শ্রীলঙ্কার সংকট: দুই রাজাপাকসে ভাইসহ ১৩ কর্মকর্তাকে দায়ী করেছে আদালত

টিআইএসএল এর পিটিশনে বর্তমান প্রেসিডেন্ট রনিল বিক্রমাসিংহের নামও রয়েছে।

নিউজ ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 15 Nov 2023, 02:53 PM
Updated : 15 Nov 2023, 02:53 PM

বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ আশঙ্কাজনক পর্যায়ে নেমে গিয়ে গত বছর শ্রীলঙ্কা যে চরম অর্থনৈতিক সংকটে পড়ে তার জন্য দেশটির সর্বোচ্চ আদালত সাবেক প্রেসিডেন্ট গোটাবায়া রাজাপাকসে এবং তার ভাই সাবেক প্রধানমন্ত্রী মাহিন্দ্রা রাজাপাকসেসহ আরো ১৩ সাবেক সরকারি কর্মকর্তাকে দায়ী করেছে।

বিবিসি জানায়, ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল শ্রীলঙ্কা (টিআইএসএল) এবং আরো কয়েকটি দুর্নীতি বিরোধী সংস্থার করা পিটিশনে মঙ্গলবার এই রায় দেওয়া হয়।

টিআইএসএল এর পিটিশনে বর্তমান প্রেসিডেন্ট রনিল বিক্রমাসিংহের নামও রয়েছে বলে জানায় বার্তা সংস্থা রয়টার্স। সে সময় তিনি প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্বে ছিলেন।

সুপ্রিম কোর্টের রায়ে বলা হয়, তাদের ‘কার্যক্রম, অবক্ষয় এবং আচরণ’ ওই সংকটকে উস্কে দিয়েছে। তাবে তাদের কোনো সাজা ঘোষণা করা হয়নি।

২০২২ সালের শুরুর দিকে ভারত মহাসাগরের ছোট্ট এই দ্বীপরাষ্ট্রটির বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ একবারে তলানিতে গিয়ে ঠেকে। যে কারণে তারা খাবার, ওষুধ ও জ্বালানির মত অতি জরুরি পণ্যও আমদানি করতে ব্যর্থ হয়। বিদেশি ঋণ পরিশোধ করতে না পেরে এক পর্যায়ে দেশটির সরকার নিজেদের ‘দেউলিয়া’ ঘোষণা করে।

আমদানির অভাবে খাদ্যপণ্য সহ নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের দাম আকাশ ছুঁয়ে যায়, দেখা দেয় চরম মূল্যস্ফীতি। যার জেরে দেশেজুড়ে তীব্র বিক্ষোভের ফলে ক্ষমতা ছেড়ে দিতে বাধ্য হন গোটাবায়া রাজপাকসে। কিন্তু তাতেও দমেনি বিক্ষোভ। এক পর্যায়ে দুই রাজাপাকসে ভাই দেশ ছেড়েই পালিয়ে যান। পরে অবশ্য গোটাবায়া দেশে ফিরে আসেন।

গত বছর সেপ্টেম্বরে শ্রীলঙ্কায় মূল্যস্ফীতি ছিল সর্বোচ্চ ৬৯ দশমিক ৮ শতাংশ। তবে এখন সে অবস্থার পরিবর্তন হয়েছে। দেশটির অর্থনীতি ঘুরে দাঁড়াতে শুরু করেছে।

মঙ্গলবার পাঁচ সদস্যের বিচারপতি বেঞ্চ ৪-১ এ এই মতে উপনীত হয় যে, অর্থনীতি নিয়ে নয়ছয় করে এই নেতারা শ্রীলঙ্কার জনগণের সাংবিধানিক অধিকার লঙ্ঘন করেছে।

দুই রাজপাকসে ভাই ছাড়াও অভিযুক্ত বাকিদের মধ্যে আছেন সাবেক অর্থমন্ত্রী বাসিল রাজাপাকসে এবং দেশটির কেন্দ্রীয় ব্যাংকের দুই সাবেক গভর্নর।

গত বছর ভয়াবহ ওই অর্থনৈতিক সংকটের সময় শ্রীলঙ্কায় দিনে ১৩ ঘণ্টার বেশি লোডশেডিং হতো।

পরে সংকট কাটিয়ে উঠতে দেশটি আইএমএফ থেকে তিন বিলিয়ন ডলার বেলই আউট পেয়েছে। তবে চুক্তি অনুযায়ী এজন্য দেশটিকে কঠোর কিছু লক্ষ্য অর্জন করতে হবে।

এ বছর নভেম্বরে দেশটির বৈদেশিক ঋণের পরিমাণ ৪৬ দশমিক ৯ বিলিয়ন মার্কিন ডলারে গিয়ে ঠেকেছে। ওই ঋণের প্রায় ৫২ শতাংশই দিয়েছে চীন। যারা দেশটির সর্বোচ্চ ঋণদাতা দেশ।