হাসপাতালে চিকিৎসাধীন নেপালে উড়োজাহাজ বিধ্বস্ত হয়ে নিহত পাইলট আবিদ সুলতানের স্ত্রী আফসানা খানমের শারীরিক অবস্থার অবনতি হয়েছে।
Published : 22 Mar 2018, 12:51 PM
বৃহস্পতিবার রাজধানীর শেরেবাংলা নগরের ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব নিউরো সায়েন্সেস অ্যান্ড হসপিটালের যুগ্ম পরিচালক অধ্যাপক বদরুল আলম সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান।
তিনি বলেন, “আজকের পরিস্থিতি গত কয়েকদিনের তুলনায় খারাপের দিকে। বিশেষ করে ওনার কিডনি ফাংশন কিছুটা কমে আসছে। সেই সাথে অন্যান্য প্যারামিটারগুলোও খারাপের দিকে যাচ্ছে।
“আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি, চিকিৎসা চালিয়ে যাব, যতক্ষণ পর্যন্ত তিনি ভেন্টিলেশন সাপোর্ট নিতে পারেন।”
ইউএস-বাংলার একটি উড়োজাহাজ গত ১২ মার্চ কাঠমান্ডুর ত্রিভুবন বিমানবন্দরে বিধ্বস্ত হলে ২৬ বাংলাদেশিসহ ৪৯ জনের মৃত্যু হয়। ওই ফ্লাইটের প্রধান বৈমানিক ছিলেন বিমান বাহিনীর সাবেক কর্মকর্তা আবিদ সুলতান।
দুর্ঘটনায় স্বামীর মৃত্যুর খবরে আফসানার ‘স্ট্রোক’ হলে গত রোববার শেরেবাংলা নগরের ওই হাসপাতালে তাকে ভর্তি করা হয়। প্রথম দিন মস্তিষ্কে অস্ত্রোপচারের পর পরিস্থিতির অবনতি হলে তাকে নেওয়া হয় লাইফ সাপোর্টে। বুধবার রাতে শেষ হয় ৭২ ঘণ্টার পর্যবেক্ষণ।
“কিডনির যে আউটপুট বলি আমরা, সেটা ক্রমান্বয়ে কমছে। ওনার অবস্থা অবনতির দিকে। কিন্তু ভেন্টিলেশন উইথড্র করা বা সমস্ত সাপোর্টগুলো উইথড্র করার মতো নয়। আগামীকালও চিকিৎসকরা যারা জড়িত, তা দেখবে।”
আফসানার চিকিৎসার জন্য বৃহস্পতিবার হাসপাতালটির পরিচালক অধ্যাপক কাজী দীন মোহাম্মদের নেতৃত্বে গঠিত ১০ সদস্যের মেডিকেল বোর্ড চিকিৎসা চালিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বলেও বদরুল জানান।
আফসানা ‘ক্লিনিকালি ডেড’ কিনা জানতে চাইলে দীন মোহাম্মদ বলেন, “ওনার যে সমস্ত লক্ষণ দেখলাম, তাতে আমরা এখন সম্পূর্ণভাবে এটা বলতে পারব না। আমরা এখন পর্যন্ত চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। তবে তার পরিস্থিতি অনেকটা অবনতির দিকে।”
মানসিক চাপেই তার এমন অবস্থা তৈরি হয়েছে কিনা তা জানতে চাইলে তিনি বলেন, “এটা হতেই পারে। ওনার ডায়াবেটিস ছিল। স্বামীর মৃত্যুতে তিনি মানসিকভাবে অত্যন্ত বিপর্যস্ত ছিলেন। ”
তবে আফসানাকে চিকিৎসার জন্য দেশের বাইরে নেওয়ার সুযোগ নেই জানিয়ে ডা. বদরুল বলেন, “বাইরে নিয়ে যাওয়া সম্ভব হবে না। কারণ যে পরিমাণ ভেন্টিলেশন তার দরকার, সেটা দেওয়া সম্ভব হবে না।”
ইউএস-বাংলার একটি উড়োজাহাজ গত ১২ মার্চ কাঠমান্ডুর ত্রিভুবন বিমানবন্দরে বিধ্বস্ত হলে ২৬ বাংলাদেশিসহ ৪৯ জনের মৃত্যু হয়। ওই ফ্লাইটের প্রধান বৈমানিক ছিলেন বিমান বাহিনীর সাবেক কর্মকর্তা আবিদ সুলতান।
আবিদসহ ওই দুর্ঘটনায় নিহত ২৩ জনের মরদেহ রোববার দেশে ফিরিয়ে এনে আর্মি স্টেডিয়ামে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়।