নাচে, গানে ভরপুর হিন্দি সিনেমায় খলনায়কের কদর অন্য রকম। নায়কের চরিত্র তখনই পূর্ণতা পায় যখন তাকে লড়তে হয় দুর্ধর্ষ কোনো খলনায়কের সঙ্গে। আমজাদ খান থেকে শুরু করে শক্তি কাপুর, অমরেশ পুরি থেকে শুরু করে হাল আমলের ‘ভিলেইন’ রিতেশ দেশমুখ--বলিউডের শত বছরের ইতিহাসে খলনায়কেরা স্মরণীয় হয়ে আছেন সবসময়ই।
Published : 13 Sep 2014, 04:39 PM
রূপালি পর্দায় আতংক সৃষ্টিকারী এই চরিত্রগুলো দর্শকের মনে গেঁথে যান তাদের অনন্য সংলাপের কারণে। এমনই কিছু স্মরণীয় সংলাপের কথা মনে করিয়ে দিতে এই আয়োজন।
‘জো ডার গ্যায়া সামঝো মার গ্যায়া’—গাব্বার সিং (শোলে)
‘শোলে’ কেউ দেখুক আর না দেখুক, গাব্বার সিংকে চেনেন না এমন বলিউডপ্রেমীর দেখা পাওয়া ভার। ডাকাত সর্দারের সাজে অভিনেতা আমজাদ খানের সেই রূপ আজও স্মরণীয় হয়ে আছে, থাকবে আরও বহু বছর। নির্মাতা রমেশ সিপ্পির অমর সৃষ্টি গাব্বার সিংকে আজ ধরা হয় হিন্দি সিনেমার ইতিহাসে সর্বকালের সেরা খলনায়কদের মধ্যে অন্যতম।
খলনায়কের কাজ কি শুধুই আতংক ছড়ানো? অনেক সময় খলনায়কই হতে পারেন হাস্যরসের আধার। আর অভিনেতা শক্তি কাপুর তার গোগো চরিত্রটির মাধ্যমে তারই প্রমাণ দিয়েছেন। ‘আন্দাজ আপনা আপনা’ সিনেমাতে তাকে দেখে দর্শকের মনে ভয় তো জাগেইনি, বরং তার কৌতুকপূর্ণ অভিনয়ের জন্য চরিত্রটি আজও দর্শকের মনে জীবন্ত হয়ে আছে।
প্রয়াত অভিনেতা অমরেশ পুরি তার জীবনে অনেক ধরনের চরিত্রে অভিনয় করেছেন। তবে তাকে সবাই একবাক্যে ‘মোগ্যাম্বো’ হিসেবেই চেনে। পৌরাণিক ভয়াল দানবের আদলে তৈরি, ভারতের প্রথম সুপারহিরো সিনেমা ‘মিস্টার ইন্ডিয়া’র মোগ্যাম্বো চরিত্রটি নেতিবাচক চরিত্র হিসেবে উদাহারণ হয়ে আছে।
সত্তরের দশকের অ্যাকশন ড্রামা ‘কালিচারান’ নির্মাণ করেন সুভাষ ঘাই। একজন সৎ এবং উদার ব্যবসায়ীর চরিত্রে যেখানে দেখা যায় অভিনেতা আজিতকে। কিন্তু যতই কাহিনী এগোয়, খুলে পড়ে তার সততার মুখোশ। অবশেষে বেরিয়ে আসে মুম্বাইয়ের অপরাধ জগতের প্রধান ‘লায়ন’ তিনি।
বিকারগ্রস্ত এক পাগল প্রেমিকের ভূমিকায় শাহরুখ খানের সেই অভিনয় তার ভক্তরা কোনদিনও ভুলতে পারবেন না। ‘ডর’ সিনেমার সেই চরিত্রটি ছিল অভিনেতা হিসেবে শাহরুখের ক্যারিয়ারে এক মাইলফলক। আর সেই বিখ্যাত সংলাপ, আজও ভক্তদের মুখে মুখে ফেরে।
শুধুমাত্র একটি থাপ্পড় কারও জীবনের নকশাই বদলে দিতে পারে—নির্মাতা সুভাষ ঘাই তা বুঝিয়েছিলেন ‘কারমা’র মাধ্যমে। সিনেমাতে একজন সন্ত্রাসীর ভূমিকায় দেখা যায় অভিনেতা অনুপম খেরকে, আর এই স্মরণীয় সংলাপটি বের হয়েছিল তার মুখ থেকেই।
অর্থলোভী এক গুণ্ডার চরিত্রে অভিনেতা প্রেম চোপড়াকে দেখা যায় রোমান্টিক সিনেমা ‘ববি’তে। বরাবরের মত একজন খলনায়কের দায়িত্ব সেখানে ঠিকমতোই পালন করেছিলেন তিনি। সিনেমাটির জনপ্রিয়তা যেমন ফিকে হয়নি আজও, তেমনি সবার মনে আছে তার এই সংলাপ।
আশির দশকের জনপ্রিয় অ্যাকশন-থ্রিলার ‘শান’ যেন হিন্দি সিনেমাকে আরও উঁচুতে নিয়ে গিয়েছিল। এবারও কৃতিত্ব রামেশ সিপ্পির। শাকালের চরিত্রে সিনেমাতে অভিনয় করেন কুলভুশন খারবান্দা। আন্তর্জাতিক এই সন্ত্রাসী নেতাকে লড়তে হয় দুই ভাই বিজয় এবং রাভির সঙ্গে যাদের চরিত্রে অভিনয় করেছিলেন অমিতাভ বচ্চন এবং শশি কাপুর।
‘রাম লাখান’ সিনেমায় অভিনেতা গুলশান গ্রোভারের বলা এই সংলাপটি এতটাই পরিচিতি পায়, যে তার নামের সঙ্গেই জুড়ে যায় ‘ব্যাড ম্যান’-এর তকমা। এরপর থেকে বলিউডের ‘ব্যাড ম্যান’ হিসেবেই পরিচিত পান তিনি।
নব্বইয়ের দশকের বলিউড দর্শকদের কাছে এই সংলাপটি অতি পরিচিত। অ্যান্টি হিরো বাল্লুর চরিত্রে সঞ্জয় দত্তের তুখোড় অভিনয় সবার মনে এমনভাবে গেঁথে গিয়েছিল যে নায়িকা মাধুরি দিক্ষিতের উপস্থিতিও অনেকের কাছে ফিকে হয়ে গিয়েছিল।