ইরান ১২ দিনেই পারমাণবিক বোমার উপাদান তৈরিতে সক্ষম : যুক্তরাষ্ট্র

আগে একটি পরমাণু বোমা বানানোর জন্য ‘ফিসাইল ম্যাটেরিয়াল’ তৈরিতে ইরানের প্রায় ১২ মাস লাগত। এখন লাগে প্রায় ১২ দিন- বলেছেন শীর্ষ এক মার্কিন প্রতিরক্ষা কর্মকর্তা।

রয়টার্স
Published : 1 March 2023, 04:53 PM
Updated : 1 March 2023, 04:53 PM

ইরান প্রায় ১২ দিনেই একটি পারমাণবিক বোমা বানানোর জন্য মূল উপাদান ‘ফিসাইল ম্যাটেরিয়াল’ যথেষ্ট পরিমাণে তৈরি করতে সক্ষম বলে জানিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের একজন শীর্ষ কর্মকর্তা।

মঙ্গলবার হাউজ অব রিপ্রেজেনটেটিভসে একটি শুনানিতে এক রিপাবলিকান আইনপ্রণেতা প্রশ্ন করেন, জো বাইডেন প্রশাসন কেন জয়েন্ট কমপ্রিহেনসিভ প্ল্যান অফ অ্যাকশন (জেসিপিওএ) বা ‘ইরান পরমাণু চুক্তিটি’ পুনরুজ্জীবিত করতে চেয়েছিল?

তার জবাব দিতে গিয়েই ডিফেন্স ফর পলিসি বিভাগের আন্ডার সেক্রেটারি কলিন কাহল একথা বলেন।

কাহল বলেন, ‘‘কারণ আমরা জেসিপিওএ থেকে নিজেদের প্রত্যাহার করে নেওয়ার পর ইরানের পরমাণু প্রকল্পে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি হয়েছে। ২০২৮ সালে যখন যুক্তরাষ্ট্রের আগের সরকার জেসিপিওএ থেকে সরে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেয় তখন একটি পরমাণু বোমা তৈরির জন্য প্রয়োজনীয় ‘ফিসাইল ম্যাটেরিয়াল’ বানাতে ইরানের প্রায় ১২ মাসের মত সময় লাগত। এখন লাগে মাত্র ১২ দিন।

‘‘তাই আমি মনে করি, এখনও এটা ভেবে দেখা যায় যে, আপনি যদি এই সমস্যাটি কূটনৈতিকভাবে সমাধান করতে চান এবং তাদের পারমাণবিক কর্মসূচিতে আগের বাধাগুলি ফিরিয়ে আনতে পারেন তবে এটি অন্যান্য বিকল্পের চেয়ে ভাল হবে। যদিও এই মুহূর্তে জেসিপিওএ অচল হয়ে আছে।”

যুক্তরাষ্ট্রের কর্মকর্তারা বারবার ইরানের একটি পরমাণু বোমা বানানোর জন্য প্রয়োজনীয় উপকরণ তৈরি করতে কত সময় লাগবে তা হিসাব করে বের করার চেষ্টা করেছেন। তারা বলেছেন, কয়েক সপ্তাহ লাগবে। কিন্তু কাহলের মতো এত স্পষ্ট করে কেউ আগে বলেননি।

২০১৫ সালে নিজেদের পরমাণু প্রকল্প নিয়ে বিশ্বের ছয় শক্তিধর দেশের সঙ্গে একটি চুক্তিতে উপনীত হয়েছিল ইরান। ওই চুক্তি অনুযায়ী, তেহরান তাদের ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণের গতি কমিয়ে আনবে। বিনিময়ে দেশটির উপর থেকে ধীরে ধীরে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়া হবে।

শুরুতে উভয় পক্ষই চুক্তির শর্ত অনুযায়ী অগ্রসর হলেও গোল বাধে ডনাল্ড ট্রাম্প যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট হওয়ার পর। ২০১৬ সালে ক্ষমতা গ্রহণের পর ট্রাম্প শুরু থেকেই ইরান পরমাণু চুক্তি নিয়ে অসন্তোষ জানিয়ে আসছিলেন। ২০১৮ সালে তিনি যুক্তরাষ্ট্রকে ওই চুক্তি থেকে প্রত্যাহার করে নেন।

বাকি দেশগুলো চুক্তি বাঁচিয়ে রাখতে চেষ্টা করলেও তেহরান তাদের পরমাণু কার্যক্রমের গতি পুনরায় বাড়িয়ে দেয়। যদিও দেশটির দাবি, তাদের পরমাণু কার্যক্রমের লক্ষ্য পুরোটাই বেসামরিক। পরমাণু বোমা বানানো তাদের লক্ষ্য নয়।

যুক্তরাষ্ট্রের বর্তমান প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন নির্বাচনী প্রচারের সময়ই বলেছিলেন, তিনি ক্ষমতায় গেলে ইরান যদি চুক্তির শর্ত পুরোপুরি অনুসরণ করে তবে তিনি যুক্তরাষ্ট্রকে ওই চুক্তিতে ফিরিয়ে নেবেন। কিন্তু গত দুই বছরে এ বিষয়ে তেমন কোনো অগ্রগতি দেখা যায়নি।