ভোটে গুরুতর অনিয়ম হলে গেজেটের আগেই ফল আটকে দিতে চায় ইসি

“আরপিও সংশোধনের বিষয়ে অনেকেই ভুল ব্যাখ্যা দিচ্ছেন,” বলেন ইসি সচিব।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 30 March 2023, 01:06 PM
Updated : 30 March 2023, 01:06 PM

গেজেট প্রকাশের পরে নয়, তদন্তে গুরুতর অনিয়মের প্রমাণ পেলে ভোটের ফল প্রকাশের আগেই ব্যবস্থা নেওয়ার ক্ষমতা চাইছে নির্বাচন কমিশন। 

বৃহস্পতিবার নির্বাচন ভবনে মাসিক সমন্বয় সভা শেষে সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান কমিশন সচিব মো. জাহাংগীর আলম। 

গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশে (আরপিও) নির্বাচনী আইন সংস্কার নিয়ে কমিশনের একগুচ্ছ প্রস্তাবের মধ্যে নিয়ে দুটি বিষয় সুস্পষ্ট করেন তিনি। 

মন্ত্রিসভার বৈঠকে মঙ্গলবার আরপিও সংশোধনের প্রস্তাবে নীতিগত অনুমোদন দেওয়া হয়। তা আরও পর্যালোচনা করে পরবর্তীতে ফের সভায় উঠবে।

ইসি সচিব বলেন, “আরপিও সংশোধনের বিষয়ে অনেকেই ভুল ব্যাখ্যা দিচ্ছেন, মিডিয়াতে দুটো বিষয়ে ভিন্ন রকম প্রতিবেদন এসেছে। একটি বিষয় হচ্ছে- যদি কোথাও গুরুতর অনিয়মের কারণে নির্বাচন স্থগিত করতে হয়, নির্বাচন কমিশন করতে পারেন, এটা আগে থেকে বলা আছে।

“এখন (সংশোধনী প্রস্তাবে) বলা হয়েছে, কোনো একটি ফলাফল তৈরির সময় রিটার্নিং কর্মকর্তা বিরবরণীটা কমিশনে পাঠাবে; তখন যদি গুরুতর কোনো অনিয়ম হয়, তখন নির্বাচন কমিশন যথাযথ তদন্ত করবে।

“তদন্তে ফলাফল সঠিক হলে তা প্রকাশ করবে। অন্যথায় গুরুতর অপরাধে ফলাফল সঠিকভাবে প্রতিফলিত না হলে তখন তারা বাতিল করতে পারবেন। এখানে গেজেট প্রজ্ঞাপনের পরে বাতিল করা হবে- কথাটা কিন্তু তা না।”

তিনি জানান, সংসদ নির্বাচনে এখন প্রতি জেলায় একজন রিটার্নিং কর্মকর্তা নিয়োগ করা হয়, যিনি জেলা প্রশাসক বা অন্য কেউ হতে পারেন। এ রিটার্নিং কর্মকর্তা জেলার আওতাধীন সব আসন তদারকি করেন। কিন্তু কোনো উপ-নির্বাচন হলে একটি আসনের জন্য রিটার্নিং কর্মকর্তা নিয়োগ দিতে হয়।

সেজন্যে আইনে জেলা শব্দের পাশাপাশি সংসদীয় আসন যোগ করার প্রস্তাব করা হয়েছে। 

সচিব বলেন, “এটাকে বিভিন্নভাবে ব্যাখ্যা করা হচ্ছে। প্রকৃত বিষয় হচ্ছে- জেলা (ডিসট্রিক্ট) শব্দটির সঙ্গে অথবা আসন (কন্সটিটিউয়েন্সি) শব্দটি যোগ করা হয়েছে। আইনের ধারাটা না পড়েই ব্যাখ্যা দেওয়া হচ্ছে।” 

Also Read: ভোটে পর্যবেক্ষক-সাংবাদিকদের বাধা দিলে সাজার বিধান আসছে

Also Read: আরপিও সংস্কার প্রস্তাব ভেটিংয়ের অপেক্ষায়: ইসি রাশেদা

Also Read: ইসির রোডম্যাপ: মহানগর ও জেলা সদরে ইভিএমে ভোট

ইসি সচিব বলেন, “স্পষ্টভাবে জানিয়ে দিতে চাই, আরপিও সংশোধন নিয়ে মন্ত্রিসভার বৈঠক হয়েছে। সেখানে ইসির প্রস্তাবে নীতিগত অনুমোদন দিয়েছে। 

“নীতিগত অনুমোদন বলতে যে প্রস্তাবগুলো আছে, সেগুলো আইন মন্ত্রণালয় আরো পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে দেখবে। তারপর পরবর্তী সভায় উত্থাপন করবে। কোনো অংশ বাতিল বা কোনোটা রাখা হবে সেটা কিন্তু নীতিগত অনুমোদনের সময় সিদ্ধান্ত দেওয়া হয় না।” 

ইসি সচিবালয় যেন নির্বাচনী প্রস্তুতিতে পিছিয়ে না পড়ে 

মাসিক সমন্বয় সভায় কথা হয় সংসদ নির্বাচনের প্রস্তুতি নিয়েও। 

এ বছরের শেষ দিকে বা আগামী বছরের শুরুতে এই ভোট করতে প্রস্তুতির প্রাথমিক কাজও শুরু হয়েছে। ভোটের পথে এগিয়ে যেতে কাজী হাবিবুল আউয়াল নেতৃত্বাধীন নির্বাচন কমিশনের রোডম্যাপ ঘোষণার সাড়ে ছয় মাস পারও হয়ে গেছে। এমন পরিস্থিতিতে কোনোভাবেই যেন নির্বাচনী প্রস্তুতিতে পিছিয়ে না পড়ে ইসি সচিবালয়- সে নির্দেশনা দিয়েছেন সিইসি। 

সভায় সিইসি ও অন্য নির্বাচন কমিশনাররাও অংশ নেন। 

ইসি সচিব বলেন, “আজকে আমাদের মাসিক সমন্বয় সভা ছিল। ইসির সচিবালয়ের সব কর্মকর্তাদের এবং আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তাদের নিয়ে বসেছিলাম। কমিশন আজকে থাকার ইচ্ছা পোষণ করেছিলেন ও সভার শেষ দিকে তারা ছিলেন। কাজের অগ্রগতির পাশাপাশি দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের প্রস্তুতির বিষয়ে দিক-নির্দেশনা দিয়েছেন।”

তিনি জানান, ভোট সামনে রেখে কোনোভাবেই যেন রোডম্যাপ বাস্তবায়নে ইসি পিছিয়ে না পড়ে, সে নির্দেশও দেন সিইসি। 

সচিব বলেন, “নির্বাচনের আপ টু বটম, মালামাল ক্রয় থেকে শুরু করে ভোটকেন্দ্র স্থাপন পর্যন্ত সব বিষয়ে রোডম্যাপ অনুযায়ী সব কাজের নির্দেশনা দিয়েছেন- যেন ঘোষিত রোডম্যাপ থেকে আমরা পিছিয়ে না পড়ি। 

“নির্বাচনের প্রস্তুতির ক্ষেত্রে মাঠ পর্যায় থেকে আমরা জানতে চেয়েছি, ব্যালট বক্সগুলো কোথায় আছে, কীভাবে আছে, সেগুলোকে কীভাবে যাচাই করে তারা আমাদের রিপোর্ট দেবে এ সব বিষয়।”