যুদ্ধবিরতির মেয়াদ আরও বাড়ানোর জন্য আন্তর্জাতিক চাপ আছে আর লড়াইরত পক্ষগুলোও এ বিষয়ে সম্মত হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
Published : 29 Nov 2023, 09:36 AM
ইসরায়েল ও ফিলিস্তিনি স্বাধীনতাকামী গোষ্ঠী হামাসের মধ্যে চলমান যুদ্ধবিরতির পঞ্চম দিনে ১২ জিম্মি এবং ৩০ ফিলিস্তিনি বন্দি মুক্তি পেয়েছে।
ইসরায়েল জানিয়েছে, মঙ্গলবার রাতে গাজা থেকে মুক্তি পাওয়া আরেক দল জিম্মি ইসরায়েলে ফিরেছে, তাদের মধ্যে ১০ জন ইসরায়েলের নাগরিক অপর দুইজন থাইল্যান্ডের।
এই নিয়ে যুদ্ধবিরতির পাঁচ দিনে গাজায় বন্দি প্রায় ২৪০ জন জিম্মির মধ্যে ৮১ জন মুক্তি পেল। এদের মধ্যে ৬১ জন ইসরায়েলি আর তাদের সবাই নারী ও শিশু।
মঙ্গলবার ১০ ইসরায়েলি জিম্মির বিনিময়ে ইসরায়েল তাদের কারাগারে বন্দি থাকা আরও ৩০ ফিলিস্তিনিকে মুক্তি দিয়েছে। এই নিয়ে পাঁচ দিনে মুক্তি পাওয়া ফিলিস্তিনির সংখ্যা ১৮০ জনে দাঁড়িয়েছে। এদেরও সবাই নারী ও শিশু।
তবে ইসরায়েল একদিকে ফিলিস্তিনি বন্দিদের মুক্তি দিলেও যুদ্ধবিরতির প্রথম চারদিনে তারা পূর্ব জেরুজালেম ও পশ্চিম তীর থেকে ১৩৩ জন ফিলিস্তিনিকে গ্রেপ্তার করেছে বলে ফিলিস্তিনি প্রিজনার অ্যাসোসিয়েশন জানিয়েছে।
ইসরায়েলের কারাগার থেকে মুক্তি পাওয়া ১৪ বছরের এক ফিলিস্তিনি বালক আল জাজিরাকে জানিয়েছেন, তাকে তার বাড়ির বাইরে না যেতে ও মুক্তি উদযাপন না করতে বলেছে ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষ, এমন কিছু করলে তাকে আবার গ্রেপ্তার করা হতে পারে বলে সতর্ক করেছে।
যেসব ফিলিস্তিনি মুক্তি পেয়েছেন, তাদের ইসরায়েলের তৈরি করা ৩০০ ফিলিস্তিনি বন্দির একটি তালিকা থেকে বেছে নেওয়া হয়েছে। এসব বন্দির বিরুদ্ধে পাথর ছোড়া, উত্তেজনা সৃষ্টি ও খুনের চেষ্টার অভিযোগ আছে।
গত ৭ অক্টোবর গাজার সীমান্ত সংলগ্ন ইসরায়েলের দক্ষিণাঞ্চলে এক নজিরবিহীন হামলা চালায় হামাস। তাদের এই হামলার ব্যাপকতা সবাইকে হতবাক করে দেয় এবং সাধারণ ইসরায়েলিরা হতভম্ব হয়ে পড়ে। এই হামলায় ১২০০ জন নিহত হয়েছে এবং তাদের অধিকাংশই বেসামরিক বলে ইসরায়েল জানিয়েছে। ওই দিন প্রায় ২৪০ জনকে বন্দি করে গাজায় নিয়ে জিম্মি করে রাখে হামাস।
হামাসের হামলার প্রতিশোধ নিতে প্রায় সবদিক থেকে গাজা অবরুদ্ধ করে ভয়াবহ আক্রমণ শুরু করে ইসরায়েল। তাদের অবিরাম বোমাবর্ষণ ও গোলা হামলায় ১৫ হাজারেরও বেশি গাজাবাসী ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে, এদের প্রায় ৪০ শতাংশ শিশু।
গাজায় ৪৮ দিন ধরে ইসরায়েলের অবিরাম হামলা চালানোর পর কাতার ও মিশরের মধ্যস্থতায় চার দিনের কথিত ‘মানবিক’ যুদ্ধবিরতি শুরু হয়। গত ২৪ নভেম্বর থেকে প্রায় ধ্বংস হয়ে যাওয়া গাজায় শুরু হওয়া অস্থায়ী এই যুদ্ধবিরতি ২৭ নভেম্বর (সোমাবার) শেষ হয়ে যাওয়ার কথা ছিল। কিন্তু কাতারের মধ্যস্থতায় মেয়াদ আরও দুই দিন বাড়াতে রাজি হয় ইসরায়েল ও হামাস। ইসরায়েলের ঘনিষ্ঠ মিত্র যুক্তরাষ্ট্রও এতে সমর্থন জানায়।
এই সমঝোতা অনুযায়ী ২৯ নভেম্বর, বুধবার যুদ্ধবিরতি শেষ হয়ে যাওয়ার কথা। তবে যুদ্ধবিরতির মেয়াদ আরও বাড়ানোর জন্য আন্তর্জাতিক চাপ আছে এবং লড়াইরত পক্ষগুলোও এ বিষয়ে সম্মত হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। বিবিসি জানিয়েছে, ইসরায়েল সরকারের এক মুখপাত্র বলেছেন, চলমান জিম্মি-বন্দি বিনিময় চুক্তির আওতায় তারা যুদ্ধবিরতি আরও পাঁচ দিন বাড়ানোর জন্য প্রস্তুত আছে।
আরও পড়ুন:
গাজায় বোমার চেয়ে রোগেই মরতে পারে বেশি মানুষ: ডব্লিউএইচও