যে স্থানটিতে মন্দিরটি নির্মাণ করা হয়েছে সেখানে রামের জন্ম হয়েছিল বলে হিন্দু ধর্মাবলম্বী লাখ লাখ মানুষ বিশ্বাস করে।
Published : 22 Jan 2024, 09:49 AM
অযোধ্যায় হিন্দুদের জনপ্রিয় দেবতা রামের নামে তৈরি করা বিশাল মন্দিরের উদ্বোধন করতে যাচ্ছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী।
যে স্থানটিতে মন্দিরটি নির্মাণ করা হয়েছে সেখানে রামের জন্ম হয়েছিল বলে হিন্দু ধর্মাবলম্বী লাখ লাখ মানুষ বিশ্বাস করে।
এক সময় এই স্থানটিতে একটি মসজিদ ছিল। ১৬ শতকে নির্মিত মসজিদটির নাম ছিল বাবরি মসজিদ। ১৯৯২ সালে কট্টরপন্থি হিন্দু জনতা মসজিদটি গুড়িয়ে দেওয়ার পর সৃষ্ট দাঙ্গায় প্রায় ২০০০ মানুষ নিহত হয়েছিল। রাম যেখানে জন্মেছিলেন ঠিক সেই জায়গায় হিন্দু এই দেবতারা একটি মন্দিরের ধ্বংসাবশেষের ওপরে মুসলিম আক্রমণকারীরা মসজিটটি নির্মাণ করেছিল বলে দাবি তাদের।
এই মন্দির নির্মাণ মোদীর হিন্দু জাতীয়তাবাদী ভারতীয় জনতা পার্টির (বিজেপি) একটি কেন্দ্রীয় প্রতিশ্রুতি। ৩৫ বছরের পুরনো এই বিতর্কিত রাজনৈতিক ইস্যুতে ভর করেই বিজেপি প্রাধান্য বিস্তার করেছে ও ক্ষমতায় এসেছে, জানিয়েছে রয়টার্স।
কিন্তু মন্দির উদ্বোধনের এই বিশাল আয়োজন থেকে নিজেদের দূরে সরিয়ে রেখেছেন ভারতের কিছু হিন্দু ধর্মগুরু ও অধিকাংশ বিরোধীদল। রাজনৈতিক লাভের জন্য মোদী এই মন্দির নির্মাণ ও এর উদ্বোধনকে ব্যবহার করছেন বলে মত তাদের।
বিবিসি জানিয়েছে, ৭০ একরের একটি কমপ্লেক্সের ৭ দশমিক ২ একর জায়গাজুড়ে তিন তলা মন্দিরটি বানানো হয়েছে। নির্মাণে ব্যবহার করা হয়েছে গোলাপি চুনাপাথর ও কালো গ্রানাইট পাথর। আর এতে ব্যয় হয়েছে ২১ কোটি ৭০ লাখ রুপি।
মোদী শুধু মন্দিরের নিচ তলাটি উদ্বোধন করবেন। মন্দিরের বাকি অংশেরর নির্মাণ কজ চলতি বছরের শেষ নাগাদ সম্পন্ন হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
সোমবার রামমন্দিরের উদ্বোধন উপলক্ষ্যে অযোধ্যায় ব্যাপক আয়োজন করা হয়েছে। ভারতের বিভিন্ন এলাকা থেকে আসা প্রায় ৮০০০ আমন্ত্রিত অতিথি উদ্বোধনের সময় উপস্থিত থাকবেন। এদিন স্থানীয় সময় সকাল ১০টার পর মোদী অযোধ্যায় পৌঁছবেন বলে খবর ভারতীয় গণমাধ্যমের।
আনন্দবাজার পত্রিকা জানিয়েছে, মোদী সকাল ১০টা ২৫ মিনিটের দিকে অযোধ্যার বাল্মীকি বিমানবন্দরে নামবেন। এখন থেকে হেলিকপ্টার যোগে রওনা হয়ে ১০টা ৪৫ মিনিটে অযোধ্যার হেলিপ্যাডে পৌঁছবেন। এর ১০ মিনিটের মধ্যে তিনি রামমন্দির প্রাঙ্গণে পৌঁছে যাবেন।
এরপর উদ্বোধনী অনুষ্ঠান শুরু হবে দুপুর ১২টা থেকে। তবে মন্দির প্রাঙ্গণে পৌঁছার পর ঘন্টাখানেক মোদী মন্দিরের ভেতরে থাকলেও কী করবেন তা জানানো হয়নি।
এদিনের অনুষ্ঠানকে ‘প্রাণপ্রতিষ্ঠা’ বলা হচ্ছে। ১২টা ৫ মিনিটে মন্দিরে স্থাপিত বিগ্রহে এই ‘প্রাণপ্রতিষ্ঠা’র আচার শুরু হবে। ১২টা ৫৫ মিনিটে আচার-অনুষ্ঠান সেরে মন্দির থেকে বের হবে মোদী।
পরে মন্দিরের কাছেই আয়োজিত একটি জনসভায় ভাষণ দেবেন। এরপর তার অযোধ্যার গুরুত্বপূর্ণ দর্শনীয় স্থান কুবের টিলায় যাওয়ার কথা রয়েছে।
সোমবার উদ্বোধন হলেও এদিন শুধু আমন্ত্রিত অতিথিরা মন্দিরে প্রবেশ করতে পারবেন। আর সাধারণ দর্শনার্থীরা মঙ্গলবার থেকে সকাল ও বিকালে নির্ধারিত সময়ে মন্দিরে প্রবেশ করতে পারবেন।