ভারতীয় স্পিনারদের দেখেই নিজেকে সমৃদ্ধ করে ভারতের বিপক্ষে জ্বলে উঠেছেন ম্যাথু কুনেমান।
Published : 02 Mar 2023, 10:42 AM
মাসখানেক আগেও অস্ট্রেলিয়ার টেস্ট দলের ধারেকাছে ছিলেন না ম্যাথু কুনেমান। এখন তিনি টেস্ট দলের হয়ে ভারত সফরে আছেন তো বটেই, পাদপ্রদীপের আলোও এখন তার ওপর। তিনি নিজেও যেন তা বিশ্বাস করে উঠতে পারছেন না। তবে বাস্তবের জমিনে ফিরে তিনি নিজের সাফল্যের কৃতিত্ব দিচ্ছেন রচিন্দ্রন অশ্বিন ও রবীন্দ্র জাদেজাকে। ভারতীয় ব্যাটিং গুঁড়িয়ে ২৬ বছর বয়সী অস্ট্রেলিয়ান বাঁহাতি স্পিনার বলছেন, ভারতীয় স্পিনারদের দেখেই নিজেকে সমৃদ্ধ করেছেন তিনি।
ইন্দোর টেস্টের প্রথম দিনের নায়ক এই কুনেমান। বৃহস্পতিবার ম্যাচের ষষ্ঠ ওভারে আক্রমণে এসেই তিনি বিদায় করেন রোহিত শর্মাকে। পরে একে একে ফিরিয়ে দেন শুবমান গিল, শ্রেয়াস আইয়ার, রবিচন্দ্রন অশ্বিন ও উমেশ যাদবকে। ভারত প্রথম ইনিংসে গুটিয়ে যায় ১০৯ রানেই।
ক্যারিয়ারের মাত্র দ্বিতীয় টেস্ট খেলতে নামা কুনমানের শিকার ১৬ রানে ৫ উইকেট। টেস্টে তো বটেই, তার প্রথম শ্রেণির ক্যারিয়ারেও সেরা বোলিং।
অথচ এই সফরে অস্ট্রেলিয়ার টেস্ট স্কোয়াডে তিনি ছিলেন না। প্রথম টেস্টের পর দলে যোগ করা হয় তাকে। তখন তার প্রথম শ্রেণির অভিজ্ঞতা স্রেফ ১৩ ম্যাচের, উইকেট ৩৫টি। সঙ্গে আর অভিজ্ঞতা গত জুনে শ্রীলঙ্কা সফরে চারটি ওয়ানডে খেলার।
গত ১১ ফেব্রুয়ারি শেফিল্ড শিল্ডের ম্যাচের প্রস্তুতিতে গা গরম করতে যাওয়ার আগে একটি ফোন কল পান। সৌভাগ্যবশত, পাসপোর্ট ছিল তার ব্যাগেই। ব্যস, চেপে বসেন দিল্লির উড়ানে!
আচমকা ডাক পেয়ে ভারতে যাওয়ার পরপর স্বপ্নের ব্যাগি গ্রিন ক্যাপও পেয়ে যান তিনি। দিল্লি টেস্টে হয়ে যার তার অভিষেক। প্রথম ম্যাচে দুই উইকেট পাওয়ার পর এবার ইন্দোরে দুর্দান্ত বোলিংয়ে ৫ উইকেট। সব মিলিয়ে রূপকথার সময়।
কুনেমান নিজেই যেন বিশ্বাস-অবিশ্বাসের ঘোরে আছেন এই সময়ে। কদিন আগেও যারা ছিলেন তার কাছে দূর আকাশের তারা, তাদের পাশে নিজেকে দেখে নিজেরই বিশ্বাস হচ্ছে না তার।
“একটা ঘুর্ণিচক্রের ভেতর আছি যেন। প্রতিরাতেই মনে হয়, নিজেকে চিমটি মেরে দেখি এসব সত্যি নাকি। এমনকি আজকেও ড্রেসিং রুমে বসে চারপাশে যখন তাকাচ্ছিলাম, স্টার্কি (মিচেল স্টার্ক) ও ন্যাথান লায়নের সঙ্গে কথা বলছিলাম, মনে হচ্ছিল, এসব যেন পরবাস্তব কিছু।”
“এই দলের সঙ্গে থাকা, মাঠে নেমে স্টিভেন স্মিথ এবং অন্য এসব ক্রিকেটারদের সঙ্গে খেলা এবং দলের জন্য অবদান রাখা, এসব অসাধারণ।”
ইন্দোরে যেমন উইকেট পেয়েছেন কুনেমান, অস্ট্রেলিয়ায় কখনও এরকম উইকেট পাওয়ার কথা চিন্তাও করেন না তিনি। কখনও কখনও উইকেট স্পিন সহায়ক হলেও অভ্যস্ত না হলে উইকেটের সহায়তা কাজে লাগানো কঠিন। তবে কুনেমান ছিলেন দুর্দান্ত। দিনশেষে তিনি বললেন, অশ্বিন-জাদেজাদের দেখেই তিনি শিখেছেন তা।
“আমি জাদেজা ও অশ্বিনের বিরাট ভক্ত। গত কয়েক বছরে তারা কীভাবে বোলিং করেছেন খুব ভালো করে দেখেছি আমি। জাদেজা যেভাবে ক্রিজের ব্যবহার করে (তা দারুণ)…এবং দিল্লি টেস্ট থেকে সবচেয়ে বড় যে ব্যাপারটি শিখেছি, বল পুরনো হলে যেভাবে সে লেংথ একটু টেনে ধরে।”
“ওই ব্যাপারটিই এই টেস্টে আমি করেছি। উইকেট যখন এতটা নিচু বাউন্সের, তখন খুব বেশি ফুল লেংথ বোলিং করতে চাই না। ৫-৬ মিটার দূরত্বের লেংথে ধারাবাহিক হতে চেয়েছি।”