ডিবি কর্মকর্তা হারুন অর রশীদ বলেছেন, “আমরা একথা এখনও বলছি না যে, মাদকের কারণে সে খুন হয়েছে বা এক নম্বর আসামি যাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে, সে খুন করেছে।”
Published : 12 Nov 2022, 01:57 PM
বুয়েটছাত্র ফারদিন নূর পরশ হত্যাকাণ্ড নিয়ে নানা কথা ছড়ালেও এখনও সুনির্দিষ্ট কোনো তথ্য না পাওয়ার কথা জানিয়েছেন তদন্ত সংস্থা ডিবির কর্মকর্তা হারুন অর রশীদ।
তিনি বলেছেন, “বিভিন্ন বিষয় বিচার-বিশ্লেষণ করে আমরা এখনও কোনো কনক্রিট তথ্য পাইনি। আমাদের কাজ চলছে।
“আমরা একথা এখনও বলছি না যে, মাদকের কারণে সে খুন হয়েছে বা এক নম্বর আসামি যাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে, সে খুন করেছে, এটাও আমরা বলছি না।”
আলোচিত এই হত্যাকাণ্ড নিয়ে শনিবার ডিএমপির মিডিয়া সেন্টারে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে একথা বলেন ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের প্রধান হারুন।
গত ৪ নভেম্বর থেকে নিখোঁজ ফারদিনের লাশ ৭ নভেম্বর নারায়ণগঞ্জের গোদনাইলে শীতলক্ষ্যা নদীর পাড় থেকে উদ্ধার করা হয়।
ফারদিনকে সর্বশেষ দেখেছিলেন তার বন্ধু বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আমাতুল্লাহ বুশরা। ৪ নভেম্বর রাতে রামপুরায় বুশরার কাছ থেকে বিদায় নিয়েছিলেন তিনি।
ফারদিন খুন: বুশরা নিরাপরাধ, বলছেন চাচা
ফারদিনের বাবা কাজী নূরউদ্দিন রানা ছেলের খুনের জন্য বুশরাকে আসামি করে মামলা করার পর তাকে গ্রেপ্তার করে এখন হেফাজতে রেখে জিজ্ঞাসাবাদ করছে ডিবি।
বুশরাকে জিজ্ঞাসাবাদে কোনো নতুন তথ্য মিলেছে কি না, সে বিষয়ে পুলিশ এখনও কিছু জানায়নি।
এ বিষয়ে প্রশ্নে অতিরিক্ত কমিশনার হারুন বলেন, “তার (ফারদিনের) বাবা মামলা রুজু করেছেন। সেই মামলার আসামি করা হয়েছে তারই এক ফ্রেন্ডকে। তাকে আমরা গ্রেপ্তার করেছি।
“কিন্তু আমরা এটা বলছি না, তার বাবা যার নামে মামলা করেছে, সে এর জন্য দায়ী। যেহেতু মামলায় তার নাম এসেছে, রিমান্ডে নেওয়া হয়েছে, তার সঙ্গে আমরা কথা বলছি।”
এদিকে একাধিক সংবাদ মাধ্যমের খবরে বলা হয়েছে, মাদক কিনতে ডেমরার চনপাড়ায় গিয়ে মাদক কারবারিদের পিটুনিতে মৃত্যু হয়েছে ফারদিনের; যদিও তার পরিবার ও বন্ধু-বান্ধবদের দাবি, ফারদিন কখনও মাদকাসক্ত ছিলেন না।
এ বিষয়ে প্রশ্নে ডিবি কর্মকর্তা হারুন বলেন, “ডিবির পক্ষ থেকে আমরা কখনোই বলি নাই, সে চনপাড়া গিয়ে মাদকের কারণে খুন হয়েছে। আমরা প্রকৃত ঘটনা এখনও বের করতে পারি নাই।”
ফারদিন হত্যা: চনপাড়ার মাদক কারবারিদের খোঁজে পুলিশ
হিসাব মেলাতে পারছেন না ফারদিনের সহপাঠী-স্বজনরা
ফারদিনের লাশ উদ্ধারের পর ময়নাতদন্ত করে চিকিৎসকরা হত্যার আলামত পাওয়ার কথা জানান। তবে তার মোবাইল ফোন, মানিব্যাগ, ঘড়ি সব লাশের সঙ্গেই পাওয়া গিয়েছিল।
ফারদিন ৪ নভেম্বর রাতে রামপুরা থেকে সদরঘাটের দিকে গিয়েছিলেন বলে তার মোবাইল ফোন ট্র্যাক করে জানতে পারার কথা বলেছিল রামপুরা থানা পুলিশ। তার মোবাইল ফোনের সর্বশেষ অবস্থান ছিল বুড়িগঙ্গা নদীর তীরে কেরানীগঞ্জে।
তাহলে শীতলক্ষ্যা নদীতে লাশ পাওয়াসহ তাকে কোথায়, কীভাবে, কারা হত্যা করেছে, সেই সব প্রশ্নের উত্তর এখনও মিলছে না।
ডিবি কর্মকর্তা হারুন বলেন, “সে (ফারদিন) ঢাকার শহরে যেখানে যেখানে গিয়েছে, আমরা টেকনিক্যালি সবকিছু বের করেছি। মোবাইলের লোকেশন বা বিভিন্ন জায়গায় যে কথা বলেছে, সবকিছু মিলে আমার মনে হয়েছে, ঢাকার শহরের কোনো একটা জায়গায় সে খুন হয়েছে।”
মাদক কারবারিদের হাতে ফারদিনের খুন হওয়ার বিষয়টি ঠিক কি না- এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, “ডিবি কাউকে এমন তথ্য দেয়নি। এরকম কোনো কিছু ডিবি থেকে বলা হয়নি। কারণ আমাদের টিম কাজ করছে।
“এটা সুরাহা করতে বিভিন্ন দিক থেকে চেষ্টা করছি, বিভিন্ন বিষয় আমরা বিচার-বিশ্লেষণ করছি। ডিবির বিভিন্ন টিম রাত-দিন অক্লান্ত পরিশ্রম করছে। শিগগিরই আমরা একটা সুরাহা পাব।”
বুয়েটছাত্র ফারদিনের লাশ উদ্ধারের পর অনেক প্রশ্নের উত্তর মিলছে না