শুধু ব্যায়ামে ওজন কমে না। পাশাপাশি চাই বিশ্রাম, পুষ্টিকর খাবার ও অতিরিক্ত খাওয়া এড়ানো।
Published : 14 Mar 2023, 01:30 PM
ডায়েট আর ব্যায়ামের পরও ওজন না কমার নানান কারণ থাকতে পারে।
তবে কয়েকটি কাজ ছাড়তে না পারলে ওজন কমানোর চেষ্টা ব্যর্থ হবেই।
দেহের বাড়তি মেদ ঝরাতে মনোযোগ, অধ্যাবসায়, নিয়ম মেনে চলার মতো বিষয়গুলো পাশাপাশি কয়েকটি অভ্যাসও ত্যাগ করতে হয়।
অমনযোগী হয়ে খাওয়া
খাওয়ার সময় মনযোগ না দিলে বেশি খেয়ে ফেলার সম্ভাবনা থাকে। ফলাফল বেশি ক্যালরি গ্রহণ করা।
এই বিষয়ে ‘ফাইন্ডইয়োরট্রেইনার ডটকম’য়ের ব্যায়াম প্রশিক্ষক ভিক্টোরিয়া ব্র্যাডি বলেন, “যে কোনো খাবার, সেটা স্বাস্থ্যকর হলেও বেশি খাওয়া মানেই খারাপ।”
তিনি ইটদিস নটদ্যাট ডটকম’য়ে প্রকাশিত প্রতিবেদনে ব্যাখ্যা করেন, “বরং নিয়ন্ত্রিত পরিমাণে খাওয়ার অভ্যাস গড়ার মাধ্যমে অতিরিক্ত ক্যালরি গ্রহণ এড়ানো যায়। তাই কী খাচ্ছেন সেটা লক্ষ্য রাখার পাশাপাশি সারাদিনে খাওয়ার পরিমাণও কমাতে হবে।”
খাবার না খাওয়া
“কোনো একবেলা না খেয়ে থাকলে শরীর ‘সার্ভাইভাল মুড’য়ে চলে যায়”, বলেন ব্র্যাডি।
এর মানে হল শক্তি জমিয়ে রাখতে দেহ ক্যালরি খরচের পরিমাণ কমিয়ে দেয়।
তিনি আরও বলেন, “তাছাড়া খিদা পেটে বাজে খাবার বেছে নেওয়ার সম্ভাবনাও বাড়ে। দুপুরে না খেয়ে থাকলে বিকাল সন্ধ্যায় খিদার জন্য হয়ত কোনো ফাস্ট ফুড খাওয়া হয়ে যাবে। কারণ এই ধরনের খাবারগুলো দ্রুত হাতের কাছে পাওয়া যায়। আর খালি পেটে মুখরোচক খাবারের প্রতি আকর্ষণ জন্মায় বেশি।”
ক্যালরি পান করা
হতে পারে ফলের রস কিংবা অন্য কোনো পানীয়; মাথায় রাখতে হবে এসব তরল থেকে অতিরিক্ত ক্যালরি গ্রহণ করা হতে পারে।
ব্র্যাডলি বলেন, “বেশিরভাগ মানুষই খেয়াল করেন না, পানীয়র মাধ্যমে কী পরিমাণ ক্যালরি গ্রহণ করা হয়ে যায়। কারণ বাজারে পাওয়া ফলের জুস কিংবা কোমল পানীয়তে প্রচুর পরিমাণে চিনি থাকে।”
বেশি পরিমাণে চিনি গ্রহণের ফলে ওজন বাড়ে। আবার অ্যালকোহল সেবনের অভ্যাসও ক্যালরি গ্রহণের পরিমাণ বাড়ায় আর দেহের বিপাক প্রক্রিয়াকে ধীর করে দেয়।
পর্যাপ্ত বিশ্রাম না নেওয়া
রাতের ঘুমের সাথে কোনো কিছুর তুলনা হয় না। যতই ব্যায়াম করা হোক, পর্যাপ্ত বিশ্রাম না নিলে ওজন বাড়বেই।
ব্র্যাডি বলেন, “অপর্যাপ্ত ঘুমের কারণে শরীরের ক্ষয় পূরণ হয় না, হরমোনের ভারসাম্য ঠিক থাকে না। ফলে ক্যালরিবহুল ও কার্বোহাইড্রেট সমৃদ্ধ খাবারের প্রতি আকর্ষণ জন্মায়।”
এছাড়া বিশ্রাম ছাড়া অতিরিক্ত ব্যায়ামের ফলে দেহের ভেতর আঘাত পাওয়ার সম্ভাবনাও বাড়ে।
পুষ্টি গ্রহণের চাইতে ব্যায়ামের প্রতি বেশি নজর দেওয়া
ওজন কমাতে শরীরচর্চার প্রয়োজনীয়তার কথা নতুন করে বলার কিছু নেই। তবে ব্যায়াম ও পুষ্টি গ্রহণের মধ্যে স্বাস্থ্যকর ভারসাম্য না থাকলে কোনো ফল পাওয়া যাবে না।
ব্র্যাডির ভাষায়, “বাজে খাদ্যাভ্যাসের ফলে ব্যায়াম থেকে কোনো সুফল পাওয়া যায় না।”
তিনি ব্যাখ্যা করেন, “এক্ষেত্রে ৮০/২০ নিয়ম মানা দরকার। কী খাওয়া হচ্ছে সেটার ওপর শতকরা ৮০ভাগ নির্ভর করবে কতটা ওজন কমবে। আর শতকরা ২০ভাগ নির্ভর করে আপনি কী করছেন সেটার ওপর; যেমন ব্যায়াম।”
যতই ব্যায়াম করা হোক, ক্যালরি গ্রহণ বেশি করলে ওজন কমবে না। এজন্য মাথায় রাখতে হবে ক্যালরি গ্রহণের পরিমাণের চাইতে, খরচের পরিমাণ বেশি হতে হবে। আর সারাদিনে কাজ ও ব্যায়াম করে খুব কম পরিমাণ ক্যালরি খরচ করা যায়।
এই কারণে ব্র্যাডি পরামর্শ দেন, “ওজন কমাতে পুষ্টিকর খাবার খাওয়ার পাশাপাশি ক্যালরি গ্রহণের মাত্রার দিকেও নজর দিতে হবে।”
আরও পড়ুন