পাইলট স্বামী মারা যান বিমান দুর্ঘটনায়; ১৭ বছর পর পোখারায় একই পরিণতি স্ত্রীর

বিমান দুর্ঘটনায় স্বামীকে হারানোর পর তার স্বপ্ন নিজের করে নিয়েছিলেন অঞ্জু। শপথ করেছিলেন, একদিন পাইলট হবেন।  

নিউজ ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 16 Jan 2023, 05:16 AM
Updated : 16 Jan 2023, 05:16 AM

পোখারায় নামলেই ১০০ ঘণ্টা ওড়ার অভিজ্ঞতা পূর্ণ হত; ইয়েতি এয়ারলাইন্সের কো পাইলট অঞ্জু খাতিওয়াদা পেতেন ক্যাপ্টেন হওয়ার লাইসেন্স।

রোববার তার সেই স্বপ্ন বিধ্বস্ত হয়েছে বিমানটির সঙ্গেই। ১৭ বছর আগে এক বিমান দুর্ঘটনায় পাইলট স্বামীকে হারানো অঞ্জুর জীবনেও ঘটেছে একই পরিণতি। 

কাঠমান্ডু থেকে ৭২ জন আরোহী নিয়ে উড়ে পর্যটন নগরী পোখরায় নামার পথে ইয়েতি এয়ারলাইন্সের এটিআর ৭২-৫০০ উড়োজাহাজটি বিধ্বস্ত হয় রোববার সকালে।

ওই ফ্লাইটে যাত্রী ছিলেন ৬৮ জন, বাকিরা ক্রু। ক্যাপ্টেন কামাল কেসির সঙ্গে কো পাইলটের আসনে ছিলেন অঞ্জু খাতিওয়াদা। 

উদ্ধার অভিযানে থাকা নেপালের সেনাবাহিনী সোমবার সকালে জানিয়েছে, ধ্বংসস্তূপের মধ্যে কাউকে জীবিত পায়নি তারা।

নেপালি সংবাদমাধ্যম লোকান্তর এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, ২০০৬ সালের ১২ জুন অঞ্জুর স্বামী দীপক পোখারেলও ইয়েতি এয়ারলাইন্সের এক বিমান দুর্ঘটনায় মারা যান।

দীপক ছিলেন সেই ফ্লাইটের কো-পাইলট; জুমলা বিমানবন্দরে সেই দুর্ঘটনায় দীপকসহ নয়জনের প্রাণ যায়।

সেই দুর্ঘটনার পর অঞ্জু তার স্বামীর স্বপ্ন নিজের করে নিয়েছিলেন। শপথ করেছিলেন, একদিন পাইলট হবেন।  

যুক্তরাষ্ট্রে পাইলটিং কোর্স শেষ করে ২০১০ সালে নেপালে ফেরেন অঞ্জু। তার পেশাগত জীবন শুরু হয় এটিআর উড়োজাহাজ দিয়ে।

নেপালে অভ্যন্তরীণ রুটে যেসব উড়োজাহাজ ব্যবহার করা হয়, তার মধ্যে এটিআরই সবচেয়ে বড়। রোববার ইয়েতি এয়ারলাইন্সের একটি এটিআরেই তার জীবনাবসান হয়।

অঞ্জুর স্বামী দীপক পোখারেল ছিলেন সামরিক হেলিকপ্টারের পাইলট। পরে তিনি ইয়েতি এয়ারলাইন্সে যোগ দেন বাণিজ্যিক ফ্লাইটের কো পাইলট হিসেবে।

এক আত্মীয় দুঃখ করে লোকান্তরকে বলেন, এ এক বিরল কাকতালীয় ঘটনা, স্বামী ও স্ত্রী দুজনেই ছিলেন বৈমানিক, দুজনই বিমান দুর্ঘটনায় মারা গেছেন এত বছরের ব্যবধানে।

নেপালের বিরাটনগর থেকে স্কুল শেষ করে ভারতে গিয়ে উচ্চ শিক্ষা নেন অঞ্জু্। দীপক ও তার মেয়ের বয়স এখন ২২ বছর।

পাইলট হওয়ার পর কাঠমান্ডুর ব্যবসায়ী সুভাষ কেসিকে বিয়ে করেছিলেন অঞ্জু। সেই সংসারে সাত বছরের একটি ছেলে রয়েছে।