বেশি হলেও কোনো প্রার্থী ২৫ লাখ টাকায় বেশি ব্যয় করার বৈধতা পাননি।  আবার ঝালকাঠী-১ আসনের প্রার্থীদের কোনোভাবেই ২৫ লাখ টাকা ব্যয়ের চূড়ায় যাওয়ার সুযোগ নেই। 

এবারের নির্বাচনের আসনভিত্তিক ভোটার সংখ্যা এখনও প্রকাশ করেনি ইসি।

ইসির নির্বাচন ব্যবস্থাপনা শাখার যুগ্মসচিব ফরহাদ আহাম্মদ খান জানান, একাদশ সংসদ নির্বাচনেও ভোটারপ্রতি ১০ টাকা নির্বাচনী ব্যয় ছিল প্রার্থীদের। এবারও ভোটারপ্রতি একই ব্যয় ঠিক করা হয়েছে। 

এর আগে দশম সংসদ নির্বাচনে ভোটারপ্রতি ৮ টাকা এবং নবম সংসদ নির্বাচনে ৫ টাকা ঠিক করা হয়েছিল। তবে নবম সংসদ নির্বাচনে প্রার্থীর নির্বাচনী ব্যয় সর্বোচ্চ ১৫ লাখ টাকা ছিল, যা দশম সংসদ নির্বাচন থেকে তা ২৫ লাখ টাকা করা হয়। 

নির্বাচনী আচরণবিধি অনুযায়ী, প্রার্থীর এজেন্ট ওই টাকা খরচ করতে পারেন। এছাড়া প্রার্থীর কাছ থেকে লিখিতভাবে ক্ষমতাপ্রাপ্ত কেউ মনোহরী দ্রব্য, ডাকটিকেট কেনা, টেলিফোন বিল ও অন্যান্য ছোটখাটো খাতে অর্থ ব্যয় করতে পারবেন। 

অবশ্য ভোটের মাঠে আসলে কত টাকা খরচ হচ্ছে তা নিরূপণের ব্যবস্থা না থাকায় প্রার্থীরা বাস্তবে অনেক বেশি অর্থ ব্যয় করেন, যা নিয়ে বিভিন্ন সময়েই সমালোচনা হয়েছে। 

দলের নির্বাচনী ব্যয় 

গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ (আরপিও) অনুযায়ী, দল সর্বোচ্চ ৫০ জন প্রার্থী দিলে ব্যয় করতে পারবে সর্বোচ্চ ৭৫ লাখ টাকা। 

৫১-১০০ প্রার্থী দিলে জন্য সর্বোচ্চ দেড় কোটি টাকা। 

১০১-২০০ প্রার্থীর জন্য দলের নির্বাচনী ব্যয় তিন কোটি টাকা। 

দুইশর বেশি প্রার্থী দিলে সংশ্লিষ্ট দল সর্বোচ্চ সাড়ে চার কোটি টাকা ব্যয় করতে পারবে। 

Also Read: ভোটের প্রচারে যা করা যাবে না

Also Read: নির্বিঘ্নে কেন্দ্রে আসুন, ভোট কারচুপি প্রতিহত করুন: সিইসি

আরপিও মেনে দল ও প্রার্থীকে ভোটের পর নির্বাচনী ব্যয়ের আলাদা আলাদা ব্যয় বিবরণী জমা দিতে হয়। দল থেকে প্রার্থী কোনো অনুদান পেলে সেটিসহ সর্বোচ্চ ২৫ লাখ টাকা ব্যয় করতে পারবেন প্রার্থী।  

ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী, ১৫ নভেম্বর মনোনয়নপত্র জমার শেষ সময় রয়েছে। বাছাই ১-৪ ডিসেম্বর এবং প্রত্যাহারের শেষ সময় ১৭ ডিসেম্বর। ভোট হবে ৭ জানুয়ারি। ১৮ ডিসেম্বর থেকে ৫ জানুয়ারি পর্যন্ত প্রচারণা চালাতে পারবেন প্রার্থীরা।