ফেইসবুকে ১৭ দিনের পরিচয়ে অন্য এক নারী ক্রিকেটারকে বিয়ে করেন আযান। স্বর্ণাদের সঙ্গে একই ফ্ল্যাটে অন্য একটি পক্ষ থাকতে শুরু করেন।
Published : 31 Jan 2024, 08:06 PM
বাংলাদেশ জাতীয় নারী ক্রিকেট দলের অলরাউন্ডার স্বর্ণা আক্তারের একটি আইফোন ১১ হাজার টাকায় বিক্রি করে ভারতে যাওয়ার চেষ্টায় ধরা পড়েছেন আরেক ক্রিকেটারের স্বামী আল আমিন দেওয়ান আযান।
দিনাজপুর থেকে আযানকে গ্রেপ্তারের পর বুধবার ঢাকায় সংবাদ সম্মেলন করে এ কথা জানায় র্যাব।
আযান বহু বছর ধরে প্রতারণায় জড়িত জানিয়ে সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, তিনি কখনো নিজেকে গোয়েন্দা সংস্থার কর্মকর্তা, কখনো কাপড় ব্যবসায়ী পরিচয় দিতেন।
গত ১২ জানুয়ারি এক নারী ক্রিকেটারকে বিয়ে করেন তিনি। এই বিয়ের সূত্রে পরে স্বর্ণাসহ অন্য ক্রিকেটারদের সঙ্গে পরিচিত হন।
র্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক কামান্ডার আল মঈন জানান, গত প্রায় তিন বছর ধরে স্বর্ণাসহ চার নারী ক্রিকেটার রাজধানীর পূর্ব রাজাবাজার একটি ফ্ল্যাটে বসবাস করে আসছেন।
এই চার জনের একজন নুঝহাত তানিয়া। তার সঙ্গে সামাজিক মাধ্যমে আযানের সম্পর্ক হয় এবং ১৭ দিনের মাথায় গত ১২ জানুয়ারি তারা বিয়ে করেন। বিয়ের পর পূর্ব রাজাবাজার সেই ফ্ল্যাটের একটি কক্ষে থাকতে শুরু করেন তানিয়া ও আযান।
স্বর্ণা এবং অন্য দুই ক্রিকেটারের কাছ থেকে ফেরত দেওয়ার কথা বলে প্রায় ২ লাখ টাকাও নেন আযান।
স্বর্ণা গত সোমবার রাজধানীর শেরে বাংলানগর থানায় দুইটি আইফোন, ডলার, নগদ টাকাসহ প্রায় সাড়ে ৫ লাখ টাকার মালামাল চুরির অভিযোগ এনে মামলা করেন। এতে আযানকে আসামি করা হয়।
দুইদিন পর র্যাবের হাতে ধরা পড়েন তিনি।
স্বর্ণা বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানান, তিনি শুনেছেন তার চুরি যাওয়া ফোনসহ অন্যান্য জিনিস উদ্ধার করেছে র্যাব। তবে তিনি বুঝে পাননি।
র্যাবের ভাষ্য, আযান সামাজিক মাধ্যমে বিভিন্ন আইডি খুলে নিজেকে বড় ব্যবসায়ী পরিচয় দিতেন। ছবির পাশাপাশি টিকটক ভিডিও আপলোড করতেন। কিছু নারীর সঙ্গে সুসম্পর্ক গড়ে তুলে বিয়ের কথা নগদ অর্থসহ মূল্যবান জিনিসপত্র হাতিয়ে নিয়ে আত্মগোপনে চলে যেতেন।
২০২২ সালে আযান প্রথম বিয়ে করেন। পরে তার সঙ্গে একাধিক নারীর সম্পর্ক এবং প্রতারণার বিষয় প্রকাশ পেলে বিচ্ছেদ হয় বলে জানায় র্যাব।
ফেইসবুকে নতুন আইডি খুলে নিজেকে গোয়েন্দা কর্মকর্তা ও ব্যবসায়ী পরিচয় দিয়ে ক্রিকেটার তানিয়ার সঙ্গে সম্পর্কে জড়ান তিনি, দ্রুতই বিয়ে করে নেন।
র্যাব কর্মকর্তা মঈন জানান, ২০১১ সালে রাজধানীর একটি স্কুল থেকে এসএসসি পাস করা আযান রাজধানীর বিভিন্ন মার্কেটে কাপড়ের দোকানে চাকরি করতেন। তার বিরুদ্ধে ঢাকা এবং চাঁদপুরে চারটি মামলা রয়েছে। তিন বার কারাভোগও করেছেন।
নারীদের সঙ্গে প্রতারণা প্রকাশ পেলে বা এমন আশঙ্কা করলে আযান ভারতে চলে যেতেন বলেও জানিয়েছে র্যাব।
ক্রিকেটার স্বর্ণার মোবাইল, মার্কিন ডলার ও টাকা চুরি করে এবারও তিনি দিনাজপুর হয়ে অবৈধভাবে ভারতে যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন বলে জানিয়েছেন র্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক।
তার কাছ থেকে ৪টি আইফোন, একটি অন্য ব্র্যান্ডের ফোন, প্রাইম ব্যাংকের চেক বইয়ের পাতা, প্রাইম ব্যাংকের মাস্টার কার্ড, বেশ কিছু বৈদেশিক মুদ্রা, তিনটি হাত ঘড়িসহ অন্যান্য মালামাল উদ্ধার করা হয়।
জিজ্ঞাসাবাদে আযান র্যাবকে জানান, স্বর্ণার একটি আইফোন পুরান মালামাল বিক্রির মার্কেটে ১১ হাজার টাকায় বিক্রি করে রংপুর গিয়ে একটি আবাসিক হোটেলে এক রাত থাকেন তিনি। পরের দিন যান দিনাজপুর।