অস্ট্রেলিয়ার কিথ সিমস নামের এই ব্যক্তি বিভিন্ন সময়ে ‘বন্দাই বিস্ট’ কিংবা ‘ট্র্যাকস্যুট রেপিস্ট’ নামে পরিচিতি পেয়েছিলেন।
Published : 22 Nov 2022, 05:43 PM
তিন দশক ধরে সিডনিতে ত্রাস সৃষ্টি করে রাখা এক সিরিয়াল ধর্ষককে প্রায় ৪০ বছর পর শনাক্ত করেছে অস্ট্রেলিয়ার পুলিশ।
পুলিশ বলছে, কিথ সিমস নামের এই ব্যক্তি ১৯৮৫ থেকে ২০০১ সাল পর্যন্ত ৩১ জন নারীকে নিশানা করেছিলেন। এই নারীদের বাড়িতে ঢুকে কিংবা তারা যখন প্রাতভ্রমণে বের হতেন, তখন কিথ তাদের ওপর হামলা করেন।
প্রাথমিকভাবে গোয়েন্দাদের ধারণা ছিল, একাধিক পুরুষ একাজ করেছে। কিন্তু নতুন ডিএনএ প্রযুক্তির মাধ্যমে জানা যায়, সব ঘটনা একজনই ঘটিয়েছিলেন। তার নাম সিমস। গত ফেব্রুয়ারিতে ৬৬ বছর বয়সে সিমস মারা যান।
এই ব্যক্তি বিভিন্ন সময়ে ‘বন্দাই বিস্ট’ কিংবা ‘ট্র্যাকস্যুট রেপিস্ট’ নামে পরিচিতি পেয়েছিলেন।
বিবিসি জানায়, ১৯৮৫ সালে প্রথম ক্লোভেলির সমুদ্রতীরবর্তী শহরতলীতে সিমস প্রথম হামলাটি করেন। আর শেষ হামলা করেছিলেন ২০০১ সালে কাছের একটি কবরস্থানে।
প্রথমে হামলার প্রতিটি ঘটনাই পৃথকভাবে তদন্ত করা হয়েছিল। তবে ২০০০ সালের দিকে পুলিশ সব ঘটনার সঙ্গে একটি যোগসূত্র খুঁজে পেতে শুরু করে। পরে দেখা যায়, ঘটনার শিকার হওয়া ১২ জনের কাছ থেকে পাওয়া ডিএনএ নমুনা একই। এ ছাড়া আরও ১৯টি হামলার ধরনও একই।
হামলার শিকার হওয়া নারীদের বয়স ছিল ১৪ থেকে ৫৫ বছর। তারা প্রত্যেকেই হামলাকারীর একই বর্ণনা দিয়েছেন। বলেছেন, হামলাকারী ১৬০ থেকে ১৮০ সেন্টিমিটার লম্বা ছিলেন। তার গায়ের রং কালো, চোখ বাদামি আর নাক ছিল চওড়া।
তিনি মুখ ঢেকে রাখতেন, সাধারণ পোশাক পরতেন। যেমন ট্র্যাকস্যুট, হুডি বা ফুটবল শর্টস। তিনি বেশির ভাগ সময় ছুরি দিয়ে হামলার হুমকি দিতেন অথবা বলতেন, তার কাছে অস্ত্র আছে।
তদন্তকারীরা ২০১৯ সালের দিকে প্রথম বড় ধরনের অগ্রগতি অর্জন করেন। পুলিশের ডেটাবেইসে একটি পারিবারিক ডিএনএ খুঁজে পান তারা। এরপর এ বছরের সেপ্টেম্বরে সিমসের ডিএনএ-এর সঙ্গে হামলার শিকারদের কাছ থেকে পাওয়া ডিএনএ নমুনার নিখুঁত মিল পাওয়া যায়।
স্থানীয় গণমাধ্যমের খবরে বলা হচ্ছে, নিজ পরিবার ও বন্ধুবান্ধবরা সিমসকে একজন চমৎকার বাবা, দাদা এবং ভাল একজন মানুষ হিসাবেই বর্ণনা করেছে।
যে গোয়েন্দা কর্মকর্তা সিমসের পরিবারের কাছে খবরটি দিয়েছেন, তিনি বলেছেন, “তার (সিমস) পরিবারের মানুষরা বিস্মিত হয়েছেন। সিমস এমন কাজ করতে পারেন, তারা তা বিশ্বাসই করতে পারছেন না।”
গোয়েন্দা সার্জেন্ট শেলি জনস দ্য ডেইলি টেলিগ্রাফকে বলেছেন, “আমরা তার স্ত্রীর সঙ্গে দেখা করেছি। তিনি এমন খবর শুনে একেবারে হতবাক হয়ে গেছেন। তিনি বিশ্বাসই করতে পারছেন না, যে মানুষটিকে এত দিন ধরে চিনতেন, সেই মানুষ এমন কাজ করতে পারেন।”
তদন্তকারীরা ক্ষতিগ্রস্তদের সঙ্গে যোগাযোগ করে জানিয়েছেন যে, তাদের আক্রমণকারীকে শনাক্ত করা হয়েছে। তবে তিনি মারা যাওয়ায় তার বিরুদ্ধে কোনও আইনি ব্যবস্থা নেওয়া যাচ্ছে না।